বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ || ১৩ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১৮:৪৪, ১০ জুলাই ২০২০

৩১ বছর পর এবার কাঁচা চামড়া রফতানির সুযোগ!

৩১ বছর পর এবার কাঁচা চামড়া রফতানির সুযোগ!

করোনায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে দেশের রফতানি বাণিজ্যের অন্যতম চামড়া শিল্প খাত। তবে কোরবানি পশুর কাঁচা চামড়া নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে ৩১ বছর পর কাঁচা চামড়া রফতানির সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এবার সোয়া কোটি চামড়া আসবে কোরবানির পশু থেকে। চামড়া কিনতে আগ্রহী ভারত ও চীন। কিন্তু করোনাসহ নানা সঙ্কটের কারণে চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এখন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সাভার চামড়া শিল্পনগরীর ১২৫টি ট্যানারি উৎপাদনে গেলেও কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) এখনও পুরোপুরি কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া ট্যানারি মালিকদের ওপর ভরসা রাখতে পারছে না চামড়া খাত দেখভাল ও গবেষণায় নিয়োজিত সরকারী সংস্থাগুলো। এ কারণে এবার কাঁচা চামড়া রফতানির সুযোগ দেয়ার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড এ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। সংস্থাটির মতে, কাঁচা চামড়া নষ্ট হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে ন্যূনতম দাম নির্ধারণ করে রফতানির সুযোগ দেয়া যেতে পারে।

জানা গেছে, ট্যারিফ কমিশনের করা এই প্রতিবেদনটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে কাঁচা চামড়া রফতানির সুযোগ দিতে চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। শীঘ্রই কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণসহ রফতানির বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ওই বৈঠকেই দাম নির্ধারণসহ কাঁচা চামড়া রফতানির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসবে। কাঁচা চামড়া রফতানি হলে সঠিক দাম নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি ঘুরে দাঁড়াবে এ খাত। এছাড়া কোরবানির চামড়া নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বাঁচবে। ট্যানারিগুলোর মধ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া এ খাতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ার সুযোগ তৈরি হতে পারে। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে চামড়া খাত উন্নয়নে গঠিত টাস্ক ফোর্সের দ্বিতীয় সভা সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়াল এই বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী জানিয়েছেন, এবারের কোরবানির চামড়া সংগ্রহে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এক পিস চামড়াও যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে সরকারের নজর থাকবে। তিনি বলেন, সাভারের চামড়া শিল্পনগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার দ্রুত চালুকরণে কাজ করা হচ্ছে। আশা করছি, কোরবানি ঈদের আগে সব সমস্যার সমাধান হবে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ট্যানারিগুলোর পানির দামে চামড়া কেনা এবং একচেটিয়া মুনাফা করার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে কাঁচা চামড়া রফতানির সুযোগ দেয়া উচিত। এতে করে চামড়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে আড়ত মালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরাও লাভবান হতে পারবেন। এতে চামড়া বাণিজ্যে স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েল এক উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, পচে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে হলে কাঁচা চামড়া রফতানির সুযোগ থাকা উচিত। সব দিক বিবেচনায় নিয়ে এবার রফতানির সুযোগ দেয়া হবে। তিনি বলেন, চামড়া শিল্পের কাঁচামাল, বাজার মূল্য আছে। এটি ফ্রি বা পানির দামে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। ট্যানারি মালিকদের মনমানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত বছর ট্যানারি মালিকদের কারসাজি ও ন্যায্য দামে চামড়া বেচাকেনা না হওয়ার কারণে কোটি কোটি টাকার কাঁচা চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। বিদেশে এ খাত নিয়ে নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে। এছাড়া করোনার কারণে দেশের অন্যান্য শিল্পের মতো এ শিল্প খাতে নতুন সঙ্কট তৈরি হয়েছে। যদিও চামড়া খাতের বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-রফতানি বাণিজ্যে তৈরি পোশাকের পরই এ শিল্পের অবস্থান। এর কাঁচামালেও বাংলাদেশ সমৃদ্ধ। চামড়া শিল্প খাতে ৬০ শতাংশ মূল্য সংযোজনের সুযোগ রয়েছে। ২০২১ সাল নাগাদ এ শিল্প খাতে ৪৩ হাজার কোটি টাকার রফতানির লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। বর্তমানে বিশ্ববাজারে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের ২২০ বিলিয়ন ডলারের বাজার থাকলেও বাংলাদেশ এ খাতে মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করে থাকে। কিন্তু এ খাত উন্নয়নে যে রোডম্যাপ দেয়া হয়েছে সেই অনুযায়ী কাজ চলছে। অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে দেশের সবচেয়ে বড় শিল্প খাত হতে পারে চামড়া শিল্প খাত।

এ অবস্থায় কোরবানি সামনে রেখে কাঁচা চামড়া রফতানির বিষয়টি সামনে চলে আসে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ট্যানার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ শাহিন আহমেদ বলেন, কাঁচা চামড়া রফতানির বিষয়টি জটিল। কিন্তু সরকার যদি এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয় বিটিএ’র পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হবে। তিনি বলেন, তবে কাঁচা চামড়া ছয় মাস থেকে এক বছরের জন্য রফতানির সুযোগ দেয়া উচিত। কোরবানি সামনে রেখে এ শিল্পের কোন দায় ট্যানারি মালিকরা নিতে ইচ্ছুক নয়। এছাড়া করোনাসহ নানা কারণে সারাদেশের চামড়া সংগ্রহ ও কেনার মতো পরিস্থিতি ট্যানারি মালিকদের নেই। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সরকারের কাছে কোরবানির চামড়া সংগ্রহ ও মজুদে কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য অনুরোধ করে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু তার একটিও পূরণ হয়নি। অথচ কোরবানির চামড়া কিনতে ৬০০ কোটি টাকার তহবিল প্রয়োজন। ব্যাংকগুলো এ বিষয়ে কোন সহযোগিতা করছে না।

জানা গেছে, দেশের অর্থনীতিতে চামড়া একটি সম্ভাবনাময় খাত। রফতানি বাণিজ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দেশের চামড়া শিল্প খাত। এ শিল্প খাত উন্নয়নে রফতানিতে নগদ সহায়তা, পৃথক শিল্পনগরী গড়ে দেয়া এবং পরিবেশবান্ধব ইটিপি স্থাপনসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। কিন্তু কোরবানির চামড়া পানির দামে কেনার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি ট্যানারি মালিকরা। গত বছর সরকার নির্ধারিত দামে না কেনায় কোটি কোটি টাকার চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। ন্যায্যদাম না পেয়ে অনেক কোরবানিদাতা রাগে-ক্ষোভে চামড়া ডাস্টবিন ও রাস্তায় ফেলে দেন। এমনকি এ পণ্যের হকদার মসজিদ-মাদ্রাসাগুলোও চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ থেকে বিরত ছিল। এছাড়া কৃত্রিম লেদার, রেক্সিন ও প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বাড়ায় বিশ্বজুড়ে চামড়ার বাজার মন্দাবস্থা বিরাজ করছে। যদিও দেশে চামড়া ও চামড়াজাতপণ্যের ব্যবহার কয়েকগুণ বেড়েছে। চামড়ার তৈরি জুতা, স্যান্ডেল, ব্যাগসহ নানা ধরনের পণ্য বিক্রি হচ্ছে উচ্চদামে। দেশে চামড়ার একটি টেকসই বাজার হতে যাচ্ছে।

কোরবানিতে পাওয়া যায় সোয়া কোটি চামড়া ॥ প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মতে, শুধু কোরবানির সময় সারাদেশ ১ কোটি ১০ লাখ থেকে সোয়া কোটি কাঁচা চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৪৫-৫০ লাখ গরুর চামড়া আসে। বাকি ৭৫ থেকে ৮০ লাখ ছাগল, ভেড়া, খাসি ও অন্য পশুর চামড়া। সারা বছরে যত চামড়া আহরিত হয় তার প্রায় অর্ধেক হয়ে থাকে কোরবানির সময়। তবে করোনাসহ নানা কারণে এ বছর কোরবানি কিছুটা কমে যেতে পারে। এই সময়টাতে তাই ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি থাকে অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। ভারত থেকে কয়েক বছর ধরে গরু আমদানি বন্ধ থাকায় দেশে এখন পর্যাপ্ত সংখ্যক গরু ও খাসির খামার গড়ে উঠেছে। এছাড়া গরু মোটা তাজাকরণ করেও অনেকে ভাল ব্যবসা করছেন। এই বাস্তবতায় চামড়ার ন্যায্যদাম নিশ্চিত না হলে গরুর ন্যায্যদামের বিষয়টি নিয়ে সঙ্কট তৈরি হতে পারে। এ কারণে চামড়ার সঠিক দাম কার্যকর হওয়া প্রয়োজন। এ কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চামড়া জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষায় ন্যায্যদাম নিশ্চিত করা হবে। কাঁচা চামড়ার দাম নিয়ে মন্ত্রণালয় সজাগ রয়েছে। সবার স্বার্থ সংরক্ষণ করা হবে। দাম নিয়ে কেউ কারসাজির সুযোগ নিতে পারবে না। তবে অভিযোগ রয়েছে, কোরবানির চামড়া পানির দরে কিনতে এ বছরও কৌশল নির্ধারণে ব্যস্ত কিছু শিল্পের উদ্যোক্তা ও ট্যানারি মালিক। আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে চামড়ার দাম কমানো হয় প্রতি বছর। বিশ্ব বাজারে চামড়াজাতপণ্যের ব্যবহার ও দাম বেড়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশেও চামড়াজাত পণ্যের দাম অনেক বেশি। গরুর চামড়া থেকে প্রস্তুতকৃত একটি বেল্ট কিনতে ভোক্তাকে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। চার থেকে ৫ হাজার টাকার নিচে কোন জুতা বিক্রি হয় না খুচরা বাজারে। অথচ বড় আকারের একটি গরুর কাঁচা চামড়া বিক্রি হয় মাত্র ৫০০-৬০০ টাকায়। এ কারণে কোরবানির চামড়ার বড় সুবিধাভোগী মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলো এখন আর চামড়া নিতে আগ্রহ দেখায় না। ফলে অনেক কোরবানিদাতা ন্যায্যদাম না পেয়ে চামড়া নষ্ট করে ফেলেন। গত বছর দেশে বিপুল পরিমাণ গরু ও ছাগলের চামড়া নষ্ট করা হয়েছে।

বাংলাদেশের ফিনিশড চামড়ার বড় বাজার ইতালি, জার্মান, ফ্রান্সসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশ। চামড়ার ব্যাগ জাতীয় পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার চীন। বেলজিয়াম, হংকং, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, স্পেন ও ইতালিসহ বিভিন্ন দেশে বেশ ভাল পরিমাণে রফতানি হয় ব্যাগজাতীয় পণ্য। আর চামড়ার জুতার সবচেয়ে বড় বাজার জার্মানি। এ ছাড়া কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণে রফতানি হয় বাংলাদেশের চামড়ার জুতা। এমনকি জাপানেও বাংলাদেশী চামড়ার ব্যাগ ও জুতার চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে পাকা চামড়া ও জুতার পাশাপাশি এখন ট্রাভেল ব্যাগ, বেল্ট, ওয়ালেট বা মানিব্যাগ বিদেশে রফতানি হচ্ছে। এছাড়াও চামড়ার তৈরি নানা ফ্যান্সি পণ্যেরও চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশে প্রচুর হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেগুলো এসব পণ্য তৈরি করে বিশ্বের বাজারে পাঠাচ্ছে। তবে গত কয়েক বছর ধরে চামড়া রফতানির প্রবৃদ্ধি ভাল নয়। বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৪০ কোটি ডলারের চামড়া রফতানি হয়েছিল। সেটা চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১১ মাসে নেমেছে ৯ কোটি ডলারে। তবে এই সময়ে ভারত ও চীনে রফতানি বেড়েছে। শুধু তাই নয়, কাঁচা চামড়া আমদানিতে চীন ও ভারতের আগ্রহ রয়েছে। এ খাতের ব্যবসায়ীরা চীন ও ভারতের সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ করতে শুরু করেছেন।

ভারত ও চীনে কাঁচা চামড়া রফতানি হবে ॥ ভারত ও চীন কাঁচা চামড়া রফতানির বড় বাজার। এ দুটি বাজার মাথায় রেখে কাঁচা চামড়া রফতানির বিষয়টি সুপারিশ করেছে ট্যারিফ কমিশন। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- ভারত ও চীনে এ মুহূর্তে কাঁচা চামড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া অন্য দেশের তুলনায় এখানে দামও ভাল। তাই কোরবানির চামড়া রফতানি হবে ভারত ও চীনে। ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, চামড়া দিয়ে যেসব পণ্য তৈরি হতো, সেখানে এখন সিনথেটিক বস্ত্র ও কৃত্রিম চামড়ার ব্যবহার বেড়েছে। এতে বিশ্বব্যাপী চামড়ার দাম কমেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এখন প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৫০ সেন্ট থেকে দেড় মার্কিন ডলার। প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ধরে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম দাঁড়ায় ৪৩ থেকে ১২৯ টাকা। তবে কমিশন এবার চামড়ার দাম কমিয়ে নির্ধারণ করা সুপারিশ করেছে। গত বছর প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার নির্ধারিত দর ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। এবার কমিশন তা ৩০ থেকে ৪০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে। এ ছাড়া ছাগলের চামড়ার দর প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকার জায়গায় ১৫ থেকে ২৫ টাকা নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, চামড়া শিল্পের কাঁচামাল। এটির বাজার মূল্য অনেক। এ কারণে দাম নির্ধারণ করে সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা সৃষ্টি করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, রফতানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চামড়া খাতের ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে অর্থনীতিতে। কিন্তু নানা ধরনের সঙ্কট ও চ্যালেঞ্জের মুখে চামড়া শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে। পরিবেশবান্ধব কারখানায় উৎপাদন করতে না পারায় প্রক্রিয়াজাত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য ভাল বিক্রি হচ্ছে না। পরিবেশ মানদ- বজায় থাকলে এলডব্লিউজি গ্রুপের সার্টিফিকেট মিলবে। ক্রেতাদের আস্থাহীনতার সঙ্কট দূর হবে। আর এই সার্টিফিকেট পেতে হলে কারখানায় অবশ্যই বর্জ্য শোধনাগার থাকতে হবে। কিন্তু এসব শর্ত অনেক ট্যানারি পূরণ করতে পারছে না। এখানেই এখন নজর দেয়া প্রয়োজন।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ