রক্ত স্বল্পতার সমস্যা দূর করে লটকন
লটকন বা নটকো বৈজ্ঞানিক নাম Baccaurea motleyana এটি হচ্ছে এক প্রকার টক মিষ্টি ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি এবং বি-২ আছে,এটি বিভিন্ন নামে পরিচিত- যেমন: Rambai, Rambi, Mafai-farang, Lamkhae, Ra mai ইত্যাদি। গাছটি দক্ষিণ এশিয়ায় বুনো গাছ হিসেবে জন্মালেও বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে বাণিজ্যিক চাষ হয়।
বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারতে ফলটি, “বুবি” বা “Bubi” নামে সর্বাধিক পরিচিত। তাছাড়া লটকা বা আঁশফল ইত্যাদি আঞ্চলিক নাম ও আছে। ফলটি ত্রিপুরা, আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলা এবং বাংলাদেশ অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে ফলে। সাধারণত মিষ্টি ফল হলেও ছায়াযুক্ত জায়গায় এই গাছের ফল টক স্বাদযুক্ত। আষাঢ় শ্রাবণ মাসে সময় এটি পরিপক্ক হয়।
লটকনের পুষ্টিগুণ
লটকনে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা লটকনে আছে খাদ্যশক্তি ৯১ কিলোক্যালোরি, যা কাঁঠালের প্রায় দ্বিগুণ, আমিষ ১.৪২ গ্রাম, চর্বি ০.৪৫ গ্রাম, ভিটামিন-সি ৫৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি ১-১০.০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি ২-০.২০ মিলিগ্রাম, লৌহ ৩.৩ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০.৯ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২ গ্রাম। এছাড়া রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ক্রোমিয়ামসহ নানা উপকারী সব উপাদান। যা আমাদের শরীরে নানাভাবে উপকার করে।
লটকনের উপকারিতা
১. টক স্বাদের লটকনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। মাত্র দুটি লটকন খাওয়ার অভ্যাসেই শরীরের প্রতিদিনের ভিটামিন সি-র চাহিদা পূরণ করতে পারে ফলটি।
২. ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ লটকন শরীরের পানির ভারসাম্য পূরণ করতে পারে।
৩. ত্বক, দাঁত, হাড়, মাড়ির সুস্থতায় লটকন দারুণ কাজ করতে পারে।
৪. বমি বমি ভাব দূর করতে লটকন খেতে পারেন।
৫. অতিরিক্ত লটকন ক্ষুধামন্দার কারণ হয়ে ওঠে। তাই যারা ওজন কমাতে চান তারা বেছে নিতে পারেন এ ফলকে।
৬. লটকনে থাকা আয়রন হাড়ের সুরক্ষায় কাজ করতে পারে।
৭. যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তারা নিয়মিত লটকন খান। এ ফল রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়িয়ে রক্ত স্বল্পতার সমস্যা দূর করবে।
৮. লটকন মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করে।
৯. ঝটপট এনার্জি বাড়াতে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে লটকন।
১০. যারা প্রায়ই মুখে ও ঠোঁটের কোণে ঘা হওয়ার সমস্যায় ভোগেন তারা লটকন খেতে পারেন, উপকার পাবেন।
সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ