নাইজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারির মৃত্যু

নাইজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি রোববার লন্ডনের একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তিনি অনেকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। ২০১৫ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে তিনি আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
নাইজেরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবুর মুখপাত্র রোববার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভোগার পর প্রেসিডেন্ট বুহারি আজ লন্ডনে প্রায় সাড়ে ৪টার (স্থানীয় সময়) দিকে মারা গেছেন।”
এই মুখপাত্র জানিয়েছেন, বুহারির মৃতদেহ নাইজেরিয়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য টিনুবু তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশিম শেতিমা ও চিফ অব স্টাফকে লন্ডনে পাঠিয়েছেন। বুহারিকে নাইজেরিয়ার নিয়ে দাফন করা হবে।
নাইজেরিয়ার সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, মুসলিম ধর্মানুসারি বুহারিকে তার নিজ রাজ্য উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় কাটসিনায় ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী দাফন করা হবে।
বুহারি প্রথমে ১৯৮০-র দশকে একজন সামরিক শাসক হিসেবে নাইজেরিয়াকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ওই সময় সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিলেন তিনি। দুর্নীতিবিরোধী দৃঢ় রাজনীতির জন্য তিনি বেশ কিছু একনিষ্ঠ অনুসারি অর্জন করেছিলেন।
তিনি নিজেকে ‘রূপান্তরিত গণতন্ত্রী’ বলে উল্লেখ করতেন এবং নিজের সামরিক উর্দির বদলে কাফতান ও নামাজের টুপি পরতেন। “আমি সবার এবং আমি কারও নই,” বুহারি সমর্থক ও সমালোচকদের সবসময় এই কথাটি বলতেন।
বুহারি ২০১৫ সালের নির্বাচনে নাইজেরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথনকে পরাজিত করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, যাকে এখন পর্যন্ত নাইজেরিয়ার সবচেয়ে সুষ্ঠ নির্বাচন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নাইজেরিয়ার ইতিহাসে সেবারই প্রথম কোনো ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত হন।
অনেকেরই ধারণা ছিল, এই অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন অভিযান চালাবেন, যেমনটি তিনি সামরিক শাসক থাকার করেছিলেন।
কিন্তু বাস্তবে যে সহিংতা দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল তা ছড়িয়ে পড়ে। নাইজেরিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে বন্দুকধারীরা এবং দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী ও অপরাধী দলগুলো অবাধে তৎপরতা চালানো শুরু করে। এতে দেশটির বিশাল কয়েকটি অঞ্চল নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
তার আবেদনের বেশিরভাগই ছিল দুর্নীতিবিরোধী নীতির মধ্যে। সামরিক শাসক হিসেবে যেমন, বেসামরিক শাসক হিসেবেও এটিই তার এজেন্ডার কেন্দ্রীয় বিষয় ছিল।
সূত্র: বিডি নিউজ ২৪