শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ || ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

প্রকাশিত : ১৬:২৯, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহিদ মিনার

ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহিদ মিনার
সংগৃহীত

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে রাজশাহী গুরুত্বপূর্ণ এক নগরী। ১৯৪৮ সালে মাতৃভাষার অধিকার আদায়ে আন্দোলনে প্রথম রক্ত ঝরেছিল রাজশাহীতে।

১৯৫২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তমদ্দুন মজলিশের উদ্যোগে রাজশাহী নগরীর মোহন পার্কে আয়োজিত হয়েছিল ভাষা আন্দোলনের দাবিতে প্রথম জনসভা। ভাষা আন্দোলনের মিছিলে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে শহিদ ছাত্রদের স্মৃতিতে প্রথম শহিদ মিনার নির্মিত হয়েছিল রাজশাহীতেই।

২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজশাহী কলেজ মুসলিম হোস্টেলের এফ ব্লকের সামনে ইট-কাদা দিয়ে নির্মিত এই স্মৃতিস্তম্ভটিই ছিল দেশে ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহিদ মিনার।

এদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) শিক্ষার্থীরা  ওই দিন বিকেলে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শুরু করেন। রাতের মধ্যেই শেষ করেন। পরদিন দৈনিক আজাদে ছাপা হয় শহিদ মিনারের খবর। শিরোনাম ছিল- ‘শহিদ বীরের স্মৃতিতে’। ব্যারাক নামে পরিচিতি তৎকালীন ঢামেক ছাত্র হোস্টেলের ১২ নম্বর শেডের পূর্বপ্রান্তে মিনারটি তৈরি হয় কোনাকুনিভাবে হোস্টেলের মধ্যবর্তী রাস্তার গা-ঘেঁষে। উদ্দেশ্য ছিল, বাইরের রাস্তা থেকে যেন সহজেই চোখে পড়ে এবং যেকোনো শেড থেকে বেরিয়ে এসে ভেতরের লম্বা টানা রাস্তাতে দাঁড়ালেই চোখে পড়ে।

প্রথম সেই শহিদ মিনারটি ছিল ১০ ফুট উঁচু, ৬ ফুট চওড়া। মিনার তৈরির তদারকিতে ছিলেন জি এস শরফুদ্দিন (ইঞ্জিনিয়ার শরফুদ্দিন নামে পরিচিত), ডিজাইন করেছিলেন বদরুল আলম। সঙ্গে ছিলেন সাঈদ হায়দার। তাদের সহযোগিতা করেন ২ জন রাজমিস্ত্রি। ঢাকা মেডিকেলের ভবন সম্প্রসারণের জন্য জমিয়ে রাখা ইট, বালু ও পুরান ঢাকার পিয়ারু সরদারের গুদাম থেকে আনা সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা হয় সেই স্মৃতির মিনার। ভোর হওয়ার পর একটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় সেটি।

মিলিটারি কারফিউ আর হাড় হিম করা শীত উপেক্ষা করে তৈরি করা শহিদ মিনার দেখতে পরদিন ভিড় জমায় শত শত মানুষ। মিনারতলে ফুল থেকে শুরু করে টাকা-পয়সা পর্যন্ত অনেক কিছুই দান করতে থাকে তারা। নাম না জানা এক নারী দান করেন তার গলার হার।

২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে শহিদ শফিউরের পিতা অনানুষ্ঠানিকভাবে শহিদ মিনারটি উদ্বোধন করেন। পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে শহিদ মিনার উদ্বোধন করেন আজাদ পত্রিকার সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দিন। তবে স্থায়িত্ব পায়নি ভাষা শহিদদের স্মরণে তৈরি প্রথম সেই মিনারটি।

আজাদ সম্পাদকের উদ্বোধনের দিনই পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঢাকা মেডিক্যালের ছাত্র হোস্টেল ঘিরে ফেলে এবং প্রথম শহিদ মিনারটি গুঁড়িয়ে দেয়। এরপর ঢাকা কলেজেও একটি শহিদ মিনার তৈরি করেন শিক্ষার্থীরা। কিছু দিনের মধ্যে সেটিও সরকারের নির্দেশে ভেঙে ফেলা হয়।

লেখকের ফেসবুক পোস্ট থেকে নেয়া

সূত্র: ডেইলি-বাংলাদেশ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ