শনিবার   ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ || ২২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

প্রকাশিত : ০৬:৫৭, ২৭ মার্চ ২০২৩

ভেনামি চিংড়ি চাষে সফল চাষি, বাণিজ্যিকভাবে অনুমোদনের দাবি

ভেনামি চিংড়ি চাষে সফল চাষি, বাণিজ্যিকভাবে অনুমোদনের দাবি

সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ি। জাল তুলতেই উঠে এলো আলোতে ঝিকমিক করা চিংড়ি। দিনের পর দিন পরিশ্রমের পর ঝাঁকে ঝাঁকে উঠে আসা এসব চিংড়িতে হাসি চাষিদের মুখে।

গত বছর দেশে প্রথমবারের মতো খুলনার পাইকগাছায় পরীক্ষামূলক ভেনামি চিংড়ি চাষ করেন যশোরের এক চাষি। প্রথম চাষেই সফলতা পান। সফলতার পর দ্বিতীয় ধাপে ওই প্রতিষ্ঠানসহ মোট ১১টি প্রতিষ্ঠান পরীক্ষামূলক ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমোদন পায়। এর মধ্যে চলতি বছর ৩১ মার্চ এমইউসি ফুডস থাইল্যান্ড থেকে ১০ লাখ ভেনামি জাতের পোনা আমদানি করে। চারটি পুকুরে ভেনামি চিংড়ি চাষ শুরু করেন।

পোনা ছাড়ার ৮০ তম দিনেই এক একেকটি চিংড়ি গড়ে ৩০ থেকে ৩২ গ্রাম ওজন হয়েছে। যা এখনই বিক্রয় যোগ্য। যেখানে গলদা বা বাগদা বিক্রয় যোগ্য হতে সময় নেয় কমপক্ষে ১২০ দিন। এখানকার চাষিরা বলছেন, এ ভেনামি চিংড়ি চাষে খরচও প্রায় অর্ধেক। চাষিরা বলেন, এ মাছ রোগ সহনীয় এবং বৃদ্ধিও সন্তোষজনক। এতে খরচও কম। পাশাপাশি চাষি বেশি লাভবানও হবেন। বাগদার পিছনে যদি ১০০ টাকা খরচ হয়, তাহলে ভেনামির পিছনে ৫০ টাকা খরচ।  

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে বাগদা চিংড়ির গড় উৎপাদন হেক্টর প্রতি ৩৪১ কেজি। সেখানে ভারতে ভেনামি চিংড়ির হেক্টর প্রতি উৎপাদন ৭ হাজার ১০২ কেজি। অর্থাৎ বাগদার তুলনায় ভেনামির উৎপাদন হেক্টর প্রতি ৬ হাজার ৭৬১ কেজি বেশি। পরপর দুইটি পরীক্ষামূলক চাষে সফলতার পর বাণিজ্যিকভাবে চাষের অনুমোদনের দাবি চিংড়ি রফতানিকারকদের। তাতে বদলে যেতে পারে দক্ষিণাঞ্চলের চিংড়ি শিল্প।

শুধুমাত্র ভেনামির কারণে একটি সফল প্রোজেক্ট পাওয়ার কথা জানান ফাহিম সি ফুড এ্যান্ড প্রসেসিং অ্যান্ড ফার্মিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. এ. হাসান পান্না। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি এস হুমায়ুন কবীর বলেন, সৌদি আরব, ইউএই ও কাতারের মতো অঞ্চলে এ চিংড়ি চাষ হচ্ছে। সুতরাং এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষের অনুমোদন দিতে হবে। এটিই হচ্ছে আমাদের দাবি।

ভেনামি চিংড়ির প্রাথমিক সাফল্যে আশাবাদী মৎস্য অধিদফতরও। তবে বাণিজ্যিক অনুমোদনের জন্য গবেষকদের পর্যবেক্ষণ ফলাফলের অপেক্ষায় তারা। খুলনা বিভাগের মৎস্য অধিদফতরের উপ পরিচালক মো. তোফাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ চিংড়ি নিয়ে বাংলাদেশ ফিশারি ইনস্টিটিউট গবেষণার সঙ্গে জড়িত। উনারা পর্যবেক্ষণ করছেন। এরপরে উনারা যে মতামত দেবেন, তার আলোকে বসে আমরা সিদ্ধান্ত নিব এটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের অনুমতি দেয়া হবে, কি না। উল্লেখ্য, চলতি বছর পরীক্ষামূলক ভেনামি চাষের জন্য মোট ১১টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে খুলনার ৮টি ও কক্সবাজারের ৩টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। 

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ