রোববার   ০১ জুন ২০২৫ || ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দৈনিক গাইবান্ধা

প্রকাশিত : ১২:৪৫, ৩১ মে ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা

আরও জাপানি কোম্পানির বিনিয়োগ চাইলেন ইউনূস

আরও জাপানি কোম্পানির বিনিয়োগ চাইলেন ইউনূস
সংগৃহীত

বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনে সহায়তা করতে জাপানি বিভিন্ন কোম্পানির বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার টোকিওতে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, “আজ আমরা এমন এক পরিস্থিতিতে আছি, যেখানে আপনাদের সহায়তা আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

“আমরা অনেক দূর এগিয়ে এসেছি। বাকি যাত্রাটি একসাথে আনন্দের সাথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।” জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) টোকিওতে তাদের প্রধান কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের যেটুকু অর্জন ছিল, গত ১৬ বছরে তা নানা দিক থেকে ধ্বংস করা হয়েছে। আমাদের আর্থিক অবস্থা শূন্য নয়, বরং নেতিবাচক অবস্থায় চলে গিয়েছিল।

“ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে... বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমে যায়, প্রশাসনিক ও পুলিশ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। এখান থেকেই আমাদের শুরু।”

তিনি বলেন, গত দশ মাসে অন্তর্বর্তী সরকার টুকরো টুকরো করে সবকিছু গড়ে তুলছে। “তাই জাপান সরকার এবং জাপানের ব্যবসায়ীদের সমর্থন আমাদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান।”

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার সরকারের প্রতিশ্রুতি হলো একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা, কারণ পুরনো বাংলাদেশে ‘অনেক খারাপ’ বিষয় ছিল।

জাপানি উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমরা পুরনো বাংলাদেশ থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চাই। তাই এটাই আমাদের যাত্রা— একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার।

“এই যাত্রায় আপনারা আমাদের বন্ধু ও অংশীদার হবেন এবং আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাবেন। আপনাদের দেখে সত্যিই ভালো লাগছে। এটি আমাদের আশ্বস্ত করে।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অতীতের সব ভয়াবহ ঘটনাকে পেছনে ফেলে এখন একটি সুযোগ দেশ গড়ার।

“আমরা চাই- সেগুলো অতীতেই থেকে যাক...আমরা সবাই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছি এবং তা অতীতেই রাখতে চাই। আমরা একটি নতুন ভবিষ্যতের ভিত্তি গড়তে চাই।”

গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত বছরের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। তার দুই দিন বাদে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার যাত্রা করে।

স্বৈরাচারী সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির কারণে বাংলাদেশে ‘প্রাণের স্পন্দন’ ফিরে এসেছে বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক ইউনূস।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান ঘাটতিগুলো খুব শিগগিরই কেটে যাবে।

জেট্রো চেয়ারম্যান ও সিইও নোরিহিকো ইশিগুরো উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে অসাধারণ প্রবৃদ্ধি এবং বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

জাপান-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমিটির (জেবিসিসিইসি) চেয়ারম্যান ও মারুবেনি কর্পোরেশনের পরিচালক ও এক্সিকিউটিভ কর্পোরেট অ্যাডভাইজার ফুমিয়া কোকুবু বলেন, বাংলাদেশে কার্যরত ৮৫ শতাংশ জাপানি কোম্পানি আশা করে যে এই বছর ইপিএ স্বাক্ষরিত হবে।

তিনি বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে কর নীতিতে সংস্কার করার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে অর্থনীতিকে রক্ষা করতে; কোনো প্রকল্প বন্ধ হয়নি, কোনো ব্যবসা স্থগিত হয়নি।

বাংলাদেশে কর্মরত জাপানি কোম্পানিগুলোর শীর্ষ নির্বাহীরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

গোলটেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন সুমিতোমো কর্পোরেশনের সিইও শিনগো উএনো, ইউগ্লেনা কোম্পানি লিমিটেডের সিইও মিতসুরু ইজুমো, জেরার চিফ গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিস্ট স্টিভেন উইন, জেবিআইসির সিনিয়র ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাজুনোরি ওগাওয়া, ওনোডা প্রেসিডেন্ট শিগেওশি ওনোডা; জেট্রোর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজুয়া নাকাজো এবং আইডিই-জেট্রোর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মায়ুমি মুরায়ামা। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী সমাপনী বক্তব্য দেন।

সূত্র: bdnews24

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ