শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১৫ জানুয়ারি ২০২০

পুরান ঢাকার আকাশ : লাখো ফানুসের দখলে

পুরান ঢাকার আকাশ : লাখো ফানুসের দখলে

পুরান ঢাকাবাসীর প্রাণের উৎসব ‘সাকরাইন’ শুরু আজ থেকে। দিনভর ঘুড়ি ওড়ানোর পর সন্ধ্যায় আতশবাজি, আগুন খেলা ও ফানুশ নিয়ে মেতে উঠেছে সবাই। কোনো ভবনের ছাদে দাঁড়ালে মনে হবে, লাখো ফানুসের দখলে পুরো আকাশ।

পঞ্জিকা মতে, বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিন উদযাপন করা হয় পৌষসংক্রান্তি। তবে গত কয়েক বছর ধরে দু’দিন ধরে চলে সাইরাইনের আয়োজন। দুই দিনের এ উৎসবটি পুরান ঢাকাবাসী দুই অংশে বিভক্ত হয়ে উদযাপন করে।

সকালে ঢাকায় ঘন কুয়াশা থাকায় দুপুরের পর থেকে শুরু হয় এ উৎসব। সন্ধ্যা পর্যন্ত আকাশ জুড়ে উড়েছে নানান রঙের শত শত ঘুড়ি। ছাদে ছাদে সব বয়সীদের ভিড়। শিশু-কিশোররা ব্যস্ত ছিলেন ঘুড়ি নিয়ে। যুবক-বৃদ্ধারাও বসে ছিলেন না, একদিনের জন্য তারাও ফিরে গেছেন কৈশোরে। এ যেন আকাশ দখলের উৎসব!

বিকেল ঘনিয়ে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে চারপাশের পুরো চিত্রটাই বদলে গেল! যারা এতক্ষণ ঘুড়ি নিয়ে কাটাকাটিতে ব্যস্ত ছিল, তারা খেলছে আগুন খেলা। মুখে কেরোসিন নিয়ে আগুন ছুড়ে মারছে আকাশের দিকে। প্রতি সাকরাইনে মুখে কেরাসিন নিয়ে আগুন ফুঁ দেন তন্ময়। এই খেলায় কখনো দুর্ঘটনা ঘটেছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগুন নিয়ে খেলা করার সময় পুরান ঢাকায় এখনো কোনো দুর্ঘটনার খবর জানি না। তবে ছাদে ঘুড়ি উড়ানোর সময় অনেকেই ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

 

সাকরাইনের ইতিহাস অনেক পুরনো। একসময় শুধু ঘুড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল এই উৎসব। এরপর যোগ হলো ফানুস ও আতশবাজী। গত কয়েকবছর ধরে একই সঙ্গে চলে গভীর রাত পর্যন্ত গান বাজনার আয়োজন। অনেকে এ নিয়ে বিরক্ত। 

 

পুরান ঢাকার বাসিন্দা আকমল সিকদার বলেন, ঘুড়ি উৎসবটি শুরু হয়েছে ব্রিটিশ আমলে। তখন উৎসবটি সনাতন ধর্মের মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, আর এখন আমরা সবাই পালন করি। কিন্তু এরমধ্যে যে পশ্চিমা সংস্কৃতি ঢুকে পড়েছে, তা নিয়ে আমরা হতাশ।

সাকরাইনে পুরান ঢাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে জামাইদের নাটাই, বাহারি ঘুড়ি উপহার দেয়া এবং পিঠার ডালা পাঠানো একটি অবশ্য পালনীয় অঙ্গ। ডালা হিসেবে আসা ঘুড়ি, পিঠা আর অন্যান্য খাবার বিলি করা হয় আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়ার লোকদের মধ্যে।

প্রাচীনকাল থেকেই পৌষকে বিদায় জানাতে মাঘ মাসের প্রথমদিন পুরান ঢাকাইয়ারা আয়োজন করে সাকরাইন উৎসব। সাকরাইন উৎসব আজ পুরান ঢাকার বর্ণিল ঐতিহ্যের অংশ হয়ে গেছে। 

পুরান ঢাকার লক্ষীবাজার, জুরাইন, সূত্রাপুর, ওয়ারী, বংশাল, বাবু বাজার, মিলব্যারাক, হাজারীবাগ, সদরঘাট, নবাবপুর, লালবাগ, চকবাজার এলাকায় আজ চলছে এ উৎসব। বুধবার তাঁতীবাজার, শাঁখারি বাজার, পাটুয়াটুলি, রায় সাহেব বাজার, নয়াবাজার, আরমানিটোলা ও বংশালের প্রতিটি ভবনের ছাদে থাকবে উৎসবের আমেজ।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ

শিরোনাম

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপনদেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীরঈদে বেড়েছে রেমিট্যান্স, ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রিজার্ভ১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতেনেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিতআয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দনজুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেইগোবিন্দগঞ্জে কাজী রাশিদা শিশু পার্কের উদ্বোধনইউরোপের চার দেশে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু