শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১২:১৩, ২৭ অক্টোবর ২০১৯

সস্তায় মিলছে ইলিশ

সস্তায় মিলছে ইলিশ

সারাদেশে মা ইলিশের প্রজনন বাড়ানো ও নিধন রক্ষায় ৯ অক্টোরব থেকে মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এরইমধ্যে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় জেলেদের জেল-জরিমানা করা হয়েছে। তবুও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে শিকার করা হচ্ছে মা ইলিশ। আর নিষেধাজ্ঞার সময় সস্তায় সেই ইলিশ কিনছেন অসাধু ব্যক্তিরা। 

শনিবার সকালে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে পদ্মায় ইলিশ শিকার করে আসা ট্রলার সারিবদ্ধভাবে নোঙর করেছে। প্রতিটি ট্রলারের খন্দ (ট্রলারে মাছ সংরক্ষণ করার বাক্স) থেকে জেলেরা ইলিশ মাছ বের করে ঝুড়িতে তুলে দিচ্ছে। সেই ইলিশ নদীর তীর, ঝোপ, কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রাখা হচ্ছে। 

কয়েকজন জেলে জানান, পুলিশের ভয়ে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত ইলিশ ধরা হয়। এতে কৌশল অবলম্বন করা হয়। ট্রলারে কোনো আলো না জ্বালালে ট্রলার বা নৌকার অবস্থান শনাক্ত করা যায় না। এতে নির্বিঘ্নে মাছ শিকার করা হয়। এরপর ঘাটে এনে সেই মাছ লুকানো হয়। পরে সুযোগ বুঝে মাছের খবর ক্রেতাদের জানানো হয়। তারা বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশায় নিয়ে যায়। 

 

 

এদিকে বাঘা-চারঘাটে প্রায় ২০টি গ্রুপ উপজেলার কালিদাশখালি, চকরাজাপুর, দিয়াড়কাদিরপুর, চৌমাদিয়া, আতারপাড়া, আলাইপুর, কিশোরপুর, মীরগঞ্জ ও চারঘাটের পিরোজপুর, ইউসুফপুর, সাহাপুর, চন্দনশহরসহ মুক্তারপুর এলাকায় মা ইলিশ ধরে বিক্রি করে। 

জেলে আব্দুর রহমান জানান, সংসার পরিচালনাসহ ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ এই ইলিশ ধরার উপর। তাই এ কাজ করতে হচ্ছে। জেলে সাহাবাজ জানান, মাছ সরবরাহ ভালো থাকলে আয়ও ভাল হয়। মাছ না ধরলে পরিবার নিয়ে দুমুঠো খাবার যোগানো কঠিন। 

তারা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়ে মাত্র ২০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। রাওথা গ্রামের বাশার আলী জানান, বাধ্য হয়ে নিষেধাজ্ঞা না মেনে ইলিশ ধরে কম দামে বিক্রি করছেন তিনি। 

মৎস্য ব্যবসায়ী আকতার জানান, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের প্রতি কেজি ইলিশ ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের প্রতি কেজি ইলিশ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা এবং কেজি সাইজের ইলিশ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

ক্রেতা আব্দুস সোবহান জানান, নিষেধাজ্ঞার সময় সস্তায় পদ্মার ইলিশের স্বাদ নিচ্ছে অনেকে। তবে সারা বছর কম দামে ইলিশ খেতে চান সবাই। তাই শক্ত হাতে অসাধু জেলেদের প্রতিরোধের দাবি করেন তিনি।

বাঘা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, হাট-বাজারে কোথাও ইলিশ বিক্রি হয় না। তবে কিছু জেলে চুরি করে ইলিশ ধরে বিক্রি করছে।

তিনি আরো জানান, ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ১২ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ৮৩ হাজার মিটার জাল উদ্ধারের পর পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া ১০৩ কেজি ইলিশ উদ্ধার করা হয়। ছয়টি মোবাইল কোর্টে ১০ জেলের ১১ হাজার টাকা জরিমানা ও সাত জেলের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করা হয়েছে। 

মৎস্য কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, কোনো জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ ধরলে তার কার্ড বাতিল করা হবে । বাঘার ইউএনও শাহিন রেজা বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ক্রেতা ও জেলেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ