শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ || ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

প্রকাশিত : ১১:৪১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

তিস্তা সেতুতে পাল্টে যাবে গাইবান্ধা-কুড়িগ্রাম মানুষের জীবনমান

তিস্তা সেতুতে পাল্টে যাবে গাইবান্ধা-কুড়িগ্রাম মানুষের জীবনমান

গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম এই দুই জেলার বুক চিরে দিয়ে বয়ে গেছে তিস্তা নদী। এখানকার হরিপুর ও চিলমারীর মাঝখানে নির্মাণ করা হচ্ছে দীর্ঘ স্বপ্নের তিস্তা সেতু। এগিয়ে চলছে প্রকল্পের কাজ। এটি বাস্তবায়ন হলে সড়ক পথে কুড়িগ্রামের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব কমবে প্রায় ১০০ কিলোমিটার। একই সঙ্গে পাল্টে যাবে গাইবান্ধা-কুড়িগ্রাম মানুষের জীবন বৈচিত্র্য।

সম্প্রতি দেখা যায়, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ঘাট ও কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা ঘেষা স্থানে তিস্তা সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে। ইতিমধ্যে ২৯০টি পাইলের মধ্যে ১৭৫টি, গার্ডার ১৫৫টির মধ্যে ৭৪টি এবং ৩০টি পিলারের মধ্যে ১৪টি বাসনো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, তিস্তার এপারে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা এবং ওপারে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা। দুই জেলার মাঝপথ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে দেড় কিলোমিটার প্রশস্ত তিস্তা নদী। বর্ষা এলেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে রাক্ষুসে এই নদী। দুই উপজেলার লাখ লাখ মানুষের পারাপারের একমাত্র উপায় খেয়াঘাট। দিনে খেয়াতে নদী পাড়ি দিতে পারলেও সন্ধ্যা নেমে এলেই বন্ধ হয়ে যায় সেই খেয়া। আরও নানা ভোগান্তির কবলে পড়তে হয় মানুষদের। এর মধ্যে এই অঞ্চলের ভুক্তভোগিদের দীর্ঘদিনের দাবি নিরসনে ওই স্থানে নির্মিত হচ্ছে ১ দশমিক ৪৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের স্বপ্নের সেই তিস্তা সেতু। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কুড়িগ্রাম, উলিপুর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, চিলমারী থেকে সড়কপথে ঢাকার দূরত্ব কমে আসবে প্রায় ১০০ কিলোমিটার। দূরত্ব কমবে বিভাগীয় শহর রংপুরেরও। এতে বাঁচবে সময় ও অর্থ। পাল্টে যাবে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের ধারা। ঘটবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন।

জানা যায়, গত ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা শহরের শাহ আবদুল হামিদ স্টেডিয়ামে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে হরিপুর ঘাটে তিস্তা নদীর উপর সেতুটির নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এ সেতুটির নির্মাণের দায়িত্ব পায় চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন। আর এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে। সময়সূচি অনুযায়ী ২০২৩ সালে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এই প্রকল্পে সেতুটির দক্ষিণ প্রান্তের সুন্দরগঞ্জ অংশের ২ কিলোমিটার সড়কসহ চিলমারী-ধর্মপুর-মন্ডলেরহাট-লক্ষীপুর-সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাটস্থ ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে প্রায় ৮৬ কিলোমিটার সড়কপথ। এই কাজের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আগামী ২০২৩ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য হবে সুপ্রসন্ন। যার ইতিবাচক ফল ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শামীম ও এনামুল হক বলেন, হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতুর কাজ শেষ হলে এটি হবে উত্তরাঞ্চলের নদীপারের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। যাতায়াত ও কৃষিপণ্য পরিবহন সহজ হবে। নিশ্চিত হবে ফসলের ন্যায্য মূল্য। দুই পাশে নদী শাসন করায় কমবে নদী ভাঙন। একই সঙ্গে নদীপারের হাজারও মানুষের ব্যবসার প্রসার ঘটবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাবিউল ইসলাম বলেন, আশা করা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ