রোববার   ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ || ১২ আশ্বিন ১৪৩২

দৈনিক গাইবান্ধা

প্রকাশিত : ১৯:৩৯, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কবে ফুরাবে পৃথিবীর অক্সিজেন, জানাল নাসা

কবে ফুরাবে পৃথিবীর অক্সিজেন, জানাল নাসা
সংগৃহীত

মানবসভ্যতার জন্য ভয়ংকর এক সতর্কবার্তা দিয়েছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। গবেষকদের মতে, ভবিষ্যতে এমন এক সময় আসবে যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আর শ্বাস নেওয়ার মতো অক্সিজেন থাকবে না। গাছপালা বিলুপ্ত হবে, প্রাণের অস্তিত্ব মুছে যাবে, আর পৃথিবী পরিণত হবে এক শুষ্ক ও মৃত গ্রহে।

নাসার নেক্সাস ফর এক্সোপ্ল্যানেট সিস্টেম সায়েন্স এবং জাপানের তোহো ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলছেন, আজ থেকে প্রায় ১০০ কোটি বছর পর অক্সিজেনহীন হয়ে পড়বে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল। ফলে তখন মানুষ তো দূরের কথা, কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদই এখানে টিকে থাকতে পারবে না।

এই ভয়াবহ পরিবর্তনের নেপথ্যে রয়েছে সূর্য। এই নক্ষত্র ক্রমাগত উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। গবেষকরা ব্যাখ্যা করেছেন, সূর্যের তাপ বৃদ্ধির কারণে একসময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড অণুগুলো ভেঙে যাবে। অথচ এই কার্বন ডাইঅক্সাইডই উদ্ভিদের জন্য অপরিহার্য, কারণ এ গ্যাস দিয়েই তারা সালোকসংশ্লেষণ করে অক্সিজেন তৈরি করে। কার্বন ডাইঅক্সাইড না থাকলে গাছ বাঁচবে না, অক্সিজেন উৎপাদন বন্ধ হবে এবং ধাপে ধাপে বিলীন হবে প্রাণিকুল।

তোহো ইউনিভার্সিটির কাজুমি ওজাকি এবং জর্জিয়া টেকের ক্রিস্টোফার রেইনহার্ডের যৌথ গবেষণা অনুযায়ী, অক্সিজেন বিলীন হওয়ার পর পৃথিবীতে শুধু কিছু অণুজীব টিকে থাকতে পারবে, যারা অক্সিজেন ছাড়াই বেঁচে থাকে। আর তখন ভেঙে পড়বে ওজোনস্তরও। ফলে সূর্যের প্রাণঘাতী অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি পৃথিবীতে এসে প্রাণ বিকাশকে পুরোপুরি অসম্ভব করে তুলবে।

অক্সিজেন হারানোর পাশাপাশি বায়ুমণ্ডলে বাড়বে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ। এই গ্রিনহাউস গ্যাস পৃথিবীর পরিবেশকে আরও বিষাক্ত করে তুলবে, যা মানুষের জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠবে। যদিও এ ঘটনা ঘটতে এক হাজার কোটি বছর বাকি, তবুও বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছেন—এর প্রভাবের ইঙ্গিত হয়তো হাজার হাজার বছর আগেই দৃশ্যমান হতে শুরু করবে।

গবেষকদের মতে, এই তথ্যের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো—পৃথিবী কোনোভাবেই চিরকাল বসবাসযোগ্য নয়। সূক্ষ্ম এক ভারসাম্যের ওপর টিকে আছে আমাদের অস্তিত্ব, আর সেটি ভঙ্গুর ও ক্ষণস্থায়ী।

তাই বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এ ভবিষ্যদ্বাণী শুধু দূর ভবিষ্যতের কল্পনা নয়, বরং আজকের জন্যও একটি বার্তা। প্রকৃতিকে রক্ষা, পরিবেশ সচেতনতা এবং দায়িত্বশীলতা ছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ পৃথিবী উপহার দেওয়া সম্ভব নয়।

সূত্র: কালবেলা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ

শিরোনাম