রোজার আগেই ৫০ লাখ পরিবার ৩০ কেজি করে চাল পাবে
![রোজার আগেই ৫০ লাখ পরিবার ৩০ কেজি করে চাল পাবে রোজার আগেই ৫০ লাখ পরিবার ৩০ কেজি করে চাল পাবে](https://www.dainikgaibandha.com/media/imgAll/2024March/25-2403050930.jpg)
রমজানের আগেই ৫০ লাখ পরিবার ১৫ টাকা করে ৩০ কেজি চাল কিনতে পারবেন। রাজধানীর ৩০ স্থানে গরুর মাংস বিক্রি হবে ছয়শ টাকা কেজিতে। ডিম বিক্রি হবে প্রতি পিস ১০ টাকা ৫০ পয়সায়।
সাশ্রয়ী মূল্যে মিলবে খাসি, মুরগি ও দুধ। বিক্রি চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত। আঙুর-আপেলের পরিবর্তে বরই দিয়ে ইফতার করার পরামর্শও এসেছে। সোমবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে চলমান জেলা প্রশাসক সম্মেলনের (ডিসি) দ্বিতীয় দিনের বিভিন্ন কর্ম-অধিবেশন শেষে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সাংবাদিকদের এসব তথ্য দেন।
অধিবেশন শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় দেড় লাখ টন চাল আগামী ১০ মার্চের মধ্যে বিতরণ করা হবে। তিনি বলেন, আগে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ১ মার্চ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত চলত। সামনে রমজান মাস শুরু হচ্ছে।
এ অবস্থায় কর্মসূচিটি ১০ মার্চের মধ্যে শেষ করব। এ সময়ের মধ্যে আমরা ডিলারদের মাধ্যমে দেড় লাখ টন চাল বিতরণ করব। ৫০ লাখ পরিবার ১৫ টাকা করে ৩০ কেজি চাল কিনতে পারবে। এতে বাজারে কী ধরনের প্রভাব পড়বে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাজার থেকে ৫০ লাখ লোক এক মাস চাল কেনা বন্ধ করলে অবশ্যই বাজারে প্রভাব পড়বে। মজুতবিরোধী চলমান অভিযানে সহায়তা করতে ডিসিদের বলে দেওয়া হয়েছে।
আগামী ১০ মার্চ থেকে রাজধানীর ৩০টি স্থানে ৬০০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান। প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, রমজান উপলক্ষ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে মাছ ও মাংস বিক্রি করা হবে। ঢাকার ৩০টি স্থানে ভ্রাম্যমাণ ট্রাক সেলের মাধ্যমে গরুর মাংস ৬০০ টাকায়, খাসির মাংস ৯০০ টাকায় আর সলিড ব্রয়লার মুরগি ২৮০ টাকায় বিক্রি করা হবে। তিনি বলেন, ডিম বিক্রি হবে প্রতিটি ১০ টাকা ৫০ পয়সা করে। এটা একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা। আব্দুর রহমান বলেন, ঢাকার বাইরেও ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সামর্থ্য অনুসারে আরও বেশি জায়গায় ট্রাক সেল বাড়ানোর চেষ্টা করব। রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ডিসিদের ভূমিকা কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তারা কঠোরভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করবে। এবার ডিসিরা তাদের সব সামর্থ্য নিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে একমত হয়েছেন। ব্যবসায়ীদের কাছেও অনুরোধ করা হয়েছে, আপনারা মানুষকে কষ্ট দিয়ে অধিক মুনাফা লাভের চেষ্টা করবেন না।
রমজানে আপেল ও আঙুরের পরিবর্তে বরই দিয়ে ইফতার করার পরামর্শ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। তিনি বলেন, আমাদের অভাবের অভিযোগ তো আছেই। সবকিছুতে তো আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। ফলমূল তো বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়, সেগুলো আপনাদের বুঝতে হবে। বরই দিয়ে ইফতার করেন না কেন? আঙুর লাগবে কেন, আপেল লাগবে কেন, আমাদের দেশে কি আর কোনো ফল নেই। দেশীয় ফল বরই, বেলের শরবত, শসা, পেয়ারা ইত্যাদি দিয়ে ইফতারির প্লেট সাজান।
কৃষকদের ভেজাল ও নিম্নমানের বীজ দেওয়া হলে সরবরাহকারীকে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ। মন্ত্রী বলেন, কেউ খারাপ বীজ সরবরাহ করলে চরম শাস্তির নির্দেশ দিয়েছি ডিসিদের। যদি কোনো বীজে অঙ্কুরোদ্গম না হয়, তবে সে দায় সরবরাহকারীদের নিতে হবে। তাকে শাস্তি পেতেই হবে। সেক্ষেত্রে চরম শাস্তির কথা বলে দিয়েছি। কৃষকদের বিষয়ে আমরা অনেক সজাগ। আব্দুস শহীদ বলেন, বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ। দেশের জিডিপি কৃষির ওপর নির্ভর করে। যে কারণে কৃষির উৎপাদন ব্যাহত হলে বড় সমস্যা হয়।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল হক টিটু বলেছেন, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে হলেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ডিসিদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব ছিল ১৯৫৬ সালের এসেনশিয়াল কমোডিটি অ্যাক্ট যুগোপযোগী করা। আমরা অতিদ্রুত বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকদের নিয়ে একটা মিটিং করে এ আইনটি কীভাবে আরও যুগোপযোগী করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করি। এছাড়া পণ্যের তালিকাটাকে কীভাবে আরও সুন্দর করা যায়, শিগগিরই আমরা সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেব। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা আমাদের কাজ। সে কাজে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মতামত এবং প্রস্তাব সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নেবে।
প্রয়োজন হলে জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) প্রকল্প নেওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব দিতে পারবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার। তিনি বলেন, প্রকল্প নেওয়ার ব্যাপারে তো জেলা প্রশাসকদের মূল ভূমিকা নেই। এটা মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলো থেকে নেওয়া হয়। কিন্তু আজকে আমাদের আলোচনা হয়েছে, যদি কোনো প্রয়োজন হয় এবং জনকল্যাণে ডিসিরা এলাকাভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব দিতে পারবেন।
সূত্র: যুগান্তর