শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ || ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

প্রকাশিত : ১০:০১, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মাল্টা চাষে সফল মুরাদ

মাল্টা চাষে সফল মুরাদ

চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপর শখের বশে মাল্টা চাষাবাদ শুরু করেন। শখ থেকে এখন সফল মাল্টা চাষি তিনি। মাল্টা চাষি ফরহাদ হোসেন মুরাদ আলী হোসেনের ছেলে। জানা যায়, ২০২১ সালে ইন্টারনেট দেখে ২০০ শতক জমিতে নিজ উদ্যোগে বারি-১ ও ভিয়েতনামের ছয়শ মাল্টা চারা রোপণ করেন তিনি।

শুরুতেই তাকে এলাকার যুবক ও মুরব্বিরা পাগল উপাধি দিতে শুরু করলেন। মুরাদ মানুষের কথায় কান না দিয়ে হারভাঙা খাটুনি খেটে গাছগুলো পরিচর্যা করেন। এজন্য তিনি নিজ উদ্যোগে বাগানের জন্য বার্মিজ কেচো কম্পোষ্ট সার তৈরি করলেন। মুরাদের সেই মাল্টা বাগানে ভালো ফলন হয়েছে। এরই মধ্যে তার মাল্টা বাগান দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন আশেপাশের ক্রেতা এবং উৎসুক জনতা। প্রায় সবগুলো গাছেই বিক্রি উপযোগী বিভিন্ন জাতের পাকা-কাঁচা মাল্টার সমাহার দেখা যায়। 

স্থানীয়রা জানান, উদ্যোমী যুবক ফরহাদ হোসেন মুরাদ পড়ালেখা শেষ করে অন্য পেশায় না গিয়ে মাল্টার চাষাবাদ শুরু করেছেন। এতো সফলতা পাবে ভাবিনি। গত চারদিন ধরে তিনি মাল্টা বিক্রি করছেন। প্রথমে পাইকারি বিক্রি করলেও বর্তমানে তিনি ১০০ টাকা কেজি ধরে খুচরা বিক্রি শুরু করেছেন। ফরহাদ হোসেন মুরাদ বলেন, আমি যখন বাগানটির কার্যক্রম শুরু করি, তখন আমাকে এলাকার লোকজন হতাশ করেছেন। অনেকে আমাকে পাগলও বলেছেন। কৃষি অফিস থেকে আমাকে কোনো প্রকার সহযোগিতা করা হয়নি। আজ আমার বাগানে ফলন হয়েছে ভালো। একমাত্র ভরসা দিতো আমার বাবা আলী হোসেন। বাগানটি তৈরি করতে আমার ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। পরিবার থেকে এক টাকাও আমাকে সহযোগিতা করা হয়নি। বিভিন্নজন থেকে ধারদেনা করে বাগানের শ্রমিকদের টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে।

মুরাদের বাবা আলী হোসেন বলেন, মাল্টা বাগান করতে আমি ছেলেকে এক টাকাও দেইনি। দিয়েছি শুধু অনাবাদি ২০০ শতক জমি। এ জমিগুলোতের বর্ষার মৌসুমে পানি জমে থাকতো এবং শুস্ক মৌসুমে ফেটে চৌচির হয়ে থাকতো। কোনো ফসল হতো না। মুরাদ নিজ উদ্যোগেই মাল্টা বাগান তৈরি করেছে। সে সময় এলাকার লোকজন তাকে বিভিন্নভাবে তিরস্কার করতো। আজ মুরাদের সে বাগানের প্রায় ৫ টনেরও ওপরে মাল্টার ফলন হয়েছে। চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার প্যানেল মেয়র মিজানুর রহমান বলেন, মুরাদ যখন মাল্টা বাগানটি করে, তখন তিনি কোনো জায়গা থেকে সহযোগিতা পায়নি। তাকে নানাভাবে তিরস্কার করা হতো। কিন্তু অদম্য মুরাদ হার না মেনে আজ সফল হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোবায়ের আহমেদ বলেন, মুরাদের মাল্টা বাগানের সফলতা দেখে আমি নিজেও বিস্মিত। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়ালেখা করেও তিনি আজ একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তার এ উদ্যোগে বেকার যুবকরা অনুপ্রাণিত হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর হোসেন বলেন, হার না মানা যুবক মুরাদের কাহিনী শুনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমি নিজে গিয়ে তার বাগান পরিদর্শন করবো এবং তাকে সরকারিভাবে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ