বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ || ১৩ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১০:৪২, ৬ জুন ২০২১

সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি বৈঠক আজ

সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি বৈঠক আজ

সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি বিবেচনা নিয়ে প্রত্যাশিত এসএসবির (সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড) বৈঠক বসছে আজ। তবে যোগ্যতা অর্জন সত্ত্বেও তালিকায় স্থান না পাওয়ায় চরম হতাশা ভর করেছে প্রশাসন ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচে।

অপরদিকে একেবারে তীরে এসে তরী মিস করার কষ্টে নিমজ্জিত হয়েছেন সিনিয়র ব্যাচের বেশ কিছুসংখ্যক যুগ্মসচিব। পদোন্নতি বিবেচনার সময়সীমা মাত্র দুসপ্তাহ বাড়লেই তাদের যুক্ত করার সুযোগ থাকত।

সময় প্রমার্জন দিয়ে ১১তম ব্যাচকে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়ার তোড়জোড়কে অভিবাদন জানালেও সিনিয়র ব্যাচের অতিরিক্ত সচিবরা কর্মজীবনের শেষ প্রান্তে এসে আর বিমুখ হতে চান না। তারাও সরকারের নীতিনির্ধারক মহলের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

সূত্র জানায়, আজ দুপুর ২টায় এসএসবির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এজেন্ডা অনুযায়ী সব প্রস্তুতি ঠিকঠাক থাকলে এবারের এসএসবিতে লাইনপোস্টের বাইরে অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি নিয়ে আলোচনা হবে। অতিরিক্ত সচিব পদে নিয়মিত ব্যাচ হিসেবে ১৩তম ব্যাচের অবশিষ্ট অংশের যোগ্য কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করা হবে। যাদের সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়।

তবে বিবেচ্য তালিকায় লেফট-আউটদের ঢাউশ এক তালিকা স্থান পাচ্ছে। যেখানে ১১তম ব্যাচ থেকে তদূর্ধ্ব ব্যাচগুলোর ২ বছর পূর্ণ করা যুগ্মসচিবদের নাম রয়েছে।

অবশ্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিবেচনায় যারা যোগ্য, তাদের নামই এখানে স্থান পেয়েছে। তবে সূত্রগুলো বলছে, তালিকা যত বড়ই হোক না কেন, পদোন্নতির সংখ্যা বড়জোর এক-পঁচিশের মধ্যে আটকা পড়ে যেতে পারে।

এদিকে ১৫তম ব্যাচের অনেকে জানিয়েছেন, যুগ্মসচিব পদে তারা পদোন্নতি পেয়েছেন ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। পদোন্নতি বিধিমালা অনুযায়ী এ পদে ২ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর তারা অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন গেল সেপ্টেম্বরে। এর মধ্যে ৮ মাস পার হয়েছে। ফলে প্রশাসনকে আরও গতিশীল করতে এসএসবিসহ সরকারের নীতিনির্ধারক মহল যে ইতিবাচক নীতি গ্রহণ করেছেন, সেখানে তাদের ব্যাচকে এবার বিবেচনায় নেওয়া খুবই জরুরি ছিল। তাদের সংখ্যা মাত্র ৬৩ জন।

একবার ইতিবাচক মনোভাব দেখালেও পরে মত পালটানো হয়। যে কারণে ১৫তম ব্যাচের বিষয়ে কোনো তথ্য এসএসবির কার্যপত্রে যুক্ত হয়নি। তারা বলেন, এখনো সময় আছে। এসএসবি চাইলে তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। যে যার যোগ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতি পাবেন। কাউকে দিলে অন্যদের অংশে কম পড়বে- এটা এমন কোনো বিষয় নয়। বরং প্রশাসনকে স্বাভাবিক পিরামিডে নেওয়ার জন্য সুপারনিউমারি পদ সৃষ্টি ও সংযুক্তি প্রদানের মাধ্যমে এসএসবি যে নীতিতে এগিয়ে যাচ্ছে সেটি আরও বেগবান হতো।

তারা মনে করেন, এক সময় সিনিয়র ব্যাচের কর্মকর্তারা ২০-২২ বছর পর উপসচিব হয়েছেন। ১৭-১৮ বছরে উপসচিব হওয়ার রেকর্ড তো হরহামেশা রয়েছে। কিন্তু নানা প্রচেষ্টার কারণে ২৭তম ব্যাচকে চাকরির মাত্র ১১ বছরের মাথায় পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এটি এসএসবির সাফল্যের বড় একটি মাইলফলক। কর্মকর্তারা বলেন, ইতিবাচক এ ধারা অব্যাহত রাখলে এক সময় দেখা যাবে আগামী দু-এক বছরের মধ্যে যুগ্ম সচিবসহ তদূর্ধ্ব পর্যায়েও যথাসময়ে পদোন্নতি পাওয়ার রেকর্ড সৃষ্টি হবে।

২০১৯ সালের ১৬ জুন ১৩৭ জন কর্মকর্তাকে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। সে সময় নিয়মিত ব্যাচ হিসাবে ১৭তম ব্যাচকে বিবেচনায় নেওয়া হয়। ওই ব্যাচ থেকে পদোন্নতি পান ৪৬ জন। আদার্স ক্যাডারের ৩৭ জন। বাকিরা ছিলেন লেফট-আউট সিনিয়র ব্যাচের।

এর মধ্যে ৯ম ও ১০ম ব্যাচের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, কেন তারা সচিব হতে পারেননি, সেটা হয়তো একদিন ইতিহাস বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন করবে। তবে শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনে কখনো খারাপ করেননি। চাকরির প্রথমদিকে সহকর্মী ব্যাচমেটদের অনেকে বলতেন, আমাদের সচিব পদ নাকি একেবারে কনফর্ম। কিন্তু নিয়তির কী পরিহাস! উলটো দফায় দফায় পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছি। যুগ্মসচিব হতে হয়েছে ৪ ব্যাচ জুনিয়র ১৭ ব্যাচের সঙ্গে। চাকরির বাকি আছে মাত্র কয়েক মাস। এবার তো ১৩তম ব্যাচের সঙ্গেও অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি হলো না। ৩১ মে পর্যন্ত যারা ফিট তাদের বিবেচ্য তালিকায় নেওয়া হয়েছে। অথচ তারা ফিট হবেন ১৬ জুন। মাত্র দুসপ্তাহের ব্যবধান। বাস্তবে যখন এই পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারি হবে, তখন নিশ্চয় ১৬ জুন পার হয়ে যাবে। ফলে তাদের কষ্টের পাল্লা আরও ভারী হবে। তারাও মনে করেন, এসএসবি চাইলে তাদের বিষয়টি এখনো বিবেচনায় নিতে পারে।

এদিকে চার মাসের প্রমার্জন দিয়ে ১১ ব্যাচকে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়ার উদ্যোগকে অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে তারা বলছেন, জনস্বার্থে এটি যেমন হওয়া দরকার, তেমনি একই বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সিনিয়র ব্যাচের অতিরিক্ত সচিবদেরও একটা বিহিত করা সময়ের দাবি। বিশেষ করে যাদের যোগ্যতা ও মেধা নিয়ে কারও কোনো দ্বিমত নেই, যারা শতভাগ পেশাদার আমলা, তাদের সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে সম্মানিত করার জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন অনেকে।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ