শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ১০:৩৪, ৪ মে ২০২১

বাজেটে সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধির দাবি সংসদ সদস্যবৃন্দের

বাজেটে সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধির দাবি সংসদ সদস্যবৃন্দের

কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় বাড়তি রাজস্ব আয় অর্জন এবং তামাক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি দেশের তরুণ নারী-পুরুষদের তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত করতে, আসন্ন বাজেটে সিগারেটের স্তরভিত্তিক করকাঠামো বাতিল করে ও সকল স্তরের সিগারেটে সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে মূল্য বৃদ্ধির দাবি তুলে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সংসদ সদস্যবৃন্দরা।

মঙ্গলবার (০৪ মে) ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’ – এর আয়োজনে ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ‘আসন্ন জাতীয় বাজেটে তামাকপণ্যে করারোপ: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব আলোচনা উঠে আসে।

ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত এমপির সভাপতিত্বে এই ভার্চুয়াল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আফম রুহুল হক, এমপি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনার মাধ্যমে আসন্ন বাজেটে তামাকের ওপর সুনির্দিষ্ট কর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুটি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো, সকল স্তরের সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি করা, বিশেষ করে নিম্নস্তরের সিগারেটের মূল্য কার্যকরভাবে বাড়ানো হবে এবং সমন্বয় করে সবগুলোর খুচরা মূল্য বৃদ্ধি করা এবং ৫ বছর মেয়াদি কার্যকরী তামাক কর নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে তামাকের ব্যবহার হ্রাস ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা।

এগুলো বাস্তবায়িত হলে সরকার অতিরিক্ত ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে পারবে। প্রায় ৮ লাখ তরুণকে নতুন করে ধূমপায়ী হওয়া থেকে বিরত রাখা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে প্রধান অতিথি ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, আপনারা অর্থমন্ত্রীকে ডিও লেটার দিয়েছেন। শুধু এতেই কাজ হবে না। অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্ট্যান্ডিং কমিটি এবং ফোরামের সবাই যদি যৌথভাবে অর্থমন্ত্রীকে বুঝাতে পারেন, তাহলে ভালো হয়। তিনি এড়িয়ে যেতে পারেন, কিন্তু এড়িয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। তাকে বলতে হবে, প্রধানমন্ত্রীর কমিটমেন্টকে আপনি সমর্থন করেন কিনা। আপনারা অর্থমন্ত্রীর সাথে কথা বলুন। তাহলে আপনারা সফল হবেন। তামাকের ওপর আপনাদের সুনির্দিষ্ট করারোপের এই উদ্যোগ সফল হোক।

অধ্যাপক ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক বলেন, আমরা অনেকদিন ধরেই তামাকের বিরুদ্ধে কাজ করছি। বাংলাদেশের অনেক সংস্থা তামাকের বিরুদ্ধে কাজ করছে। যারা তামাক উৎপাদন ও ব্যবসার সাথে জড়িত, তারা শক্তিশালী গোষ্ঠী। তাদের বিরুদ্ধে কাজ করতে গেলে আমাদের বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতে হবে। বাজেটে তামাকের ওপর কর বৃদ্ধি করলে এর ব্যবহার কিছুটা কমবে।

আসন্ন বাজেটে তামাকের কর বৃদ্ধির বিষয়ে সংসদ সদস্যদের সাথে একমত হয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, আমরা প্রতি বছর মূল্য বৃদ্ধি করে তামাক নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু এটি কতটা কার্যকর হচ্ছে, তা নিয়ে জরিপ করা দরকার। ট্যারিফ ও ট্যক্স বৃদ্ধির মধ্যে কতটা সুফল আমরা পাচ্ছি, তার কোন জরিপ আমরা এখনও করতে পারিনি। আপনারা যারা তামাক নিয়ে কাজ করেন তারা এই মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে কতটা ফল আসছে, সে বিষয়ে গবেষণা করতে পারেন। এগুলো তামাকের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আরও কাজ করতে উৎসাহিত করবে।

অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত এমপি বলেন, আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’- নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করছে। তারই অংশ হিসেবে বাজেটে তামাকের কর কাঠামো শক্তিশালী ও কর বৃদ্ধির সুপারিশ জানিয়ে ৫২ জন সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রীর নিকট চিঠি দিয়েছেন।

সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য বক্তারা তামাকের বিরুদ্ধে একসাথে কাজ করার ব্যাপারে একমত হন। সংসদ অধিবেশনে তামাকের ওপর কর বৃদ্ধির প্রস্তাবনার পাশাপাশি তামাকের ওপর কর বাড়িয়ে অতিরিক্ত রাজস্ব আয়ের পথ তৈরি করা, কর ফাঁকির বিরুদ্ধে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা, বিদ্যমান তামাকের কর ব্যবস্থাকে আরও সহজ করা, এনবিআরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণে আরও কাজ করার কথা বলেন।

পার্লামেন্টারি ফোরাম আয়োজিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক এমপি; মো. আব্দুস শহীদ এমপি; আ.স.ম ফিরোজ এমপি; বেগম মেহের আফরোজ চুমকি এমপি; মো. শহীদুজ্জামান সরকার এমপি; শিরীন আখতার এমপি; কাজী নাবিল আহমেদ এমপি; ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি; রানা মো. সোহেল এমপি; আরমা দত্ত এমপি; শবনম জাহান এমপি; নাহিদ ইজাহার খান এমপি; অ্যাড. সৈয়দা রুবিনা আকতার এমপি; অ্যাড. আদিবা আনজুম মিতা এমপি।

উপস্থিত ছিলেন জাতীয় তামাক-বিরোধী সেল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে), তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা, ভয়েস, উন্নয়ন সমন্বয়সহ আরও অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ

শিরোনাম

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপনদেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীরঈদে বেড়েছে রেমিট্যান্স, ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রিজার্ভ১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতেনেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিতআয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দনজুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেইগোবিন্দগঞ্জে কাজী রাশিদা শিশু পার্কের উদ্বোধনইউরোপের চার দেশে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু