শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ || ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৫ এপ্রিল ২০২০

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমছে প্রতিদিনের ছয় অভ্যাসেই

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমছে প্রতিদিনের ছয় অভ্যাসেই

এই মৌসুমে ঠাণ্ডা-জ্বরে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন! আবার প্রতিদিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। ঘাতক করোনাভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলেও যেহেতু সাধারণ ঠাণ্ডা, জ্বর বা কাশির লক্ষণ প্রকাশ পায় এজন্য সবাই বর্তমানে আতঙ্কিত!

বেশ কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে, যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত তারা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলেও বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন না। এমনই তথ্য ও প্রমাণ মিলেছে যারা এই রোগে আক্রান্ত হয়েও পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। চিকিৎসকদের মতে, যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো ছিল। 

তবে আপনি জানেন কি? যতই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খান না কেন তবুও উপকারে আসবে না! কারণ প্রতিদিনের ছয়টি বদঅভ্যাসের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এতে করে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে। এবার তবে জেনে নিন বদঅভ্যাসগুলো সম্পর্কে-  

নিজের জন্য সময় নেই!

মানসিক চাপের কারণে শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাধাপ্রাপ্ত হয়। ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস প্রসিডিংস-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে আসে, দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপের শিকার ব্যক্তিরা ভাইরাসের সংস্পর্শে আসলে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে।

এর কারণ হলো, আপনি যখন মানসিকভাবে চাপে থাকবেন তখন শরীর থেকে কর্টিসোল এবং অ্যাড্রেনালিন হরমোনগুলো বেশি পরিমাণে বের হয়ে থাকে। এতে করে শরীরের ফাগোসাইট এবং লিম্ফোসাইটের (সাদা রক্তের কোষ) পরিমাণ হ্রাস পেতে থাকে। সাদা রক্তের ​​কোষগুলো কমতে শুরু করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। কারণ এই কোষগুলো ইমিউন সিস্টেমের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত থাকে। এই কোষগুলো হ্রাস পাওয়ায় শরীরে বিভিন্ন ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া সহজেই সংক্রমণ ঘটাতে পারে। 

ক্লিনিকাল সাইকোলজিকেল সায়েন্সে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা বলছে, মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে প্রথমে নিজেকে ভালোবাসতে হবে। এজন্য নিজের জন্য সময় বের করতে হবে। যারা মানসিকভাবে সুস্থ তাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও উন্নত থাকে। নিজের প্রতি ভালোবাসা বাড়ানোর তিনটি সহজ উপায় হলো- ধ্যান করা, নিজেকে নিজেই ধন্যবাদ দেয়া এবং যে কাজগুলো করতে ভালো লাগে সেগুলো করা। 

বাইরের খাবার ছাড়া চলেই না!

প্যাকেটজাত খাবারের প্রতি ছোট বড় সবারই লোভ রয়েছে। বর্তমানে এ ধরনের খাবারের প্রতি সবারই আকর্ষণ বাড়ছে। কারণ সময়ের অভাব! কর্মব্যস্ত জীবনে সবাই চায় সহজ উপায়ে পেট ভরিয়ে রাখতে! এতে করে সময়ও বাঁচে আর মজার খাবারো খাওয়া যায়। তবে অনেকেরই ধারণা নেই যে, অতিরিক্ত প্যাকেটজাত খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে পারে।

কর্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ বিভিন্ন প্যাকেটজাত খাবারে থাকা অতিরিক্ত চিনি এবং লবণ ইমিউন সিস্টেমকে বাধাপ্রাপ্ত করে। প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলোর কারণে অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়াগুলো ধ্বংস হয়ে খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলো জায়গা করে নেয়। শুধু প্যাকেটজাত খাবার নয় বরং কোমল পানীয় পানের ফলেও এমনটি হয়ে থাকে।

সম্প্রতি সায়েন্স ট্রান্সলেশনাল মেডিসিনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, উচ্চ মাত্রায় লবণযুক্ত খাবার খেলে দেহে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়াসমূহ (যেগুলো খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করে শরীরকে বাঁচায়) মরে যায়।

পর্যাপ্ত ঘুম হয় না!

প্রতিদিন যদি আপনার ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম না হয় তবে তার প্রভাব গিয়ে পড়বে ইমিউন সিস্টেমের উপর। আপনি জানেন কি? ঘুমানোর পর শরীরের সাইটোকাইন (ছোট প্রোটিন যা শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ এবং প্রদাহ থেকে রক্ষা করে) ভালোভাবে কাজ করতে পারে। তাই আপনি যদি না ঘুমান তবে শরীর পর্যাপ্ত সাইটোকাইন তৈরি করতে পারে না। 

এতে করে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যায়। যদি ঘুম না আসে তবুও দিনে আট থেকে দশ ঘণ্টা শুয়ে থাকুন। বিছানার আশেপাশে ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য রাখবেন না। এতে করে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। 

মদ্যপানের বদঅভ্যাস

নিয়মিত মদ্যপান আপনার প্রতিরোধ ব্যবস্থার সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। মদ্যপানের কারণে অন্ত্রে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়াগুলো নষ্ট হয়ে জীবাণু বাসা বাধে। আর খারাপ ব্যাকটেরিয়া শরীরে বাসা বাধলেই লিভার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। 

ধূমপান ক্যান্সারের কারণ

তামাক সেবনের কারণে শ্বাসনালিতে অত্যাধিক শ্লেষ্মা তৈরি হয়। এতে করে  আপনার শ্বাসনালি সঙ্কুচিত হয়ে আসে। ফলে ফুসফুসে বিষাক্ত পদার্থগুলোর আস্তরণ পড়ে জমাট বেধে যায়।

সিগারেটে থাকা তামাক আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এতে করে বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীর লড়াই করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। শুধু এটিই নয়, ধূমপান করলে রক্তে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও হ্রাস পায়। এজন্য ধূমপানকে ‘না’ বলুন।

নিয়মিত শরীরচর্চা না করা

সুস্থ থাকতে শরীরচর্চার বিকল্প নেই। ফ্রন্টিয়ার্স অব ইমিউনোলজিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিয়মিত শরীরচর্চা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরচর্চার কারণে অ্যান্টিবডি এবং সাদা রক্তের ​​কোষ উভয়ই বৃদ্ধি পায়। যা শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। নিয়মিত হাঁটা ও শারীরিক কসরতের ফলে শরীরের ক্ষতিকারক স্ট্রেস হরমোনগুলো ধ্বংস হয়। 

এছাড়াও অনুশীলনের ফলে শরীরের কর্টিসল এবং অ্যাড্রেনালিন কম নিঃসৃত হয়। এতে করে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ও ভাইরাল অসুস্থতা থেকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন। রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্য মতে, এক সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট সাধারণ ও ৭৫ মিনিট ভারী শরীরচর্চা করা প্রয়োজন। 

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ

শিরোনাম

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপনদেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীরঈদে বেড়েছে রেমিট্যান্স, ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রিজার্ভ১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতেনেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিতআয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দনজুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেইগোবিন্দগঞ্জে কাজী রাশিদা শিশু পার্কের উদ্বোধনইউরোপের চার দেশে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু