স্বাস্থ টিপস
ভাত খাওয়ার সঠিক সময় কখন? জানালেন বিশেষজ্ঞ

বাঙালিদের খাদ্যতালিকায় প্রথম পছন্দ ভাত। তাই বাঙালিকে মাছে-ভাতে বাঙালি বলা হয়। সারাদিন বিভিন্ন ধরনের খাবারের পর, বাঙালিদের চাই ভাত। না, শুধু ভাত হলে চলবে না। ভাতের স্বাদ বাড়াতে প্রয়োজন নানা রকম মুখরোচক ও মসলাদার তরকারি।
তবে বাঙালি এখন স্বাস্থ্য সচেতন হয়েছে। ফিট থাকতে অনেকেই বাদ দিয়েছেন ভাত খাওয়া। অনেকে দুপুরে ভাত খেলেও বাদ দিচ্ছেন রাতে খাওয়া। এখন প্রশ্ন জাগে তাহলে ভাত খাওয়া সঠিক সময় কোনটি? সম্প্রতি ভাত খাওয়ার সঠিক সময় নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে ডায়েটিশিয়ান দেবজানি ব্যানার্জি বলেন―বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ভাত খাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো দুপুর। ধূসর চালের ভাতে থাকা ভিটামিন বি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়া ভাতে ক্যালোরির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং অন্যান্য খাবারের বিকল্প হিসেবেও কার্যকর। ফলে ভাত খেলে পেট ভরা অনুভব হয় এবং দীর্ঘ সময় ক্ষুধা লাগে না।
ঘন চাল বা সাদা চাল স্বাস্থ্যকর কি না—এ নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, সাদা চাল বেশি খাওয়া হলেও এতে বাদামি চালের তুলনায় পুষ্টি ও ফাইবারের পরিমাণ কম। ফলে অতিরিক্ত সাদা চাল গ্রহণ রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ানোর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি রয়েছে, তাদের জন্য এই ঝুঁকি আরও বেশি।
অন্যদিকে, বাদামি ও লাল চালে ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। তাই যদি নিয়মিত ভাত খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তবে পুষ্টির দিক থেকে বাদামি বা লাল চালের ভাতই হবে অধিক উপকারী ও স্বাস্থ্যকর বিকল্প।
ক্যালোরির পরিমাণ
ভাতের ক্যালোরি মূলত নির্ভর করে চালের ধরন ও আকারের ওপর। সাধারণত সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয় সাদা চাল, যার প্রতি ১০০ গ্রাম রান্না করা ভাতে থাকে প্রায় ১৩০ ক্যালোরি। অর্থাৎ, ২০০ গ্রাম ভাতে পাওয়া যায় আনুমানিক ২৬০ ক্যালোরি। এর তুলনায় বাদামি চালে ক্যালোরির পরিমাণ কিছুটা কম—প্রতি ১০০ গ্রাম রান্না করা ভাতে থাকে প্রায় ১১০ ক্যালোরি। তবে বাদামি চাল ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ, যা দীর্ঘস্থায়ী শক্তি জোগায় এবং স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হয়।
ভাত খাওয়ার সময় সাধারণ কিছু নিয়ম
ভাত সহজপাচ্য খাবার হলেও রাতের খাবারে ভাত খাওয়াটা স্বাস্থ্যের জন্য তেমন উপকারী নয়। বিশেষ করে যদি আপনি ওজন কমানোর চেষ্টা করেন। ভাতে প্রচুর স্টার্চ ও কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা খাওয়ার পর দ্রুত ভেঙে গিয়ে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা তাৎক্ষণিকভাবে বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে শরীরে অল্প সময়ে শক্তি মিললেও, রাতে কম শারীরিক কার্যকলাপের কারণে এই অতিরিক্ত শক্তি চর্বিতে রূপান্তরিত হয়ে যেতে পারে।
ভাত এমন একটি খাবার, যা ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে। এতে কার্বোহাইড্রেটের মাধ্যমে ক্যালোরির পরিমাণ বেশি থাকে। যা অতিরিক্ত গ্রহণে শরীরে চর্বি হিসেবে জমা হতে পারে। তবে ভাত খাওয়ার পর যদি শরীরে কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সূত্র: কালবেলা