শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ || ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

প্রকাশিত : ০৫:১১, ২৬ এপ্রিল ২০২৩

গাইবান্ধায় বিনা ধান-২৫ আবাদে আশার আলো দেখছেন কৃষকরা

গাইবান্ধায় বিনা ধান-২৫ আবাদে আশার আলো দেখছেন কৃষকরা

 

দীর্ঘ আট বছরের গবেষণায় দেশে প্রথমবারের মতো অতি লম্বা ও সবেচেয়ে সরু ধানের আবাদে মিলেছে সফলতা। এ বছর সারাদেশের নেয় স্বল্প পরিসরে এই ধান চাষ করে আশার আলো দেখছে গাইবান্ধার কিছু কৃষক। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত আকর্ষণীয় ও রপ্তানিযোগ্য বিনা ধান-২৫ আবাদে আশার আলো দেখছেন গবেষকরা।

 

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, দেশের চাহিদা অনুসারে সরু ও চিকন (প্রিমিয়াম কোয়ালিটি) চাল অপ্রতুল থাকায় এবং বিদেশে রপ্তানির উদ্দেশ্যে বিনা'র উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ বিনা ধান-২৫ উদ্ভাবন করে। ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর বিনা ধান-২৫ জাতের উন্মোচন করা হয়। উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সাকিনা খানমের ৮ বছরের গবেষণায় আসে সাফল্য। বিনা ধান-২৫ বিদেশে রপ্তানিযোগ্য। যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমাবে।

 

বিনা ধান-২৫ মূলত ব্রি ধান-২৯ এর বীজে জাপানের একটি ল্যাবে ৪০ গ্রে মাত্রার কার্বন আয়রন রশ্মি প্রয়োগ করে উদ্ভাবন করা হয়। যা চেকজাত ব্রি ধান ৫০ থেকে দশ শতাংশ ফলন ও প্রিমিয়াম কোয়ালিটি সম্পন্ন এবং আগাম পরিপক্ক। গড়ে ১৩৮ থেকে ১৪৮ দিনে এই ধান ঘরে তোলা যায়। এ ধানের গড় ফলন হেক্টর প্রতি সাড়ে সাত থেকে সাড়ে আট মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত ধান জাতের মধ্যে বিনা ধান ২৫ সর্বাধিক লম্বা ও সরু। জমিতে পানি জমে থাকলে এবং বৈরী আবহাওয়ায় প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির কবলে পড়ে গাছ সাময়িক হেলে পড়লেও জমি থেকে পানি সরে গেলে এবং রৌদ্রোজ্জ্বল অবস্থায় জাতটি ২-৩ দিনের মধ্যে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরে আসে ও স্বাভাবিক ফলন দেয়।

 

বিনা ধান-২৫ এর গবেষক ড. সাকিনা খানম বলেন, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতগুলো ধানের জাত আবিষ্কার হয়েছে তার মধ্যে সবচাইতে লম্বা এবং সরু বিনা ধান-২৫। এই ধান স্বল্পমেয়াদি, জীবনকাল খুবই কম। ব্রি ধান-২৯ এর চেয়ে ১৫ থেকে ২০ দিন আগে পেকে যায়। কৃষক সারাদেশে এ বছর চাষ করেছে। এ ধান চাষ করে কৃষকরা খুবই খুশি।

 

তিনি আরও বলেন, এই ধানের গড় ফলন হেক্টর প্রতি সাড়ে ৭ থেকে সাড়ে ৮ মেট্রিক টন। এটি যেমন প্রিমিয়াম কোয়ালিটি, অল্প জীবনকাল এবং ফলনও বেশি। গাছটি লম্বা বেশি হওয়ায় কৃষক খড় পাবে প্রচুর। প্রচলিত বোরো ধানের জাতের চেয়ে এই ধানে রোগ ও পোকার আক্রমণ নেই বললেই চলে। এ ধান চাষে পানি যেমন কম লাগে ইউরিয়া সারও কম লাগে। এ জন্য বিনা ধান-২৫ কে ইউরিয়া এবং পানি সাশ্রয়ী, বালাইনাশক সাশ্রয়ী জাতও বলা যায়। গাইবান্ধা অঞ্চলে বিনা ধান২৫ এর মাঠ পরিদর্শন করেন এ ধানের উদ্ভাবক ড. সাকিনা খানম, এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাংবাদিক জোট গাইবান্ধা জেলা শাখার সভাপতি আকতার হোসেন খান ওপেল, সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন সিরল ও কৃষক কৃষাণী।

 

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ