শিক্ষানুরাগী খাজা সলিমুল্লাহ
![শিক্ষানুরাগী খাজা সলিমুল্লাহ শিক্ষানুরাগী খাজা সলিমুল্লাহ](https://www.dainikgaibandha.com/media/imgAll/2024February/47-2402230726.jpg)
আজ থেকে ১২০ বছর আগে, ১ টাকার মূল্য কত ছিল ভাবতে পারেন?- আজকের দিনের আনুমানিক লাখ টাকার অধিক।
১২০ বছর আগে, খাজা সলিমুল্লাহ ১ লাখ ১২ হাজার টাকা দান করেছিলেন বুয়েটের (BUET)জন্য। তখন সেটার নাম বুয়েট ছিল না। ছিল ঢাকা সার্ভে স্কুল। সেটাকে তিনি রূপ দিলেন আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলে। (খাজা সলিমুল্লাহ’র বাবার নাম ছিল আহসানউল্লাহ)।
১৯০৮ সালে পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক সভায় বিনা বেতনে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার দাবি তোলেন তিনি। —চিন্তা করা যায়!
পূর্ব বাংলায় কোনো ইউনিভার্সিটি নেই। সলিমুল্লাহ সেটা মানতে পারলেন না। কি করা যায়, সে নিয়ে ভাবতে থাকলেন। ১৯১২ সালের ২৯ জানুয়ারি, তখনকার ভাইস রয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ঢাকায় আসেন। হার্ডিঞ্জের সামনে দাবি নিয়ে দাঁড়ানোর মতো সাহস পূর্ব বাংলায় যদি কারো থাকে, সেটা একমাত্র সলিমুল্লাহ’র। তার বয়স তখন চল্লিশ বছর। সে সময়ের ১৯ জন প্রখ্যাত মুসলিম লিডার নিয়ে তিনি হার্ডিঞ্জের সঙ্গে দেখা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দাবি তুলেন। সেই ধারাবাহিকতায় শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলো।
সলিমুল্লাহ ছিলেন আদ্যোপান্ত শিক্ষানুরাগী। পূর্ব বাংলায় শিক্ষার বিস্তারের জন্য, পিছিয়ে পড়া মুসলিম জনগোষ্ঠিকে শিক্ষিত করার লক্ষ্যে তিনি বহু বৃত্তি, বহু প্রকল্প চালু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা এবং ঢাকা সার্ভে স্কুলকে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলে রূপ দেওয়া ছিল তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান।
শিক্ষাকে যদি জাতির মেরুদণ্ড বলা হয়, তাহলে পূর্ব বাংলার সেই মেরুদণ্ড তৈরিতে সলিমুল্লাহ’র চেয়ে বড় ভূমিকা সম্ভবত বিংশ শতকে খুব বেশি কেউ রাখেনি। অথচ সেই মানুষটাকে নিয়ে আমাদের সমাজে তেমন আলোচনা দেখি না। স্মরণসভা দেখি না। কষ্ট হয় কিছুটা!
মাত্র ৪৩-৪৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান। তার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
সূত্র: ডেইলি-বাংলাদেশ