শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ || ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

প্রকাশিত : ০৬:২৫, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ছাগল পালনে ঝুঁকছেন চরাঞ্চলের নারীরা!

ছাগল পালনে ঝুঁকছেন চরাঞ্চলের নারীরা!

নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলের নারীরা ছাগল পালনে ঝুঁকছেন। বর্তমানে দেশের অনেক নদী পানিশুণ্য হয়ে গেসে। ধীরে ধীরে দেশি মাছও হারিয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে চরাঞ্চলে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ছাগল পালন। চরে বসবাসরত নারীরা ছাগল পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। পাশাপাশি এই পশু পালনে অনেকে স্বাবলম্বীও হয়েছেন।

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলায় ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমরসহ ছোট বড় মোট ১৬টি নদ-নদী রয়েছে। এইসব নদীর তীরে প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। চরে বসবাসরত অধিকাংশ চাষিরা সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতায় চাষাবাদ ও ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এতে চরের কৃষক ও তাদের পরিবারের জীবন যাত্রার মান পরিবর্তন হয়েছে। থেতরাই ইউনিয়নের তিস্তার চরের গৃহবধূ মাজেদা বেগম বলেন, আমি ৪ বছর আগে স্থানীয় একটি উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় ৪ হাজার টাকায় একটি ছাগল কিনে পালন শুরু করি। বর্তমানে আমার ১২ টি ছাগল রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ছাগল বছরে ৩ বার বাচ্চা প্রসব করে। প্রতিবারেই ২-৪ টি বাচ্চা দিয়ে থাকে। আর এর লালন পালন খুবই সহজ। চরে জেগে উঠা ঘাস খেয়েই ছাগল বেড়ে উঠে। অতিরিক্ত খরচের প্রয়োজন পড়ে না। জোসনা বেগম বলেন, আমরা ছাগল পালনের প্রশিক্ষণ নিয়ে বাঁশ দিয়ে উঁচু জায়গা করে সেখানে পালন করছি। চরের ঘাস ও ছাগলের রোগের জন্য সময় মতো চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। ভালো যত্ন নিয়ে চাষ করলে ছাগল পালনে লাভবান হওয়া যায়। কারণ একটি ছাগল বছরে ৩ বার ও প্রতিবারে ৩-৪ টি করে বাচ্চা দিয়ে থাকে।

একই চরের শেরিনা বেগমের স্বামী আজাদুর রহমান বলেন, আগে আমরা যখন ছাগল পালন করতাম তখন বন্যার সময় বিভিন্ন রোগের কারণে ছাগল আক্রান্ত হয়ে মারা যেত। তবে এখন আমরা প্রশিক্ষণ নিয়ে বাঁশের তৈরি করে সেখানে ছাগল পালন করছি। বর্তমানে আমাদের ৬টি ছাগল, ৮টি ভেড়া ও ৬টি গরু রয়েছে। এগুলো পালনেই আমাদের সংসার চলে। চর এলাকার অধিকাংশ মানুষ আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল হওয়ায় তারা অন্যের জমিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতেন। তবে বর্তমানে তারা ছাগলসহ অন্যান্য গৃহপালিত পশু পালনে সফল হয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন। কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী বলেন, চরাঞ্চল ছাড়া বাকি চাষিরা বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফসলের উৎপাদন করে জেলার চাহিদা পূরণ করেন। আর চরের চাষিরা চাষাবাদ কম করতে পারলেও তারা জেলায় দুধ ও মাংসের চাহিদা পূরণ করছেন। এতে চরের চাষিদের সরকারি ও বেসরাকরী ভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এছাড়াও পশু পালনে বিভিন্ন পরামর্শ ও চিকিৎসার সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ