রমজানে সুস্থ্য থাকতে যেমন খাদ্যাভ্যাস প্রয়োজন
রোজার সময় সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে অনেকে ক্লান্তিতে ভোগেন। এছাড়া না বুঝে যা খুশি খেয়ে অনেকে পেটের অসুখে ভোগেন। এছাড়াও সঠিক খাদ্য না গ্রহণ করার ফলে অনেকেই রোজা রাখতে গিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। তাছাড়া এর মধ্যে তাপমাত্রা তো বেড়েই চলছে। তাই রোজা চলাকালীন সুস্থ্য থাকতে খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া প্রয়োজন তা জেনে নিন-
সেহরির খাদ্যাভ্যাস:
সেহরির খাবার গ্রহণ করার একটি স্বাস্থ্যগত দিক রয়েছে। কারণ সেহরিতে খাবার না খেলে দুর্বল হয়ে পড়বেন। এতে ক্যালরির ঘাটতি দেখা দেবে। তাছাড়া সেহরি না করলে গ্লুকোজ ক্ষয় বেশি হয় বলে ক্লান্তি আসে।
রোজায় দীর্ঘ সময় উপবাস থাকতে হয় বলে সেহরিতে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট বা জটিল শর্করা গ্রহণ করা উচিত। এই জটিল শর্করা ধীরগতিতে হজম হয়। ফলে দিনের বেলায় ক্ষুধা কম অনুভূত হয়।
সেহরিতে ভাতই খেতে হবে এমন কোনো কথা নেই। রুচি অনুযায়ী রুটি, পরোটা, দুধ, সেমাই ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। তবে এ সময় মাংস ও ডিম খাওয়া সুবিধাজনক। এছাড়াও এই সময়টাতে ঘন ডাল খাওয়া যেতে পারে।
ছোট-বড় যে কারো জন্যই এক কাপ দুধ খাবারে প্রোটিন বা আমিষের ঘাটতি পূরণ করতে পারে। যা শরীরে বাড়তি শক্তির যোগান দিবে। সেহরির পর অনেকেই চা পান করে থাকেন। কিন্তু সেহরির পর চা পান থেকে বিরত থাকা উচিত। গবেষকরা বলেছেন, চায়ের মধ্যে রয়েছে ক্যাফেইন যা প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে শরীরে খনিজ লবণ ও পানিস্বল্পতা দেখা দিয়ে থাকে।
ইফতারের খাদ্যাভ্যাস:
রোজায় ভাজা-পোড়া খাবার প্রায় সবারই প্রিয় কিন্তু এই ভাজা-পোড়া জাতীয় ইফতারি গ্রহণের ফলেই অনেক রোজাদার শারীরিক অস্বস্তিতে ভোগেন। ভাজা-পোড়া খাবার, অতি মসলাযুক্ত খাবার এবং অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার গ্রহণের কারণে অনেকেই রোজা রেখে অবশেষে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এছাড়াও ইফতারে হঠাৎ করে একসাথে এসব খাবার গ্রহণের ফলে বদহজম, বুকজ্বালা এবং ওজন বৃদ্ধির সমস্যা দেখা দেয়।
যেসব খাবার হজমে কম সময় নেয় এ ধরনের খাবার ইফতারে গ্রহণ করা উচিত। পরিশোধিত শর্করা দ্রুত হজম হয়ে যায় এবং রক্তে দ্রুত গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে।
ইফতারে খেতে হবে শরবত বা ডাবের পানি, কাঁচা ছোলা, কম তেলে ভাজা ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি অথবা আলুর চপ কিংবা মুড়ি অথবা চিড়া এবং ফল।
ইফতারির ছোলার সঙ্গে আদা কুচি, লবণ ও পুদিনা পাতা কুচি দিয়ে খাওয়া যায়। এটা হজমে যেমন সহায়ক, তেমনি ভিটামিন ও খনিজ লবণের ঘাটতি এতে দূর হবে।
ইফতারে খেজুর হতে পারে একটি অন্যতম খাবার। খেজুর হচ্ছে চিনি, তন্তু বা ফাইবার, শর্করা, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়ামের উৎস। ইফতারে দু-তিনটা খেজুরই শরীরকে দ্রুত চাঙ্গা করে দিতে সক্ষম। ইফতারে পুষ্টিকর স্যুপ খেতে পারেন। এটি এনার্জি ফিরিয়ে আনবে।
এছাড়াও সেহেরি ও ইফতার মেন্যুতে প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফল রাখুন। এগুলোতে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, ক্যালসিয়াম ও ফাইবার যা সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। ইফতারের পর ঘুমানোর আগ পর্যন্ত শরীরে সারা দিনের পানিস্বল্পতা এবং শরীরকে দূষণমুক্ত করার জন্য প্রচুর পরিমাণ পানি পান করুন।
দৈনিক গাইবান্ধা