শনিবার   ২১ জুন ২০২৫ || ৬ আষাঢ় ১৪৩২

দৈনিক গাইবান্ধা

প্রকাশিত : ১৯:০৩, ১১ মে ২০২৫

মহানবী (সা.) যেভাবে মায়ের প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন

মহানবী (সা.) যেভাবে মায়ের প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন
সংগৃহীত

মহানবী (সা.) ছিলেন বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ। তার রহমতের ছোঁয়া পেয়ে পৃথিবীর সব মা দামি হয়েছেন। পেয়েছেন ন্যায্য অধিকার। এ সম্পর্কে অসংখ্য বর্ণনা আছে। বিখ্যাত হাদিসটি বর্ণনা করেন হজরত আবু হুরায়রা (রা.)। তিনি বলেন—

এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমার সর্বোত্তম ব্যবহারের হকদার কে? রাসুল (সা.) বললেন, তোমার মা। লোকটি আবার বলল, অতঃপর কে? রাসুল (সা.) বললেন, তোমার মা। লোকটি আবার বলল, অতঃপর কে? রাসুল (সা.) বললেন, তোমার মা। লোকটি আবার বলল, তারপর কে? রাসুল (সা.) বললেন, অতঃপর তোমার পিতা। (বুখারি : ৫৫১৪, মুসলিম : ৪৬২১)। 

পিতামাতার সেবা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। এর মাধ্যমে জান্নাতের নিশ্চয়তা পাওয়া যায়। এ সম্পর্কে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেছেন—

নামাজ সঠিক সময়ে আদায় করা এবং পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করা আমলগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম আমল। (বুখারি : ৫২৭ মুসলিম : ৮৫, তিরমিজি : ১৭৩)। 

মায়ের প্রতি মহানবী (সা.) এর সম্মান

মহানবী (সা.) মাত্র কয়েক বছর মায়ের সঙ্গ পেয়েছিলেন। তবুও তিনি তাকে খুব ভালোবাসতেন। তার জন্য ব্যাকুল হৃদয়ে কান্না করতেন। এ সম্পর্কে সিরাতের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থগুলোতে একাধিক বর্ণনা পাওয়া যায়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন—

রাসুল (সা.) তার মায়ের কবর জিয়ারত করেন এবং কবরের পাশে কাঁদেন। অতঃপর বলেন, আমি আমার প্রতিপালকের কাছে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার অনুমতি চেয়েছি, আমাকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এরপর আমি তার কবর জিয়ারতের অনুমতি চেয়েছি আমাকে তা দেওয়া হয়েছে। তোমরা কবর জিয়ারত করো। কেননা, তা মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয়। (মুসলিম : ৯৭৬, আবু দাউদ : ৩২৩৪)।

মহানবী (সা.)-এর আরেক মায়ের নাম বারাকাহ বিনতে সালাবা। তিনি? উম্মে আইমান নামে পরিচিত।? তিনি প্রথমদিকের একজন মুসলিম এবং মহানবীর ধাত্রী মা ছিলেন। ইমাম বোখারি (রহ.) তার অমর কীর্তি সহিহ বোখারির হাদিসে বলেন—

সুলাইমান ইবনে আব্দুর রহমান (রহ.) বলেন, তিনি ছিলেন মহানবীর ধাত্রী। তার সম্মান ও গুরুত্ব বোঝাতে একদা রাসুল (সা.)-ইরশাদ করেন, আমার মায়ের ইন্তেকালের পর উম্মে আয়মানই আমার মা। (তারিখে ইবনে আসাকির : ৮/৫১) 

ইন্তেকালের আগে রাসুল (সা.) সাহাবীদের বলেছিলেন, উম্মে আইমানের যত্ন নেবে। তিনি একমাত্র নারী যিনি আমাকে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত দেখেছেন। প্রিয় নবীর ওফাতের পর প্রথম খলিফা আবু বকর সিদ্দিক (রা.) ওমর বিন খাত্তাব (রা.) কে বললেন—

চলুন আমরা উম্মে আইমানের সঙ্গে দেখা করতে যাই। যেমন দেখা করতে যেতেন নবীজি (সা.)। অতঃপর উভয়ে যখন তার কাছে পৌঁছালেন, তখন তিনি (উম্মে আইমান) কেঁদে ফেললেন। তারা তাকে বললেন, আপনি কাঁদছেন কেন? আপনি কি জানেন না যে, আল্লাহর কাছে যা রয়েছে তা রাসুলের জন্য দুনিয়া থেকে অধিক উত্তম? 

উম্মে আইমান বললেন আমি এজন্য কাঁদছি যে আসমান থেকে অহি আসা বন্ধ হয়ে গেল। উম্মে আইমান তার এই কথার দ্বারা উভয়কেই কাঁদতে বাধ্য করলেন। ফলে তারাও তার সঙ্গে কাঁদতে লাগলেন। (মুসলিম : ২৪৫৪, ইবনে মাজাহ : ১৬৩৫)।

সূত্র: dhakapost

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ