শনিবার   ১৮ মে ২০২৪ || ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

দৈনিক গাইবান্ধা

প্রকাশিত: ১০:৩৫, ৪ মে ২০২৪

আপডেট: ১১:১০, ৪ মে ২০২৪

গাইবান্ধায় গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষে চাষির মুখে চওড়া হাসি

গাইবান্ধায় গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষে চাষির মুখে চওড়া হাসি
সংগৃহীত

গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহের মধ্যেও শীতকালীন বাঁধাকপি চাষ হচ্ছে উত্তরের জেলা গাইবান্ধায়। চিরাচরিত ঋতুভিত্তিক ধান, গম ও পাট চাষের পরিবর্তে স্বল্প ব্যয়ে বেশি মুনাফার আশায় এবারই প্রথম পরিক্ষামুলকভাবে গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপির চাষ করছেন কৃষক। 

এতে একদিকে কৃষক যেমন লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে অর্থকরী ফসল হিসেবে এরই মধ্যে পরিচিত হয়ে উঠছে সবজিটি।

শীত মওসুমের অন্যতম সবজি বাঁধাকপি। কিন্তু মওসুম শেষ হয়ে গেলেও, বাজারে চাহিদা রয়েছে বাঁধাকপির। ফলে ভরা গ্রীষ্মেও বাঁধাকপি চাষ করে চলেছেন গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের ভাসারপাড়া গ্রামের কৃষক বেলাল মিয়া। আর তাতে মুনাফা হচ্ছে বেশ ভালো৷ এই সময় বাজারে বাঁধাকপি পাওয়া যায় না বললেই চলে। কিন্তু চাহিদা থাকায় সেই বাজার ধরার লক্ষ্যেই বাঁধাকপি চাষ করছেন তিনি।

উন্নত ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খরা সহিষ্ণু হাইব্রিড কপি চাষ করে ইতিমধ্যেই এলাকায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন চাষী বেলাল। উৎপাদিত কপি স্থানীয় বাজার থেকে শুরু করে পৌঁছে যাচ্ছে জেলাসহ দেশের অন্যান্য বড় বড় বাজারগুলিতে। দিন দিন চাহিদা বাড়ছে অসময়ের এ বাঁধাকপির।

কৃষিবিদরা বলছেন, শীতকালে কপির ব্যাপক ফলন হওয়ার ফলে ভালো দাম মেলে না। তাই গ্রীষ্মকালে শীতকালীন ফসল বাঁধাকপির পরিক্ষামূলক চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। অসময়ে শীতকালীন কপি চাষ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও উপযুক্ত পরিচর্যার মাধ্যমে অনেক বেশি লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আধুনিক কৃষি পদ্ধতি ব্যবহার করায় এখন সব ফসলেরই উৎপাদন বেড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রীষ্মকালেও এখন বাঁধাকপির বাম্পার ফলন হচ্ছে।

এ বিষয়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছেন জেলা কৃষি বিভাগ। মূলত ফসলের সময়ের পরিবর্তন করে চাষে আগ্রহ বাড়ানো হচ্ছে। এতে করে চাষে নতুনত্বের পাশাপাশি চাষিরা অধিক মুনাফা করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। অল্প খরচ ও স্বল্প সময়ে ভালো ফলন হওয়ার পাশাপাশি অধিক মুনাফা পাওয়ায় গাইবান্ধার অনেক চাষিই এখন গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। শীতকালীন সবজি গ্রীষ্মকালে চাষ করতে এবং তা বাণিজ্যি কীকরণ করতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গত শীত মৌসুমে গাইবান্ধার সাতটি উপজেলায় প্রায় ৯০৯ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপি চাষ হয়েছে। কিন্তু এ বছরই শীতকালের সবজিটির গ্রীষ্মকালীন পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়েছে এ জেলায়। এরই মধ্যে কৃষক এ সবজি চাষ করে লাভবান হতে শিখে গেছেন।

কৃষক বেলাল মিয়া জানান, তিনি গত আট-দশ বছর ধরে বিভিন্ন সবজি চাষ করেন। পাশাপাশি এবারই প্রথম পরীক্ষামুলকভাবে প্রায় ২ বিঘা জমিতে কুইকার জাতের খরা সহিষ্ণু বাধাকপি চাষ করেন। তিন মাস পর ফলন পেতে শুরু করেন তিনি। আবাদের এসব বাধাকপি ইতোমধ্যে দুই দফায় বিক্রি করে ভালো মুনাফা অর্জন করছেন তিনি। আরও তিন দফায় এ কপি বিক্রির আশা করছেন তিনি। এই সময় বাজারে বাঁধাকপি পাওয়া যায় না। তবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মোটের উপর ভালো মুনাফা হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সবসময় চেষ্টা করি যাতে কৃষকরা লাভবান হন৷ এই লক্ষ্যেই চাষিদের বিভিন্ন প্রযুক্তির কথা বলে থাকি৷ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অনেক চাষি গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। শীতের সময় প্রচুর জোগান থাকায় চাষিরা যা দাম পান, এই সময় সেই তুলনায় অনেক বেশি মুনাফা পাবেন তাঁরা৷

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ