বুধবার   ২৫ জুন ২০২৫ || ১২ আষাঢ় ১৪৩২

দৈনিক গাইবান্ধা

প্রকাশিত : ১৬:৫২, ২৫ জুন ২০২৫

স্বাস্থ টিপস

প্রতিদিনের কাপড় পরিষ্কার ও যত্নের বিশেষ কৌশল

প্রতিদিনের কাপড় পরিষ্কার ও যত্নের বিশেষ কৌশল
সংগৃহীত

লন্ড্রি করা বা প্রতিদিন কাপড় পরিষ্কার যেন এক নিদারুণ ঝামেলার কাজ। এটা অনেকের কাছেই পরিচিত অনুভূতি। ব্যস্ততা, ক্লান্তি, অথবা অনীহার কারণে আমরা অনেকেই জামাকাপড় ধুয়ে ফেলি খেয়াল না রেখেই।

তবে লন্ড্রির কাজটি যদি একটু যত্ন নিয়ে, পরিকল্পনা করে করা যায়, তাহলে জামা-কাপড়ের আয়ু বাড়ে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাও নিশ্চিত হয়। আর এ ব্যাপারে ফরাসিরা বরাবরই খুঁতখুঁতে, ধৈর্যশীল ও শৈল্পিক।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক লেখক ড্যানিয়েল পোসটেল-ভিনেই তার বই ‘হোম সুইট মেইজোঁ: দ্য ফ্রেঞ্চ আর্ট অব মেইকিং আ হোম’ এ ফরাসিদের ঘরদোর গোছানোর নানান কৌশলের পাশাপাশি লন্ড্রি করার দারুণ সব পদ্ধতির কথা তুলে ধরেছেন।

কাপড় পরিষ্কারের কাজে কিছু ভুল যা হয়ত আমরা প্রতিদিন করছি। তবে ফরাসিরা সেটি করেন ভিন্নভাবে।

দাগ অনুযায়ী আলাদা দাগ তোলার উপায় ব্যবহার করা

অনেকেই একটাই দাগ তোলানোর পণ্য দিয়ে সব ধরনের দাগ তুলতে চেষ্টা করেন। সস, কালি, কফি বা তেল, যাই হোক না কেন। অথচ ফরাসিরা প্রতিটি দাগের জন্য আলাদা রাসায়নিক ব্যবহার করেন।

রিয়েলসিম্পল ডটকম-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ড্যানিয়েল বলেন, “প্রতিটি দাগের জন্য আলাদা ছোট ছোট বোতলে দাগ ওঠানোর পণ্য বিক্রি হয়। ঘাসের দাগ, বলপয়েন্ট পেনের কালি, অলিভ অয়েল বা কফির দাগ— সবই আলাদা রাসায়নিক চাহিদা রাখে। সব দাগ এক উপায়ে তুলবে, এই ধারণা ভুল।”

এমন পণ্য সংগ্রহ বা অন্তত ঘরোয়া উপায়ে দাগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া কাপড় পরিষ্কারের জন্য দরকারী। যেমন লেবুর রস ও বেইকিং সোডা দিয়ে তেলের দাগ, দুধ ও অ্যামোনিয়া দিয়ে কালি তোলা যায়।

সূক্ষ্ম জামা-কাপড় কখনও মেশিনে শুকানো যাবে না

অনেকেই রোদে কাপড় শুকান, তবে শহুরে ব্যস্ততায় বা সময় বাঁচাতে অনেকেই মেশিন-ড্রায়ার ব্যবহার করেন। অথচ ড্যানিয়েল বলছেন, ফরাসিরা মেশিনে কাপড় শুকানো থেকে বিরত থাকেন যতটা সম্ভব। ছাদের নিচে রডে বা বারান্দায় ঝুলিয়ে জামা শুকান তারা। এতে বিদ্যুৎ বাঁচে, কাপড়ের রং ফিকে হয় না, আকার ছোট হয় না এবং কাপড় অনেকদিন টেকে।

শহরে ছাদে বা বারান্দায় শুকানো একসময় ছিল স্বাভাবিক অভ্যাস। এখন আবার সেই পদ্ধতিতে ফেরার সময় এসেছে।

আয়রন করা—বিলাসিতা নয়, অভ্যাস

অনেকেই বলেন সময় নেই, তাই আয়রন বা ইস্ত্রি করা হয় না। তবে ফরাসিরা কাপড় ইস্ত্রি করাকে একটি শৃঙ্খলার অংশ হিসেবে দেখেন। তারা বিছানার চাদর, ন্যাপকিন পর্যন্ত আয়রন করেন। যদিও এটি অনেকের জন্য কঠিন, তবে অন্তত কাজের কাপড় বা উৎসবের জামা-কাপড় আয়রন করার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।

যাদের সময় কম, তারা একটি ছোট ‘হ্যান্ড স্টিমার’ ব্যবহার করতে পারেন। সকালে কাজের আগে সেটি ব্যবহার করে জামা ঝকঝকে করে নেওয়া যায় সহজেই।

প্রতিটি জামা উল্টো করে ধোয়ার আগে পরীক্ষা করা

কতবার পকেটে কলম রেখেই জামা ধুয়ে ফেলা হয় বা সাদা কাপড়ের সঙ্গে রঙিন মোজা মিশিয়ে ফেলা হয়। ফলে পুরো কাপড়ই নষ্ট হতে পারে৷ এমন ভুল এড়াতে ফরাসিরা জামা ধোয়ার আগে পকেট পরীক্ষা করেন এবং জামা উল্টো করে দেন।

ড্যানিয়েল বলছেন, “জিন্সের মেটাল বা এমব্রয়ডারি যাতে ভেতরে মেশিনে ঘষা না লাগে, সে জন্য উল্টো করে ধোয়া হয়।” এই অভ্যাস সকলেই গড়ে তোলা উচিত, যাতে জামার সৌন্দর্য ও গঠন অক্ষত থাকে।

ভাঁজ করাও একধরনের শিল্প

কোনো কাপড় ইস্ত্রি করলেও যদি তা ভুলভাবে ভাঁজ করা হয়, তাহলে সব পরিশ্রম বিফলে যায়। ফরাসিরা ভাঁজ করাকেও একধরনের শিল্প মনে করেন।

ড্যানিয়েল বলেন, “একটি নির্দিষ্ট স্টাইল বেছে নিয়ে সব কাপড় সেই নিয়মে ভাঁজ করা উচিত, তবেই দেখতে পরিপাটি লাগে।”

ইউটিউবে অনেক টিউটোরিয়াল থাকলেও এই অভ্যাস একটু অনুশীলনের মাধ্যমে গড়ে তুললেই আলমারির শোভা বহুগুণে বাড়ে।

সূত্র: বিডি নিউজ ২৪

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ