বৈঠকের আদব
আমরা প্রতিনিয়ত নানা বৈঠক, ঘরোয়া আয়োজন, ওয়াজ মাহফিল কিংবা জ্ঞানের মজলিসে অংশগ্রহণ করে থাকি। সমাজ জীবনে এর প্রয়োজনও অনেক। বৈঠক মানেই অনেক মানুষের জমায়েত, ছোট-বড় নবীন-প্রবীণের আসর। কোথাও থাকে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। তাই বৈঠকের সৌন্দর্য ও ভদ্রতা বজায় রাখার জন্য কিছু আদব রক্ষা করা প্রয়োজন।
নিচে বৈঠকের কিছু আদব তুলে ধরা হলো-
(১) আল্লাহর জিকির, প্রশংসা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর দরুদ, তাওবা-ইস্তিগফার ইত্যাদির মধ্যমে বৈঠককে সমৃদ্ধ করা।
(২) কোনো ব্যক্তিকে তার স্থান থেকে উঠিয়ে সেখানে বসা নিষেধ। বৈঠকে হাজির হওয়ার পরে যেখানে জায়গা পাওয়া যায় সেখানে বসে যাবে। অন্যদের ডিঙিয়ে সবাইকে ঠেলে সামনে গিয়ে বসা দৃষ্টিকটু কাজ। এটা উচিত নয়। তবে কাউকে যদি লোকজন স্বেচ্ছায় সামনে যাওয়ার জন্য জায়গা করে দেয় তাতে অসুবিধা নেই।
৩) কোনো ব্যক্তি তার স্থান থেকে উঠে যাওয়ার পর পুনরায় ফিরে আসলে সেই উক্ত স্থানের হকদার।
(৪) বৈঠকে হাজির হওয়ার সময় ও বৈঠক থেকে উঠে যাওয়ার সময় সালাম প্রদান করা।
(৫) বৈঠকে আগন্তুক ব্যক্তিকে বসার সুযোগ করে দেয়া।
(৬) পরে আসলে বৈঠকের শেষ প্রান্তে বসা।
(৭) দু’জন মানুষের মাঝখানে তাদের অনুমতি ছাড়া না বসা।
(৮) রোদ ও ছায়ার মাঝামাঝি না বসা।
(৯) রাস্তায় বৈঠক না করা।
(১০) বৈঠকের গোপনীয়তা প্রকাশ না করা।
(১১) বৈঠকে এমন বিষয় আলোচনা না করা যা আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে।
(১২) কোনো মানুষের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে হাসি-ঠাট্টা বা মানহানীকর বিষয় আলোচনা থেকে বিরত থাকা।
(১৩) বৈঠক শেষ হলে বৈঠক শেষের দুয়া পাঠ করা।
বৈঠক শেষে দোয়া করা:
দোয়া পড়ার মধ্য দিয়ে বৈঠক শেষ করা জরুরি।
দোয়া: ‘সুবহা-নাকাল্লা-হুম্মা ওয়া বিহামদিকা, আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লা আনতা, আস্তাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইকা।’
অর্থ: ‘মহা পবিত্র তুমি হে আল্লাহ! তোমার প্রশংসার সঙ্গে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। আমি তোমার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তোমার দিকেই ফিরে যাচ্ছি (বা তওবা করছি)।’
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘বৈঠক ভঙ্গের পূর্বে এই দোয়া পাঠ করলে বৈঠক চলাকালীন তার ভালো কথাগুলো তার জন্য কেয়ামত পর্যন্ত মোহরাংকিত থাকবে এবং অযথা বাক্যসমূহের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে এবং এই দোয়া উক্ত গুনাহ সমূহের কাফফারা হবে।’ (তিরমিজি; মিশকাত: হাদিস: ২৪৩৩)।
দৈনিক গাইবান্ধা