শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১৮:২১, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আশা জাগাচ্ছে বোরো

আশা জাগাচ্ছে বোরো

বোরো ধান চাষের এখন ভরা মৌসুম চলছে। কোথাও বীজতল তৈরি হচ্ছে, কোথাও চারা তৈরি করে রোপণের অপেক্ষা করছেন কৃষক। বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় কৃষকদের মধ্যে বোরো আবাদে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেই আগ্রহে বাদ সেধেছে সেচ, সার বীজ কীটনাশকসহ সব কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি। 

সরকারও এ বছর বোরোর উৎপাদন বাড়াতে আগ্রহী। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণে বিশ্বে মন্দার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। ফলে দেশে খাদ্যশস্যে উৎপাদন বাড়িয়ে উল্লেখযোগ্য মজুত গড়ে তোলা গেলে অর্থনীতির জন্য তা স্বস্তিদায়ক হবে। এ কারণে কৃষি মন্ত্রণালয় বোরো ধানের আবাদ ও উৎপাদন বাড়ানোর জন্য চলতি মৌসুমে চার ক্যাটাগরিতে প্রায় ১৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছে। সারা দেশের ২৭ লাখ কৃষক এ প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়েছেন। 

জানুয়ারি মাসে ঘন কুয়াশার কারণে উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় বোরো ধানের বীজতলায় সমস্যা হয়েছিল। কিন্তু দ্রুত আবহাওয়ায় পরিবর্তন ঘটায় বড় সমস্যা কেটে গেছে। দূর হয়েছে চাষিদের আশঙ্কাও। তা ছাড়া কুয়াশা থেকে বীজতলা রক্ষার জন্য এ বছর কৃষক বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। অনেকে রাতে বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখেছিল, যাতে কুয়াশার হাত থেকে বীজতলা রক্ষা পায়।

ফলে সারা দেশে তীব্র শীত ও কুয়াশায় চাষির বীজতলার খুব একটা ক্ষতি হয়নি। কৃষকদের অভিজ্ঞতার এই ফসল বোরোতে বড় সফলতা আনবে বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। এ বছর সারা দেশে ৪৯ লাখ ৭৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এই জমি থেকে ২ কোটি ১৫ লাখ টন বোরো উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যা অন্যান্য বছরের থেকে সর্বোচ্চ। 
দেশে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৯ লাখ ৫১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ টন। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি ১৫ লাখ টন। যদিও উৎপাদন এর চেয়ে বেশি হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, এরই মধ্যে (৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) দেশে ২ লাখ ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর বীজতলা করা হয়েছে। যেখানে এ বছর বীজতলা করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবছর কৃষক ৩০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরোর বীজতলা করেছে।  বীজতলায় অগ্রগতি প্রায় ১১২ শতাংশ। এতেই ধারণা করা যায়, এ বছর বোরো আবাদের প্রতি কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে।

বেশি জমিতে বোরো আবাদের জন্য বেশি বীজতলা তৈরি হয়েছে। এই বীজ দিয়ে বোরো আবাদ করলে এ বছর বোরো আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা না দিলে চলতি মৌসুমে বোরোর উৎপাদনও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। 
অতীতে বন্যায় বোরা ফসল মার খাওয়ার অভিজ্ঞতায় এ বছর আগেভাগেই বোরো আবাদ শুরু করেছে কৃষকরা। ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ৩৪ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ সম্পন্ন হয়ে যায়। যেখানে গত বছর (২০২২) এই সময়ে বোরো আবাদের পরিমাণ ছিল ২৭ লাখ হেক্টর। এ বছর ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অগ্রগতির হার ছিল ৬৮ শতাংশ। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে স্থানীয় জাতের বোরো। এই ধান আবাদের অগ্রগতি হয়েছে ৮৮ শতাংশেরও বেশি।

দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে হাইব্রিড। এ বছর ১৩ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ১০ লাখ ৬৩ হাজার হেক্টর। এক্ষেত্রে অগ্রগতির হার ৮০ শতাংশ। অপরদিকে এ পর্যন্ত উচ্চ ফলনশীল ধানের আবাদ হয়েছে ২৩ লাখ ২০ হাজার হেক্টর। গত বছরের তুলনায় অগ্রগতির এই হার ৬৩ শতাংশ। সব মিলিয়ে এ বছর বোরোর আবাদের অগ্রগতি হয়েছে ৬৮ শতাংশের বেশি। আশা করা হচ্ছে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই এ বছর বোরো আবাদ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। 
বোরো আবাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দেশের হাওড় অঞ্চল। দেশের সাতটি জেলা নিয়ে হাওড় অঞ্চল গঠিত। এ বছর হাওড় ও হাওড়ের বাইরের অঞ্চলে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ৯ লাখ হেক্টর। ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবাদ হয়েছে নয় লাখ হেক্টর জমিতে। অগ্রগতি ৯৫ শতাংশ। তবে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এ বছর ইতোমধ্যে হাওড় অঞ্চলে বোরো আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। কৃষক এখন হাওড় অঞ্চলে ধান গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত।   
সরকারও এ বছর বোরোর উৎপাদন বাড়াতে আগ্রহী। এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষি মন্ত্রণালয় যে কোনো উপায়ে এ বছর বোরোর উৎপাদন বাড়াতে চায়। সে কারণে মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বাজেট কৃষি পুনর্বাসন-সহায়তা খাত থেকে বড় প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে এ বছর আগেভাগেই এসব প্রণোদনা বিতরণ কার্যক্রম শেষ করা হয়েছে। যাতে কৃষক দ্রুত বোরো আবাদ শেষ করতে পারে। 
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ধানের দাম, উন্নত প্রযুক্তি ও বীজ এবং সরকারের বড় প্রণোদনার কারণে কৃষক বোরোর প্রতি আগ্রহী হয়েছে। তারা এ বছর আগ্রহ নিয়ে বোরো আবাদ করছে। তাদের মধ্যে যে অনীহা অন্যান্য বছর তৈরি হতো সেটা একদমই নেই। বরং কৃষকের আগ্রহ দেখে মনে হচ্ছে, এবছর বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িযে যাবে। আর কোন দুর্যোগ না হলে আশা করা যায়, চলতি বছর ২ কোটি ১৫ থেকে ২০ লাখ টন বোরো উৎপাদন হবে, যা অন্যান্য বছরের থেকে সর্বোচ্চ।
১৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা ॥ কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, বোরোর আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এবছর প্রায় ১৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। সারা দেশের ২৭ লাখ কৃষক এ প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়েছেন। 
এবার তিনটি ধাপে বা ক্যাটাগরিতে দেয়া হয়েছে এসব প্রণোদনা। হাইব্রিড ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রায় ৮২  কোটি টাকার প্রণোদনার আওতায় ১৫ লাখ কৃষকের প্রত্যেককে দেয়া হয়েছে বিনামূল্যে ২ কেজি ধানবীজ। উচ্চ ফলনশীল জাতের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রায় ৭৩ কোটি টাকার প্রণোদনার আওতায় উপকারভোগী কৃষক ১২ লাখ। এতে একজন কৃষক এক বিঘা জমিতে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০  কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে পেয়েছেন।
এ ছাড়া কৃষিযন্ত্র ব্যবহারের সুবিধার্থে একটি মাঠে একই সময়ে ধান লাগানো ও কাটার জন্য ১৫ কোটি টাকার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এর আওতায় ৬১টি জেলায় ১১০টি ব্লক বা প্রদর্শনী স্থাপিত হবে। প্রতিটি প্রদর্শনী হবে ৫০ একর জমিতে, খরচ হবে ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বাজেট কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা খাত থেকে এ প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। 
বাড়ছে উৎপাদন খরচ ॥  বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল, সার-কীটনাশকসহ সব ধরনের কৃষিসাগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি কৃষকদের দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। সরকার দুই দফা বিদ্যুৎ, ইউরিয়া সার ও অস্বাভাবিক পরিমাণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়ে কৃষকের সেচ খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। আর ডলার সংকটের অজুহাতে বেড়েছে অন্যান্য কৃষি সামগ্রীর দাম। ফলে কৃষিতে বেড়ে গেছে উৎপাদন ব্যয়। এবার বোরো ধান চাষের খরচ অন্তত ২৫ শতাংশ বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন কৃষক। ফলে সে অনুযায়ী, ধানের দাম না পেলে লোকসানে পড়তে হবে। 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর বোরো মৌসুমে এক বিঘা জমিতে পাঁচবার চাষে খরচ ছিল ১ হাজার ২০০ টাকা। এ বছর বোরো মৌসুমে এক বিঘা জমিতে পাঁচবার চাষে খরচ হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ টাকা। গত বছর বোরো মৌসুমে এক বিঘা জমিতে সেচ খরচ ছিল দেড় হাজার টাকা। এ বছর বোরো মৌসুমে এক বিঘা জমিতে সেচ খরচ হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা। একই সঙ্গে বিঘা প্রতি চারা রোপণ খরচ বেড়েছে ৩০০-৪০০ টাকা করে।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চর লক্ষ্মীপুর গ্রামের কৃষক মিয়াজ উদ্দিন মাস্টার বলেন, ‘গত বোরো মৌসুমে সকালের নাশ্তা ও দুপুরে ভাত খাওয়াসহ দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরি দিতে হতো। নাশতা ও ভাত খাওয়া ছাড়া দিতে হতো ৫০০ টাকা। এখন তা ১০০-১২০ টাকা বেড়েছে। বেশি না দিলে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে ১০ শতাংশে এক কাঠার হিসাব করা হয়। গত বছর এক কাঠা জমির হালচাষ ছিল ৪০০ টাকা। এ বছর তা বেড়ে ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা দিতে হচ্ছে। এদিকে বিদ্যুৎ বিল বাড়ায় কাঠাপ্রতি সেচ খরচ এ বছর আরও ১০০ টাকা বাড়ছে।’
রংপুরের কৃষক মতিন শেখ বলেন, টিলার মেশিন ও পানির পাম্প, সার, সেচ, কীটনাশক, বীজ, শ্রমিকসহ সবকিছুর জন্য এখন প্রতি বিঘা জমি চাষ করতে প্রায় ১৯ হাজার ৯০০ টাকা খরচ হয়েছে। গত বছর যে খরচ ছিল ১৪ হাজার ৯০০ টাকা। এবারের বাড়তি খরচ কৃষকদের জন্য বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। 
রংপুরের টেকিয়ারপাড়া এলাকার শামসুল হক জানান, এক বিঘা জমি তৈরি করতে গত বছরের চেয়ে খরচ বেড়ে ৯০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা হয়েছে, চারা বপনে খরচ ১ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা হয়েছে, সেচ বাবদ খরচ ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে বেড়ে ১ হাজার ৬০০ টাকা হয়েছে, সার বাবদ খরচ ২ হাজার থেকে বেড়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা হয়েছে, কীটনাশক ও অন্যান্য খরচ ৮০০ টাকা থেকে বেড়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ টাকা হয়েছে।
দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কৃষক কাঞ্চি কর্মকার বলেন, সরকার ডিজেল ও সারের দাম বাড়ানোর পর থেকে কৃষিকাজের সবকিছুর খরচ বেড়েছে। গত বছর, ডিজেলের দাম ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে এবং প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের দাম ১৬ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২২ টাকা।
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন বলেন, গত বছরের মাঝামাঝি ডিজেল ও চলতি বছর দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়ায় এবার বোরো মৌসুমে চাষাবাদে খরচ বাড়বে। গত বোরো মৌসুমের ধান চাষে সেচ খরচ ছিল বিঘাপ্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা।এ বছর ৪০০ টাকা বেড়ে তা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। প্রতি কেজি ধানের বীজে দাম বেড়েছে প্রায় ২০০ টাকা। এ ছাড়া জমি চাষের খরচ ৯০০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০ টাকা। একইভাবে চাষের খরচ বেড়েছে ভুট্টা, আলু, সরিষাসহ অন্য ফসল রোপণ ও উৎপাদনে। সেইসঙ্গে যোগ হবে কীটনাশকের বাড়তি খরচও।
বরেন্দ্র ও চর এলাকার কৃষকরাও রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। তারা বলছেন, ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বোরো আবাদ ব্যয়বহুল হয়েছে। ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ায় উৎপাদন খরচও বেড়ে যাবে। এতে প্রতি হেক্টরে কৃষকদের সেচ ও মাড়াইয়ের জন্য গত বছরের থেকে এ মৌসুমে অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে। নওগাঁর মান্দা সদর উপজেলার কৃষক কাদের বেপারি বলেন, বোরো মৌসুমে এক হেক্টর জমিতে ১০ থেকে ১৫ বার সেচ দিতে হয়।তেলের দাম বাড়ায় একরপ্রতি সেচ খরচ ৪০০ টাকা, চাষের খরচ ৩০০ ও মাড়াইয়ে ৩০০ টাকা খরচ বেশি পড়েছে। অন্যান্য উপকরণের দামও চড়া। তবে সে জন্য এবার বোরো আবাদ কমেনি। সবাই ধানের দাম ভালো থাকায় আগ্রহ দেখাচ্ছে। যদিও খরচ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এসএম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, সার ও বিদ্যুৎ ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধিতে কিছুটা প্রভাব পড়বে। তবে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবেন কৃষকরা। তা ছাড়া সরকার বিভিন্ন সময় কৃষকদের বিনামূল্যে সার-বীজ দিচ্ছে। কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য পান সে বিষয়ে মনিটরিং করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, বর্তমানে যেমন জ্বালানির দাম বেড়েছে, তেমনি ধান-ভুট্টাসহ সব ফসলের দামও বেড়েছে। চাষাবাদ করে কৃষকরা লাভবানই হয়।
তিনি আরও বলেন, কৃষকরা সাধারণত একযোগে সবাই শস্য বিক্রি করে থাকেন। আবার যারা কিনছেন তারা দাম পরে পান। কৃষকরা যদি মজুত রেখে বিক্রি বা একটু দেরি করে বিক্রি করেন তারাও দাম পাবেন। এক্ষেত্রে তাদের কিছুটা কৌশলী হতে হবে।
বিদ্যুৎ ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খাদ্য সংকট হবে না। কৃষকের লাভ কম হবে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আয়ের ওপর বড় প্রভাবে পড়বে।’ তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ আছে সারের ওপর ভর্তুকি কামনোর জন্য, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সেটা কিছুতেই করবেন না।’ 

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ