শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১৮:২০, ৮ এপ্রিল ২০২১

মনোবল ও সাহস বাড়াতে নিয়মিত মেডিটেশন করুন

মনোবল ও সাহস বাড়াতে নিয়মিত মেডিটেশন করুন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারো বেড়ে চলছে। রেকর্ড পরিমাণ রোগী সনাক্তের পাশাপাশি মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে অনেকেরই নাম। এমন পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা বজায় রাখার বিকল্প নেই। দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার লকডাউন দিয়েছে। একমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধিই পারে করোনাকে রুখতে।  

বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যক্তিগত সচেতনতার পাশাপাশি করোনা প্রতিরোধের প্রথম ধাপ হলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। এর ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের যে মারাত্মক লক্ষণ অর্থাৎ শ্বাসযন্ত্র এবং পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমণ, সেগুলো সহজে প্রতিরোধ করা সম্ভব। সেই সঙ্গে এসময় মনোবল ও সাহস বৃদ্ধিরও প্রয়োজন রয়েছে।

ডা. আয়শা হান্না একজন সহযোগী অধ্যাপক। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে কর্মরত আছেন তিনি। করোনা লক্ষণ আছে অথবা নেই এমন সব রোগীকেই তিনি পরামর্শ দিয়েছেন নিয়মিত মেডিটেশন করার, যোগ ব্যায়াম করার। কারণ তিনি নিজে মেডিটেশন চর্চা করেন এবং এ সংক্রান্ত পড়াশুনা ও বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে নিশ্চিতভাবে জানেন যে, মেডিটেশন চর্চা করলে রোগীর মনোবল ও সাহস আশাবাদ বেড়ে যায়। দূর হয় আতঙ্ক। ফলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এসব কিছু বিবেচনা করে ডা. আয়শা হান্নার মত অনেক চিকিৎসকই এখন আতঙ্কমুক্তির জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন মেডিটেশন করার।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনা আতঙ্কিত করে রেখেছে মানুষকে। এর ফলে মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি হয়েছে। এ ক্ষতির হাত থেকে বাঁচার জন্য এবং করোনাতঙ্ককে জয় করার জন্য চিকিৎসকরা এখন পরামর্শ দিচ্ছেন মেডিটেশন বা ধ্যান চর্চা করার জন্য। মেডিটেশন আসলে এক ধরনের ব্যায়াম। মনের ব্যায়াম। পাশাপাশি যোগ ব্যায়াম অর্থাৎ শরীরের ব্যায়াম তো আছেই।

সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও মানুষের মাঝে গত এক বছর ধরে মানসিক স্বাস্থের বিষয়ে অনেক বেশি সচেতনতা তৈরি হয়েছে। মানুষ বুঝতে শুরু করেছে নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে না পারলে ভাইরাস থেকে নিস্তার নেই। আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়লে কোটি কোটি ভাইরাস আশে পাশে দিয়ে ঘোরাঘুরি করলেও কিছু করতে পারবে না।

মেডিটেশনের দিকে আগ্রহী হওয়ার সেটাই প্রধান কারণ। কেননা, মেডিটেশন করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যে বাড়ে তা এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণাতেই প্রমাণিত। পাশাপাশি, মেডিটেশনের ফলে এড্রিনালিন হরমোনের প্রবাহ কমে। এই হরমোন দেহ-মনে ভয় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। অর্থাৎ মেডিটেশন করলে অবধারিতভাবেই আতঙ্ক কমে যায়। আতঙ্ক কমে গেলে সুস্থতার সামর্থ্যও বেড়ে যায়।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ম্যানেজার দেবাশীষ চক্রবর্তী। করোনা এবং করোনাতঙ্ককে কীভাবে মোকাবেলা করেছেন তিনি তা বললেন খুব দৃঢ়তার সাথে– ‘মানুষ যখন ভয় পায় তখন তার ইমিউন সিস্টেম কিন্তু ভালোভাবে কাজ করে না। ফলে যেকোনো ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরকে ক্ষতিগ্রস্থ করে ফেলে। তাই আমাদের শরীর আর রোগ প্রতিরোধ করতে পারে না। নিয়মিত মেডিটেশন ও যোগব্যায়াম করায় এই ভয়কে আর ভয় মনে করছি না। বুঝতে পারছি যে, বনের বাঘে খায় না; মনের বাঘে খায়। ভয় পেলে অসুস্থতা আসবে এবং আমরা অসুস্থ হয়ে যাব’।

দেবাশীষ চক্রবর্তীর মত সচেতন অনেক মানুষ তাই খুঁজে নিয়েছেন বিকল্প কিন্তু কার্যকর সমাধান। মেডিটেশন হল সেই কার্যকর সমাধান, সেই মোক্ষম দাওয়াই।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ