শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ || ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

প্রকাশিত : ১৭:১৮, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

এবার মহাকাশে ‘হাত’ বাড়ালেন কিম

এবার মহাকাশে ‘হাত’ বাড়ালেন কিম
সংগৃহীত

মহাকাশ নিয়ে ‘খেলা’ শুরু হয়ে গেছে কবেই। সেই চাঁদে প্রথম মানুষ পাঠানো নিয়ে আমেরিকা ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে শুরু হওয়া এই খেলা এখন ব্যাপ্তি বাড়িয়েছে। বর্তমানে আমেরিকা, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারত ও চীনের নামও। 

এসব দেখে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন কি আর বসে থাকতে পারেন? তিনি এবার মহাকাশের দিকে হাত বাড়ালেন। মহাকাশে গোয়েন্দা স্যাটেলাইট পাঠিয়েছেন কিম। এ জন্য দেশটির বিজ্ঞানীদের বিশেষ ধন্যবাদও দিয়েছেন তিনি। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, গত মঙ্গলবার মহাকাশে গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে উত্তর কোরিয়া। এই স্যাটেলাইট পাঠানোকে মহাকাশে ক্ষমতার নতুন যুগ বলে আখ্যায়িত করেছেন কিম জং উন। তিনি বলেন, এই মিশন নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পূর্ণ প্রয়োগ। এটি বড় সফলতা।

তবে এই গোয়েন্দা স্যাটেলাইট এখনই কাজ করতে পারবে না বলে দাবি করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এর আগে উত্তর কোরিয়ার দুটি পদক্ষেপ ব্যর্থ হয়েছিল। 

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ বলছে, এই সফল উৎক্ষেপণের পর গত বৃহস্পতিবার স্ত্রী রাই সোল জু ও মেয়ে কিম জু আইকে নিয়ে বিজ্ঞানীদের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন কিম। এ সময় তিনি তাদের বিশেষ ধন্যবাদ জানান।  

সামরিক শক্তি আরও আধুনিক করার জন্য ৫ বছরের একটি বিশেষ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এর মধ্যে মহাকাশে গোয়েন্দা স্যাটেলাইট পাঠানো একটি। এর মাধ্যমে কোরিয়ান উপদ্বীপে আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক উপস্থিতি নজরে রাখতে পারবেন কিম।

গত মঙ্গলবার এই গোয়েন্দা স্যাটেলাইট পাঠানোর পরপরই পিয়ংইয়ং জানায়, এরই মধ্যে তারা গুয়ামে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোর বিভিন্ন ছবি পর্যালোচনা শুরু করেছে। 

মহাকাশে উত্তর কোরিয়ার এই গোয়েন্দা স্যাটেলাইট পাঠানোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ, আমেরিকা ও জাপান। আর দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, এতে রাশিয়ার সহায়তা রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে রাশিয়া সফর করেছেন কিম। ওই সময় সাময়িক বিভিন্ন চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়।  

২০১৮ সালে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে হওয়া সামরিক চুক্তির আংশিক স্থগিত করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। সামরিক উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। উত্তর কোরিয়া সফলভাবে মহাশূন্যে গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ঘোষণা দেওয়ার পর এর জেরে গত বুধবার এ ঘোষণা দেয় দক্ষিণ কোরিয়া।

বিবিসি জানায়, চুক্তিটি আংশিক স্থগিত করা হয়েছে। দুই দেশের সীমান্তে একতরফা সংঘাতের ঝুঁকি কমানোই ছিল এ চুক্তির লক্ষ্য। পিয়ংইয়ং মহাকাশে একটি গোয়েন্দা স্যাটেলাইট সফলভাবে উৎক্ষেপণের দাবি করার পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু বলেছেন, ‘উৎক্ষেপণটি দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।’

সিউলের দাবি, গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ সামরিক চুক্তির অধীনে প্রতিষ্ঠিত নো-ফ্লাই জোন লঙ্ঘন করে উত্তর কোরিয়া সীমান্তে নজরদারি ফ্লাইট পুনরায় চালু করবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন পদক্ষেপে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার উৎক্ষেপণ করা গোয়েন্দা স্যাটেলাইটটি ইতিমধ্যে সফলভাবে কক্ষপথে প্রবেশ করেছে। তবে স্যাটেলাইট আসলেই কাজ করছে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। 

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র আদ্রিয়ান ওয়াটসন বলেছেন, ‘এই পদক্ষেপে ওই অঞ্চল ও এর বাইরে নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তোলার ঝুঁকি আছে।’ ২০২১ সালের জানুয়ারিতে কিম জং উনের নেওয়া উত্তর কোরিয়ার পঞ্চবার্ষিক সামরিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গোয়েন্দা স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করলো দেশটি। 

তবে এটিই দেশটির প্রথম এই ধরণের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নয়। গত মে ও আগস্টে এর আগের দুটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের এটি ছিল তৃতীয় প্রচেষ্টা। দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা বলেছেন, পিয়ংইয়ং মস্কোর কাছ থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা পেয়েছে, যা এটিকে তার আগের বাধাগুলি অতিক্রম করতে পেরেছে।

সূত্র: Independent Tv

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ