শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ || ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

প্রকাশিত : ০৬:৫৮, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দরুদ পাঠে গুরুত্ব দেবেন যে কারণে

দরুদ পাঠে গুরুত্ব দেবেন যে কারণে

মানবজাতির জন্য রহমত হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘(হে নবী!) আমি তোমাকে বিশ্বজগতের জন্য কেবল রহমত করে পাঠিয়েছি’। (সূরা আম্বিয়া, আয়াত,১০৭)

এমন রহমতের নবীর প্রতি প্রেম-ভালোবাসা, প্রদর্শন ও তার অনুসরণ-অনুকরণ ঈমানের অন্যতম দাবি। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন ইরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী! মানুষকে বলে দাও, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবেসে থাকো, তবে আমার অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তায়ালা তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন, আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’ (সূরা আল ইমরান, আয়াত, ৩১) 

অপর এক আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করে সে আল্লাহরই আনুগত্য করল, আর যারা (তার আনুগত্য থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয়, আমি (হে নবী!) তোমাকে তাদের তত্ত্বাবধায়ক বানিয়ে পাঠাইনি।’ (সূরা নিসা, আয়াত, ৮০)

এক হাদিসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করে সে আল্লাহরই আনুগত্য করে, আর যে আমার নাফরমানি করে সে আল্লাহরই নাফারমানি করে’। (বুখারি, হাদিস, ৭১৪৭)

নবীজির প্রতি ভালোবাসা ও অনুগত্য প্রদর্শনের অন্যতম মাধ্যম হলো তার নাম শুনলে বেশি দরুদ পাঠ করা। ইসলামি বিধান অনুযায়ী নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম শুনলে দরুদ পড়া ওয়াজিব। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে নবীজির উপর দরুদ পড়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরুদ পাঠান, হে মুমিনগণ! তোমরাও তার প্রতি দরুদ পাঠাও এবং অধিক পরিমাণে সালাম পাঠাও।’ (সূরা আহযাব, আয়াত, ৫৬) 

আল্লাহর রাসূলের ওপর দরুদ পাঠের বিশেষ ফজিলত হলো- এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার রহমত লাভ করা যায়। এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তায়ালা তার ওপর দশটি রহমত বর্ষণ করেন এবং তার দশটি গুনাহ মাফ করে দেন, আর তার দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।’ (নাসায়ী, হাদিস, ১২৯৭)

এমন ফজিলতের কথা জেনেও যে আল্লাহর রাসূলের ওপর দরুদ পড়বে না তাকে হাদিসে কৃপণ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আলী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘ওই ব্যক্তি প্রকৃত কৃপণ যে আমার নাম শোনার পর আমার ওপর দরুদ পাঠ করে না।’।(তিরমিজি, হাদিস, ৩৫৪৬) 

আম্মাজান হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে কিয়ামতের দিন আমাকে দেখতে পারবে না, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা জিগেস করলেন, কে আপনাকে দেখতে পারবে না? উত্তরে তিনি বললেন, যে ব্যক্তি কৃপণ। আমি আবার জিগেস, করলাম কৃপণ কে? তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি আমার নাম শুনে দরুদ পড়ে না সে কৃপণ।’(শরফুল মুস্তফা, হাদিস, ৩১৪)

কৃপণতা একটি মন্দ স্বভাব, এটি মানুষের আত্মিক রোগের অন্তর্ভুক্ত। শরীয়তের পরিভাষা সম্পদের ক্ষেত্রে কৃপণ বলা হয় ওই ব্যক্তিকে, যে প্রয়োজনীয় খরচ করে না। এর থেকেও বড় ও প্রকৃত কৃপণ হলো- যে ব্যক্তি রাসুলের ওপর দরুদ পাঠ করে না। আল্লাহ তায়ালা সবাইকে বেশি বেশি দরুদ তাওফিক দান করুন।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ