বুধবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৩ || ১৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩০

প্রকাশিত: ১৪:১২, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

আপডেট: ১৮:১২, ১২ নভেম্বর ২০২৩

জীবনের গল্পে মাননীয় ডেপুটি স্পিকার

জীবনের গল্পে মাননীয় ডেপুটি স্পিকার

মানুষটা বড্ড সাধাসিধে। প্রাণ খুলে যেমন হাসেন তেমনি কথাও বলেন বেশ আন্তরিকভাবে। আড়ম্বরহীন এক অন্যরকম জীবন তার। সারাক্ষণ ডুবে থাকেন কাজে। তবে নিজের জন্য এখন আর কিছুই করেন না। মানুষের জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছেন তিনি। মানুষটির নাম অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। দশম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার। ১৯৪৬ সালে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার গটিয়া গ্রামে জন্ম তার।

সেখানেই বেড়ে উঠেছেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকে যুক্ত ছিলেন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাজে। মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, পরবর্তীতে জড়িয়েছেন সক্রিয় রাজনীতিতে। ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি একবার হুইপ এবং ১৯৯০ সালে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। বর্ণাঢ্য কর্মময় এ মানুষটি ছেলেবেলা, বেড়ে ওঠা আর রাজনীতির বাইরের গল্প।

জাতীয় সংসদের নিজ বাসভবনে কার্যালয়ে ব্যস্ত ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া।

ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত ১০ টা। ডেপুটি স্পিকারের ব্যস্ততা কমে না। ওদিকে ঘনিয়ে আসছে আমাদের যাবার সময় জীবনের গল্প বলবেন কখন? সময় স্বল্পতা আঁচ করতে পেরেই ঝটপট স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসলেন। নিজের রঙিন অতীত বলতে গিয়ে কখনো হাসলেন, আবার কখনও আবেগপ্রবণ হয়ে আর্দ্র চোখ আড়াল করলেন এ পার্লামেন্টারিয়ান।

ছেলেবেলায় বড্ড দুরন্ত ছিলেন ফজলে রাব্বী মিয়া। তবে পড়াশোনায় পিছিয়ে ছিলেন না একটুও। ক্লাস ফাঁকি না দিলেও বড়দের চোখ ফাঁকি দিয়ে মানুষের গাছের আম ‘চুরি’ করে খাওয়া মিস হতো না তার। এজন্য বকাঝকাও কম শোনেননি। কিন্তু কে থামায় কাকে? বকা খেয়ে দুরন্তপনা যেনো আরও গতি পায়।

নিজের এমন গল্প শোনাতে গিয়ে হাসি থামাতে পারছিলেন না ডেপুটি স্পিকার। ছেলেবেলাতেই যেনো ফিরে গেছেন তিনি। হাসতে হাসতে বললেন, ‘আমাদের বাড়িতে সবাই এক কাচারি ঘরে থেকে লেখাপড়া করতাম। বাড়ির মাঝখানে এক শরিকের গাছে মিষ্টি আম ধরতো। আমাদেরকে তিনি কোনোদিন আম খেতে দিতেন না। কিন্তু আমরা পণ করেছি তাকেই তার আম খেতে দেবো না। যেই ভাবা সেই কাজ। একজন গাছে চড়তো আর বাকি কয়েকজন মিলে নিচে চাদর খুলে তার চারকোণা ধরে দাঁড়িয়ে থাকতাম। সে চাদরে আম পড়তো। কেউ টের পেতো না। এভাবেই তার গাছের সব আম আমরা সাবাড় করে দিয়েছি।’

ফজলে রাব্বী মিয়া যখন হাইস্কুলে, তখন স্কুলের সব আয়োজনে পাওয়া যেতো তাকে। কবিতা, নাটক, বিতর্ক আর উপস্থিত বক্তৃতার মঞ্চ দখলে ছিলো তার। এজন্য স্কুলে বেশ জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি এইসব কাজে পটু ছিলেন খুব। একবার তো নাটকের রিহার্সেল শেষে মধ্যরাতে বাড়িতে ফিরে পড়েছেন বড্ড বিপদে। সে গল্প শোনাতে গিয়ে বলেন, ‘আমার ডাকনাম ছিলো ভেলু। আমরা ছেলেরা থাকতাম বাড়ির কাচারি ঘরে। সে ঘরের দরজায় সবসময় একটা দড়ি ঝুলিয়ে রাখতাম। যেটা টান দিলেই বন্ধ দরজা খুলে যেতো। কিন্তু সেদিন রাত দুইটায় রিহার্সেল শেষে ফিরে দেখি কাচারি ঘরে তালা দেয়া। তালার ওপরে আবার লেখা ‘ভেলু ও পেয়ারার খাবার লাকির মায়ের ঘরি রহিল, ডাকিলেই পাইবা।’ বুঝতে পেরেছি এটা দাদার কাজ। বেশ চিন্তিত হয়ে গেলাম। রাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত জল্পনা কল্পনা করলাম। শীতের রাত ছিলো বলে পাটখড়িতে আগুন জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিতে গিয়ে ঘটালাম আরেক বিপত্তি। পাশের আম গাছে লেগে গেছে সে আগুন। এরমধ্যেই দাদা টের পেয়ে গেলেন। আর তো শুরু হলো বকা।’ বলেই বালখিল্য হাসি হাসতে লাগলেন তিনি। হাসিতে স্পষ্ট হয়ে উঠছিল যেন ছেলেবেলার মুহুর্তগুলো।

‘ছেলেবেলায় আর কী কী করতেন’ এমন প্রশ্ন করার আগেই উত্তর বেরুতে লাগলো, ‘কী করিনি। সবই করেছি। বড় পুকুরে সাঁতার কাটা, খেলার মাঠ মাতিয়ে রাখা আর হৈ হল্লুড়, সবই করেছি। আমাদের একটা গাভী ছিলো। সে গাভী মাঠে চরানো ছিলো রুটিনওয়ার্ক। স্কুল জীবনে কোনদিন আমাদের দুধ কিনে খেতে হয়নি।’

খানিকটা থেমে আবার বললেন, ‘তবে আমরা যা-ই করেছি, কোনদিন ক্লাসে অনুপস্থিত ছিলাম না। সেজন্য শিক্ষকদের খুব প্রিয় ছিলাম। সে সময় আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মধ্যে ছিলেন, ড. জাহিদুল হক, শামসুল হক, আম্রিকা চরণ দাস, তালেবার রহমান, মনিন্দ্র নাথ দাস। আমরা কোনোদিন কোনো পরীক্ষায় ফেল করিনি।

নিজের স্কুল বন্ধুদের মনে পড়তেই খানিকটা আবেগপ্রবণ হয়ে উঠলেন ডেপুটি স্পিকার।

‘প্রেম করেছেন কী না’ এমন প্রশ্নে আবারও হাসির ঢেউ তুললেন। উত্তরে সোজাসাপ্টা জানিয়ে দিলেন, ‘আমার সঙ্গে কেউ প্রেম করার সাহস করতো না। কখনোই আমি কাউকে সে সুযোগ দেইনি। তবে শুনেছি কেউ কেউ আমার প্রতি খুব আগ্রহী ছিলো। বড় হয়ে যখন বিয়ের সময় এলো, তখনও আব্বা যার সঙ্গে বিয়ে ঠিক করেছেন তাকেই বিয়ে করেছি।’

‘রাজনীতিতে জড়িয়েছেন কীভাবে’- জানতে চাইলে ফজলে রাব্বী মিয়া বললেন, ‘১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান যখন মার্শাল ল জারি করে তখন আমি অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তখন আমার এক চাচা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। পরবর্তীতে তিনি ইউপি চেয়ারম্যানও হয়েছেন। তার অনুপ্রেরণায় আইয়ুব বিরোধী মিছিল বের করি। সেটাতে আমি নেতৃত্ব দেই। সে মিছিলে পুলিশের দাবাড়ও খেয়েছি। তবে আমাদের বাড়ির বেশ ঐতিহ্য ছিলো বলে পুলিশ বাড়ির ভেতরে গিয়ে কাউকে গ্রেপ্তার করার সাহস পেতো না। সে-ই থেকে রাজনীতি শুরু, নেমে পড়লাম রাজনীতিতে।’

কলেজ জীবনের রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কলেজ লাইফে এসে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলন হয়েছে। সে আন্দোলনে গাইবান্ধায় নেতৃত্ব দিয়েছি আমি, হাসান মাহমুদ সিদ্দিক ও ভুলু। পুরো মহকুমার বিভিন্ন স্থানে আমরা সমাবেশ করতাম। আমার মনে আছে, সে সময় আমার বক্তব্য শোনার জন্য মানুষ হারিকেন নিয়ে আসতো

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

শিরোনাম

গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে জাপার মনোনয়ন পেলেন আতাউর রহমান সরকারগাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে জাপার মনোনয়ন পেলেন কাজী মোঃ মশিউর রহমানগাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে জাপার মনোনয়ন পেলেন ইঞ্জিনিয়ার মাইনুল রাব্বি চৌধুরীগাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে জাপার মনোনয়ন পেলেন আব্দুর রশিদ সরকারগাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে জাপার মনোনয়ন পেলেন ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীদেশপ্রেমিক নেতা হিসেবে মোহাম্মদ হানিফ মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন‘জয় বাংলা, জিতবে আবার নৌকা’ গানের নতুন সংস্করণের শুভমুক্তিআওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিতে সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইনে প্রত্যাশীরাপুলিশকে সহায়তা করতে ১০ হাজার আনসার মোতায়েনগাইবান্ধা-২ আসনে আ.লীগের মনোনয়ন কিনলেন মাহাবুব আরা বেগম গিনিক্ষমা চাইলেন তানজিন তিশাপরিবার পরিকল্পনা বিভাগে ২৭ পদে চাকরি২ লাখ রুপি হোটেল ভাড়া দিয়েও ফাইনাল দেখতে যাচ্ছেন মানুষজয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে জয় ও ববিমাস্কের এক্সে বিজ্ঞাপন দেবে না ডিজনি-অ্যাপল-আইবিএমআ.লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু, প্রথমটি সংগ্রহ করলেন শেখ হাসিনাসাদুল্লাপুরে আ’লীগ’র শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিতগাইবান্ধা শহর পরিচ্ছন্নতায় একঝাঁক শিক্ষার্থী১৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু বিমানের ঢাকা-চেন্নাই সরাসরি ফ্লাইটশিশুদের স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলুনঃ টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীপ্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন: চট্টগ্রামে সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসন সংকট মেটাবে ৬৮৪ ফ্ল্যাটগোবিন্দগঞ্জে তৈরি হচ্ছে দেশের এক-তৃতীয়াংশ শীতবস্ত্রগোবিন্দগঞ্জে ভাল দাম পাওয়ায় আগাম শাক-সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকসারা দেশে ১৮১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনগাইবান্ধায় ৪৮টি প্রকল্প ও কার্যক্রমের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রীফুছড়িতে শিক্ষা ও সৌর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হচ্ছে চরাঞ্চলের জীবনআজ তফসিল ঘোষণা হবে সন্ধ্যায়, জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন সিইসিসুন্দরগঞ্জে যুবলীগ নেতা হ’ত্যা মামলায় যুবদল নেতাসহ আরও আটক-২জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রীগাইবান্ধায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিতওদের সুমতি হোক, অগ্নি-সন্ত্রাস বন্ধ করুক: প্রধানমন্ত্রীগাইবান্ধায় মাদ্রাসা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন হুইপ গিনিনির্বাচনে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে: প্রধানমন্ত্রীগাইবান্ধায় মাদ্রাসা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন হুইপ গিনিগাইবান্ধায় বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালনসুন্দরগঞ্জে যুবলীগ নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশশীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত বরিশালের চাষিরা!বিশ্বকাপ ব্যর্থতায় চাকরি হারানোর শঙ্কায় যেসব কোচহজ কার্যক্রমের অনুমতি পেল ৭৮৬ এজেন্সি১৫৭ প্রকল্পের ৫৩৬০ অবকাঠামো উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী১৫৭ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী২-১ দিনের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা দেবে কমিশনগাইবান্ধায় স্বাস্থ্যসেবা অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠানে হুইপ গিনিগোবিন্দগঞ্জে জামাত-বিএনপির অবরোধ বিরোধী প্রতিবাদ সভাব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ম্যাচ আজগোবিন্দগঞ্জে অবরোধ নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভামেট্রোরেলে বিজ্ঞাপনের পোস্টার: তদন্তে কমিটি গঠনগাইবান্ধায় দুর্বৃত্তদের হামলায় যুবলীগ নেতার মৃত্যু, আটক ৪পানি পানের সঠিক সময়আজ দুই হাজার স্কুল ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী১৫৭ প্রকল্পের ৫৩৬০ অবকাঠামো উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রীগাইবান্ধায় মাদ্রাসা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন হুইপ গিনি১৫৭ প্রকল্পের ৫০৩৬০ অবকাঠামো উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রীগাইবান্ধা জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড ও কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিতআজ দুই হাজার স্কুল ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীখালেদা জিয়া কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিল: শেখ হাসিনা