গাইবান্ধায় নারীরা ঝুকছেন ছাদ বাগানের প্রতি
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা শহরের প্রফেসর পাড়ান বাসিন্দা নাজমা সিদ্দিকা। নিজ বাসার ছাদে গড়ে তুলেছেন ফুল-ফল ও নানা জাতের শাক-সবজি বাগান। এই বাগান যেন সাজিয়ে উঠেছে বাসার ছাদটি।
সরেজমিনে বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে নাজমা সিদ্দিকার বাসার ছাদে দেখা যায় ফুল-ফল ও সবজির সমারোহ। এ সময় শাক-সবজিসহ অন্যান্য গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত ছিলেন তিনি।
জানা যায়, পলাশবাড়ী উপজেলা শহরের প্রফেসরপাড়া বাসিন্দা নজল হোসেনের স্ত্রী নাজমা সিদ্দিকা। তার স্বামী একজন ঠিকাদার। পলাশবাড়ী উপজেলা কৃষি বিভাগে উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করেন নাজমা সিদ্দিকা। তার নিজের পাঁচতলা বাসার ছাদে করেছে বাগান। বিভিন্ন টবের মাধ্যমে এবং অন্যান্য পদ্ধততি এই বাগানে লাগানো হয়েছে টমেটো, মরিচ, বাঁধাকপি, ওঁলকপি, ফুলকপি, কুমড়া, সিম, পেঁয়াজ, রসুন, পুঁইশাক, লাল শাক প্রভৃতি। ছাদজুড়েই রয়েছে কয়েক প্রজাতির লিচু, লেবু, আম, পেঁপে, মাল্টা, বড়ই ও ড্রাগন, আনারস।
বৃক্ষপ্রেমি নাজমা সিদ্দিকা তার চাকরির পাশাপাশি বেশি সময় দেন ছাদ বাগানে। এ বাগানের পরিচর্যাসহ উন্নত জাতের ফসল উৎপাদনই তার নেশায় পরিণত হয়েছে। যেন ছাদজুড়ে সবুজের সমারোহ। বাহারি ফুলের রঙে সাজিয়ে উঠেছে পুরো ছাদটি । এ ছাদে উঠলে মনে হয়, এটি কোন এক দর্শণীয় জায়গা। একটু দাঁড়িয়ে জুড়ে যায় প্রাণ। এ বাগান থেকে উৎপাদিত সবজি দিয়েই পরিবারের খাদ্য চাহিদা পূরণ করেন তিনি।
ইতোমধ্যে নাজমা সিদ্দিকার ছাদ বাগান দেখে আরও অনেকে উৎসাহিত হয়ে উঠছেন। স্বাস্থ্য সচেতনতা ও নিরাপদ ফল-সবজি প্রাপ্তি সুবিধা নিশ্চিত করণে অনেকেই ছাদে বাগান তৈরি অনুপ্রেরণা পাচ্ছে। ছাদ বাগান করে গাছপালার সংস্পর্শে এসে বিচিত্র আনন্দের স্বাদ গ্রহণ করছে আরও অনেকে। বৃক্ষপ্রেমী নাজমা পরিকল্পিতভাবে নিজ হাতে ছাদে বাগান করে সৃষ্টির আনন্দ ও গাছপালার প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন। একটা সুন্দর ছাদ বাগান করে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও সারা বছর ধরে পরিবারের চাহিদামতো নিরাপদ ফল-সবজি আহরণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় লিজা বেগম নামের এক নারী বলেন, নাজমা সিদ্দিকার ছাদ করেছেন, এটি খুবই প্রশসংনীয়। এমন একটি বাগান করার ইচ্ছে রয়েছে।
ছাদ বাগান মালিক নাজমা সিদ্দিকা বলেন, বাগান তৈরিতে নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে উন্নত জাতের সুস্থ-সবল চারা বা কলম সংগ্রহের গুরুত্ব অপরিসীম। এ বাগানে যেসব দীর্ঘমেয়াদি ও মধ্য মেয়াদি ফল গাছ রোপণ করা হবে তা বারোমাসী জাতের হলে ভালো হয়।
তিনি আরও বলেন, বাগানকে এমনভাবে সাজাতে হবে যেন তা সব সময় কোনো না কোনো গাছে ফুল-ফল ধরা অবস্থা বিরাজ করে। সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ছাদ বাগান করলে, সেটি থেকে পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও বাজারজাত করা সম্ভব।
পলাশবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার আজিজুল ইসলাম বলেন, নাজমা সিদ্দিকার ছাদ বাগানটি দেখেছি। অসাধারণ একটি বাগান করছেন। এমন বাগান প্রত্যেক বাসার ছাদে করা দরকার।
দৈনিক গাইবান্ধা