তামাক পাতার ঔষধি ব্যবহার

তামাক একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। নিকোটিয়ানা ট্যাবাকাম বা তামাক হলো একটি একবর্ষজীবী ভেষজ উদ্ভিদ। তামাকের ইংরেজি ‘Tobacco’ এসেছে স্প্যানিশ "tabaco" শব্দ থেকে।
তামাক গাছের আদি নিবাস উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায়। তামাক গাছের শুকানো পাতাকে তামাক বলা হয়। তামাক গাছ ১২-১৮ ইঞ্চি লম্বা হয়। তামাক নেশাদায়ক পদার্থ। তামাকে আগুন দিয়ে সিগারেট, বিড়ি, চুরুট, হুঁকো, ও অন্যান্য ধুমপানের মাধ্যম প্রস্তুত করা হয়।
ধুমপান ছাড়াও তামাক নানা রকম ভাবে ব্যবহার হয়, যেমন চিবিয়ে (জর্দা, যা পানের সঙ্গে খাওয়া হয়), ঠোঁটের ফাঁকে গুঁজে (যেমন গুল), বা নাকে ঠুসে (নস্যি)।
তামাকের মূল নেশাদায়ক উপাদান নিকোটিন এক প্রকারের স্নায়ুবিষ (নিউরোটক্সিন), যা একধরণের অ্যাসিটাইলকোলিন রিসেপ্টরের (কোলিনার্গিক অ্যাসিটাইলকোলিন রিসেপ্টর) ওপর কাজ করে।
কিন্তু তামাকের ধোঁয়াতে নিকোটিন ছাড়াও নানা ক্যান্সারপ্রদায়ী পদার্থ থাকে, যেমন বেঞ্জোপাইরিন ইত্যাদি বহুচক্রী আরোমাটিক যৌগ। তামাক অত্যন্ত বিশাক্ত পদার্থ, একখানি সিগারেটে যতখানি তামাক আছে তা চিবিয়ে খেলে পুরপুরি শরীরে যদি প্রবেশ করত, তা থেকে দ্রুত মৃত্যু অনিবার্য।
তবে ধুমপানের ফলেও ধীরে ধীরে আয়ু কমে থাকে- শুধু ক্যান্সারের প্রবণতার জন্যেই নয়, হৃদরোগের জন্যেও বটে। তামাক গাছ বাংলাদেশ ও ভারতে ব্যপকভাবে চাষ করা হয়ে থাকে। শীতকালের শেষদিকে এর ফুল ও ফল হয়। অথচ এই তামাকেরই কাঁচা ও শুকনো পাতা, বীজ এবং কান্ড নানারকম ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
তামাক পাতার ঔষধি ব্যবহার
(১) তামাকের কাঁচা পাতা ভালো করে ধুয়ে শুকনো করে চূর্ণ করে, হালকা গরম পানিতে দিয়ে সেবন করলে ক্রিমি ভালো হয়। তবে শিশুদের খাওয়ানো যাবে না।
(২) শরীরের কোনো স্থানে ঘা শুকাতে না চাইলে তামাক পাতা পুড়িয়ে ছাই করে নিন। এরপর তেল বা ঘি গরম করে তামাক পাতার ছাইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে ঘায়ে লাগায়ে ঘা দ্রুত ভালো হয়।
(৩) শুকনো তামাক পাতা পানিতে ভিজিয়ে রেখে একদিন পর পর এই পানি মাথায় লাগালে উকুন দ্রুত ভালো হয়।
(৪) যেকোনো কারণে গায়ে অ্যালার্জি হলে তামাক পাতা চূর্ণ করে হালকা গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে দিনে ২/৩ বার খেলে অ্যালার্জি ভালো হয়।
সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ