পাখির গ্রাম আলিদেওনা
হাজারো পাখির কিচির মিচির শব্দে ঘুম ভাঙে নওগাঁর আলিদেওনা গ্রামের মানুষের। তাই গ্রামটি পরিচিতি পেয়েছে পাখির গ্রাম নামে। এ গ্রামে পাখি শিকার তো দূরের কথা, পাখিদের সামান্য ক্ষতি করাও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার খাজুর ইউপির এ গ্রামে গড়ে ওঠা পাখির অভয়ারণ্যকে পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণার দাবি পাখি প্রেমিকদের। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাঁশঝাড় ও বড় বড় গাছের ডালে ডালে উড়ে বেড়ায় বক, শামুককল, রাতচোরা, সারস, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, ঘুঘুসহ নাম না জানা হাজারো পাখি।
স্থানীয়রা জানায়, বছর বিশেক আগে হঠাৎ করেই গ্রামে আসতে শুরু করে এসব পাখি। দিনদিন বাড়তে থাকে পাখিদের আনাগোনা। গ্রামবাসীও পাখিদের পদচারণায় মুগ্ধ হয়ে গড়ে তুলেছে নিরাপদ আশ্রয়।
গ্রামে প্রবেশের সময় সড়কের দুই পাশে গাছে গাছে ঝোলানো পাখির আদলে তৈরি সাইনবোর্ড। সেখানে লেখা ‘পাখি শিকার করবেন না, পাখি মারবেন না, পাখিরাও বাঁচতে চায়’।
হাজারো পাখির এ মিলনমেলা দেখতে নওগাঁসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আলিদেওনা গ্রামে যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। পাখিপ্রেমী, পরিবেশবিদদের দাবি, আলিদেওনা গ্রামে সরকারিভাবে পাখিদের অভয়ারণ্য ঘোষণা ও পর্যটন স্পট গড়ে তোলা প্রয়োজন। এতে গ্রামটিও আধুনিক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবে। দেশের পাশাপাশি বিদেশি দর্শনার্থীও আসবে।
আলিদেওনা পাখি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি নির্মল বর্মন জানান, পাখির গ্রামে গেলে যে কেউ মুগ্ধ হবেন। ওই গ্রামে পাখি শিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গ্রামের সীমানায় কোনো পাখি প্রবেশ করা মানে সেটি নিরাপদ। পাখিগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে গ্রামের ছোট বড় সবাই।
নির্মল বর্মন আরো বলেন, পাখিদের রাজত্ব আলিদেওনা গ্রামের সড়কগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। বর্ষা মৌসুমে সড়কের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামবাসী ও দর্শোনার্থীদের। এছাড়া গ্রামের কোথাও দর্শনার্থীদের জন্য বাড়তি সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা নেই। প্রশাসনের জরুরি ভিত্তিতে গ্রামের অবকাঠামো ও পর্যটনের উন্নয়নে নজর দেয়া প্রয়োজন।
মহাদেবপুরের ইউএনও মিজানুর রহমান বলেন, আলিদেওনা গ্রামটি দীর্ঘদিন ধরে পাখির গ্রাম হিসেবে পরিচিত। গ্রামের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণে পরিকল্পনা করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
দৈনিক গাইবান্ধা