শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ || ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

প্রকাশিত : ১৭:০৫, ৪ মার্চ ২০২৪

গৃহিণী থেকে উদ্যোক্তা, অনলাইনে আয় লাখ টাকা

গৃহিণী থেকে উদ্যোক্তা, অনলাইনে আয় লাখ টাকা
সংগৃহীত

রহিমা বিলকিস। থাকেন রাজশাহীতে। ছয় ভাই-বোনের মধ্য তিনি পঞ্চম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় বিয়ে হয় তার। এরপর শুরু হয় সংগ্রামী জীবন। পড়াশোনা, স্বামী, সংসার সামলিয়ে হয়ে যান একজন সফল উদ্যোক্তা। 

উদ্যোক্তা রহিমা বলেন, ১০-১১ বর্ষে ভর্তি হই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুরেন্স ডিপার্টমেন্টে। তৃতীয় বর্ষে থাকাকালে বিয়ে হয় এবং চতুর্থ বর্ষের ফাইনালের আগে আমার প্রথম সন্তান হয়। সন্তান হওয়ার পরপরই বেশ বড় একটা ধাক্কা পাই। খুবই অসুস্থ ছিল আমার সন্তান। এজন্য পড়াশোনা শেষ করে চাকরির কথা আমার মাথায় নিয়ে আসেনি। সবসময় চেয়েছি নিজে কিছু একটা করার। 

তিনি আরো বলেন, স্বামী, সংসার, সন্তান এভাবেই চলছিলো সব। এরমধ্যেই ২০১৯ সালে আমি দ্বিতীয় সন্তানের মা হই এবং ২০২০ সালের মে মাসে আমার প্রথম সন্তান মারা যায়। তারপর আমি পুরোপুরি প্রায় ভেঙে পরি। কি করব বুঝে উঠতে পারি না। একাকীত্ব ও সন্তান হারানোর বেদনা হৃদয়ে নাড়া দেয়। এরপর বেশ একটা সময় কেটে যায়। ভাবতে থাকি কি করা যায়। পরে ফেসবুকের একটা গ্রুপ দেখে আমার উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ জাগে। ভাবি একাকীত্ব কাটাতে কিছু একটা করা দরকার। আর এভাবেই হয়ে যাই উদ্যোক্তা।

প্রথম দিকে কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না, যে কি দিয়ে শুরু করবে। পড়ে মাথায় আসে তার বাবা একজন কৃষক ছিলেন তাই কৃষি পণ্য নিয়েই কাজ শুরু করি। যে কথা সেই কাজ। ফেসবুকে ‘সবপাই’ অনলাইন পেজ খুলে শুরু করে দেন পণ্য বিক্রি। পরে তিনি sobpai.com নামে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটও খোলেন।

প্রথম দিকে তেমন সাড়া পাচ্ছিলাম না। একটানা লেগে থাকতে হয়েছে তার। লেগে থাকতে থাকতেই একসময় সাফল্যের দেখা পান। এক বছর পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। এ পর্যন্ত অনলাইনের মাধ্যমে তিনি প্রায় আট লাখ টাকার বেশি পণ্য বিক্রি করেছেন। এখন রহিমার অনলাইনের মাধ্যমে মাসে পণ্য বিক্রি করে থাকেন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার।

উদ্যোক্তা রহিমা

                                                                                    উদ্যোক্তা রহিমা

জানা যায়, রহিমার পণ্যগুলোর মধ্য অন্যতম হলো তাদের বাগানের সিজেনাল ফল আম ও লিচু। এগুলোতেই নাকি ভালো সারা পায় রহিমা। তবে এসবের পাশাপাশি যবের ছাতু, আখের গুড়, কুমড়ো বড়ি, খেজুরের গুড়, ডাল, মধু, সরিষার তেল, ঘি, আতপ চাল ও চালের গুঁড়া ইত্যাদিও বিক্রি করে থাকেন। এগুলো তিনি কুরিয়ারের মাধ্যমে সারাদেশে পাঠান। 

রহিমা জানান, প্রথমে উদ্যোক্তা জীবনে কাউকে পাশে না পেলেও পরে পাশে এসে দাঁড়ায় তার পরিবার। বিশেষ করে স্বামী, মা-বাবা, ভাই-বোন অনেক অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। তাদের অনুপ্রেরণা না থাকলে এতোদূর আসা সম্ভব হতো না তার।

রহিমার ভবিষ্যৎ ইচ্ছা, তার সবপাই এক সময় একটা ব্রান্ডে রুপান্তার হবে। সারাদেশের মানুষ এটাকে এক নামে চিনবে। পাশাপাশি সবপাই নামে একটা শো-রুম দেওয়া এবং এর মাধ্যমে মানুষের কর্মসংস্থানের একটা ব্যবস্থা করা।

 

সূত্র: ডেইলি-বাংলাদেশ 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ