মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪ || ৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১৭:২১, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০

শেখ হাসিনার উক্তি : ‘সামরিকতন্ত্র নয়, গণতন্ত্রেই মুক্তি’

শেখ হাসিনার উক্তি : ‘সামরিকতন্ত্র নয়, গণতন্ত্রেই মুক্তি’

একের পর এক ইতিহাস সৃষ্টি করে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে চলছেন বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। এক সময় মাননীয় শেখ হাসিনাকে ‘জননেত্রী’ বলা হতো, আজকাল এ বিশেষ ‘গণ-উপাধি’ তাঁর নামের সঙ্গে খুব একটা যুক্ত হতে দেখি না। ‘জননেত্রী’ শব্দটি শেখ হাসিনার নামের সঙ্গে যে কেমন অভাবনীয় গৌরবে মিশেছে তা ভাবতে গেলে বিস্মিত হতে হয়।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করে ১৯৯৬ সালে। শাসনভার গ্রহণ করেই তিনি পিতার অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণ করার লৌহ-কঠিন শপথ গ্রহণ করেন। বঙ্গ-ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের পরমস্বপ্ন ছিল ‘শোষিতের গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা। বঙ্গবন্ধুর সেই ‘শোষিতের গণতন্ত্র’ কেবল জনসেবার মাধ্যমেই পূর্ণতা দেওয়া সম্ভব। ‘জননেত্রী’ না হলে ‘জনসেবা’র মানসিকতা সৃষ্টি হয় না।

দলীয় ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকেই জননেত্রী শেখ হাসিনা নিভৃত বাংলার প্রতিটি জনগণের কাছেই কোনো না কোনো সেবা পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সেবার পাশাপাশি জনমনে তিনি উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সৃষ্টি করে, জাতির ভালোবাসায় ধন্য হয়েছেন। ৭ নভেম্বর, ২০২০ তিনি এক সাহসী উক্তি ‘উচ্চারণ’ করেছেন আর্মড ফোর্সেস সিলেকশন বোর্ড মিটিংয়ে। সামরিক বাহিনীর অভিধান থেকে ‘মার্শাল ল’ মুছে দেওয়ার যে সুদৃঢ় অঙ্গীকার তিনি ঘোষণা করেছেন, তা শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়, সমগ্র পৃথিবীর জন্যই এক ঐতিহাসিক ঘোষণা বলে আমার কাছে মনে হয়। সামরিক শাসন যুগে যুগে মানুষ বহুবার দেখেছে। আমরা যদি শুধু বিংশ শতাব্দীর রাজনৈতিক ইতিহাস দেখি তাহলে দেখব এই এক শতকে সত্তরটি দেশে সামরিক শাসন জারি ছিল। সামরিক শাসন পুঁজিবাদী শাসন ব্যবস্থা কায়েমের একটি অন্যতম শর্ত। তাই দেখা যায় পৃথিবীর যেখানেই সামরিক শাসন চালু হয়েছে সেখানেই পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো মদদ দিয়েছে সামরিক শাসন বলবৎ করার জন্য।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যেহেতু দুই দুটি সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করার বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে, তাই তিনি সামরিক শাসনের অন্ধকার দিকগুলো খুব ভালো করেই চেনেন। সামরিক শাসন নানাভাবে এসে সিংহাসন দখল করে বসে। একবার সিংহাসন দখল করে ফেললে সহজে আর তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা সম্ভব হয় না। দাঙ্গা দমন, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা দূরীকরণ, ক্ষমতাসীন সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতা ইত্যাদি অজুহাতে কোনো দেশে সামরিক শাসন জারি করা হয়। একটি দেশে যখন সামরিক শাসন চালু হয়, তখন সংবিধান অবরুদ্ধ থাকে। নাগরিক অধিকার চরমভাবে ক্ষুণ্ণ হয়। জনগণের কাছে সামরিক শাসকের কোনো জবাবদিহিতা থাকে না বলে সামরিক শাসক এক পর্যায়ে স্বৈরাচারে পরিণত হয়। সামরিক শাসক ছিলেন কিন্তু স্বৈরাচার ছিলেন না পৃথিবীতে এমন নজির বিরল। অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনেই, কানাডা, মিশর, ইরান, আয়ারল্যান্ড, ফিলিপাইনস, পোল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তানসহ পৃথিবীর অসংখ্য দেশের সামরিক দুঃশাসনের ইতিহাস পড়লেই একথার সত্যতা প্রমাণিত হয়।

আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশেও ১৯৫৮ ও ১৯৭১ সালে দানবের মূর্তি নিয়ে অন্ধকারে হানা দিয়েছিল সামরিক শাসকেরা। ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সামরিক শাসনের কালো উপাখ্যান পুনরায় রচিত হয়। পঁচাত্তর থেকে নব্বই পর্যন্ত (জেনারেল জিয়া ও জেনারেল এরশাদের সময়) প্রায় দেড় দশক সরাসরি সামরিক শাসনে পিষ্ট হয় বাংলাদেশ। একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে ছদ্মবেশে আরেকবার সামরিক শাসন চালু হওয়ার পাঁয়তারা শুরু হয়। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নির্জন কারাগারে আটকে রেখে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করে তারা। ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান। সামরিক শাসকেরা কিংবা সামরিক শাসকদের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল যখনই ক্ষমতায় গিয়েছে তখনই শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে। এর ফলে ভয়ঙ্কর এক উপলব্ধি হয়েছে তার। নিজের দুর্দশা থেকেই তিনি বুঝেছেন অন্যরাও সামরিক শাসনে কিভাবে নিষ্পেষিত ও নির্যাতিত হন। এ কারণেই তিনি অত্যন্ত আবেগঘন ভাষায় বলেছেন- সামরিক বাহিনীর অভিধান থেকে ‘মার্শাল ল’ মুছে দিতে হবে।

তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট দেশের সামরিক বাহিনীর নাম উল্লেখ না-করায় তাঁর বক্তব্যটি সার্বজনীনতা লাভ করেছে। তিনি যে সত্যিকার অর্থেই ‘বিশ্বনেতা’ তাঁর এ বক্তব্যে সে-বিষয়টি আরেকবার প্রমাণিত হলো। ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোর কথা বাদ দিয়ে আমরা যদি পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র পাকিস্তানের দিকে তাকাই তাহলে দেখব ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের দশ বছরের মাথায় কিভাবে সেই দেশটি সামরিক শাসকদের করতলগত হয়। পাকিস্তানের যা-কিছু দুর্ভোগ তা তো সামরিক শাসনেরই কুফল। পাকিস্তানের সামরিক শাসকগণ পাকিস্তানকে জঙ্গিবাদের সূতিকাগারে পরিণত করেছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন সেটাও কিন্তু সামরিক কুশাসনেরই ফলাফল। সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ভারতীয় উপমহাদেশে পাকিস্তানের চেয়ে ভালো বন্ধ আর নেই। গণতান্ত্রিক দেশে আমেরিকার হীনস্বার্থ চরিতার্থ না হয় বলেই তারা সামরিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে উৎসাহী।

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনের একমাত্র লক্ষ্য সুখী ও সমৃদ্ধিশালী সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা। অনুন্নত বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে দাঁড় করানোই তার স্বপ্ন। এই স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে আজ উন্নয়নের ছোঁয়া লেগে ঝলমল করছে। স্বপ্নের পদ্মাসেতু জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হলে বাংলাদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিপ্লব সাধিত হবে। বিদ্যুতের ঘাটতি কাটিয়ে যেভাবে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে তা অবিশ্বাস্যই বটে। প্রযুক্তি খাতে শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপ বাংলাদেশের চিত্রই পাল্টে দিয়েছে। তিনি প্রথম যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন তখন অনেকেই তাঁর বিরূপ সমালোচনা করেছিলেন। অনেকেই তখন বলেছিলেন ক্ষুধাপীড়িত বাংলাদেশে ‘ডিজিটাল স্লোগান’ বিলাসী চিন্তা ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু আজকের বাংলাদেশের মানুষ বুঝতে পেরেছে, তথ্য-প্রযুক্তিখাতে বাংলাদেশের মানুষ কি অবিশ্বাস্য দক্ষতা অর্জন করে অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের কথা চিন্তা করলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। অবস্থানগত কারণেই বাংলাদেশকে অনেক দেশ সমীহ করতে বাধ্য। পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যদি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তাহলে এদেশ উন্নত হতে সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা নিশ্চয়ই বর্তমান বিশ্বের আগ্রাসী রূপ উপলব্ধি করছেন। আধুনিক বিশ্বে মানুষকে যখন আরো বেশি মানবিক হওয়ার কথা ছিল তখন মানুষ মেতে উঠেছে সামরিক শক্তি প্রদর্শনের বিকৃত প্রতিযোগিতায়। আজ বিশ্বের বিত্তশালী দেশগুলো সামরিক শক্তিকে যেভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দান করছে- এর ফলে জনগণের অর্জিত অর্থের সিংহভাগই সামরিক বাহিনীর ভরণপোষণে ব্যয় হচ্ছে। আবার এই সামরিক বাহিনীই নিজেদের লাগামহীন স্বার্থপরতা চরিতার্থ করতে বন্দুকের নল ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করছে। এর ফলে একটি দেশ রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর কোনো দেশের সামরিক শাসক সেদেশের সম্পদ ও সম্মান বৃদ্ধিতে বিন্দু পরিমাণ ভূমিকা রাখতে পারেনি। বরং তারা রাষ্ট্রীয় অর্জনকে ধূলিসাৎ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় সামরিক শাসকদের আবির্ভাব যেমন বিভীষিকা সৃষ্টি করে, তাদের রক্তাক্ত প্রস্থানও ইতিহাসের বুকে সৃষ্টি করে দুষ্ট ক্ষত। এসব কিছু বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘মার্শাল ল’ মুছে ফেলার যে কথা ব্যক্ত করেছেন আমি মনে করি তাতে বিশ্বনেতৃবৃন্দের সমর্থন দেওয়া উচিত এবং মার্শাল ল’এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিশ্ববাসীর সোচ্চার হওয়া উচিত।আমার সোনালি যৌবনের উত্তাল দিনগুলো বামপ্রগতিশীল রাজনৈতিক ধারায় অতিবাহিত হয়েছে। মানবিক পৃথিবী গড়ার রঙিন স্বপ্ন নিয়ে একদিন আমি রাজনীতিতে নিজেকে সমর্পিত করেছিলাম। আমি তখন বিশ্বাস করতাম সমাজতন্ত্রেই মানুষের সার্বিক মুক্তি নিহিত। আমি এখনো বিশ্বাস করি ‘সমাজতন্ত্রই’ মানুষের জীবনকে সুন্দর ও নিরাপদ করতে পারে। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববাসী মনেপ্রাণে সমাজতন্ত্রকে গ্রহণ না করছে ততদিন গণতন্ত্রের বিকল্প নেই। আধুনিক পৃথিবীতে গণতন্ত্রই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় শাসন পদ্ধতি। গণতান্ত্রিক ধারায় বর্তমান বিশ্বে যেসব দেশ এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের আইনসম্মতভাবে মোকাবিলা করে, বিরোধী দলের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকার যেভাবে উজান ঠেলে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে এদেশের মানুষের মনে নতুন আশা জাগ্রত হয়েছে।দেশি-বিদেশি শত্রুরা তাঁকে হত্যা করার জন্য অসংখ্যবার ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে প্রতিবারই তিনি মৃত্যুকে পরাজিত করে বীরের বেশে ফিরে এসেছেন। যতই দিন যাচ্ছে ততই তিনি চমক সৃষ্টি করে শুধু বাংলাদেশের জনগণকেই নয়, বিশ্ববাসীকে অবাক করে দিয়েছেন।

পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশকে একাই টেনে তুলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে এশিয়া মহাদেশে তো বটেই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তিনি বিভিন্ন ইস্যুতে ভূমিকা রাখছেন। ইতোমধ্যে তাঁর জলবায়ু বিষয়ক প্রস্তাবসমূহ বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্কট-সমাধান, করোনাভাইরাস জনিত মহামারি ও দীর্ঘস্থায়ী বন্যা মোকাবিলাসহ প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী করার যে দৃঢ়তা তিনি দেখিয়েছেন তা অতুলনীয়।আর কয়েকদিন পরেই বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে শেখ হাসিনার জন্মদিন এবার ভিন্নভাবে উদ্যাপনের দাবি রাখে। কারোনাকালীন বদ্ধ জীবনে জানি না তেমন কোনো বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান হবে কিনাÑ তবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করে তাঁকে সম্মান জানানো যেতেই পারে। মাননীয় শেখ হাসিনা নিজ কর্মগুণে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হওয়ার যোগ্যতা অনেক আগেই অর্জন করেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি কিংবা রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি যে দুঃসাহসী ভূমিকা রেখেছেন এই দুই কারণেই তিনি মানুষের মণিকোঠায় আসন করে নিয়েছেন। মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জাতির পিতা হত্যার বিচার ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার ও রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার যে মানসিকতা তিনি প্রদর্শন করেছেন তাও অতুলনীয়। একুশে আগস্ট নৃশংস গ্রেনেড হামলার রায় প্রকাশিত হওয়ার পর দেশের সবগুলো দৈনিক পত্রিকাই সম্পাদকীয় কলামে এই ঘৃণ্য হামলার বিরুদ্ধে জোরালো বক্তব্য উপস্থাপন করে।

প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদকীয়তে বলা হয় ‘আদালতের রায়ে যে ১৯ ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড ও ১৯ ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ হয়েছে, তাঁদের মধ্যে তৎকালীন সরকারের একজন মন্ত্রী, একজন প্রতিমন্ত্রী, একজন উপমন্ত্রী, খোদ প্রধানমন্ত্রীর পুত্র, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালক, ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক প্রমুখ রয়েছেন। এতে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় তৎকালীন (বিএনপি-জামায়াত জোট) সরকারের একটি অংশ শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের হত্যা করার উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রযন্ত্রের কিছু সংস্থাকে ব্যবহার করেছিল।’ এ কথা সত্যি যে শেখ হাসিনার কোনো ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া নেই, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আমাদেরই উচিত তাঁকে অতুলগৌরবে বিভূষিত করা। এতে শুধু তিনিই সম্মানিত হবেন না, বিশ্ব পরিমণ্ডলে আমাদেরও আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়