দাবানল: অর্থ দান করেও সমালোচনার শিকার বিশ্বে শীর্ষ ধনী
অস্ট্রেলিয়ায় চলমান ভয়াবহ দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করতে ৬ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার দান করেছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনীব্যক্তি জেফ বেজোস। কিন্তু বিশাল পরিমাণ এই অর্থ দান করেও সমালোচনার মুখে পড়েছেন অ্যামাজনের এই প্রধান নির্বাহী। সমালোচনাকারীরা বলছেন, এই অর্থ তার সামর্থের কাছে কিছুই না। তিনি চাইলেই আরো অনেক বেশি সাহায্য করতে পারতেন।
বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্বের ধনীদের তালিকায় শীর্ষে থাকা ৯৩৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রতিষ্ঠানের প্রধান বেজোস সম্প্রতি ইন্সটাগ্রামে অস্ট্রেলিয়ার দাবানলের একটি ছবি প্রকাশ করেন। তাতে তিনি লেখেন, ‘ভয়াবহ দাবানলের সঙ্গে সংগ্রাম করা অস্ট্রেলীয়দের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সেবা ও সহযোগীতার জন্য অ্যামাজন ১ মিলিয়ন (১০ লাখ) অস্ট্রেলীয় ডলার (৬ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার) দান করেছে। এ সম্পর্কে আরো জানুন এবং গ্রাহকেরা চাইলে কিভাবে সাহায্য করা যায় তা জেনে নিন।‘
এই ছবি প্রকাশের পরই ইন্টারনেটে তাকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা হিসাব কষতে শুরু করেন ১১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক এই ব্যক্তি প্রতি মিনিটে কি পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন।
কেইলেন ওয়ার্ড নামে এক তরুণী মডেল দাবি করেছেন, তিনি তার নগ্ন ছবি বিক্রি করে বেজোসের দানের দ্বিগুণ অর্থ দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দান করেছেন।
আরেক ব্যবহারকারী বলেছেন, দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশ্বজুড়ে সাধারণ লোকজন ১০ বিলিয়ন ডলার অর্থ দান করেছে। বেজোস চাইলে একাই এই পরিমাণ অর্থ দান করতে পারতেন এবং এর পরও তার ১০৭ বিলিয়ন ডলার বাকি থাকত।
প্রখ্যাত লেখক পিটার ডাউ এক টুইট বার্তায় বেজোসের সমালোচনা করে বলেছেন, বেজোস যে পরিমান অর্থ দান করেছেন, সেটি তিনি মাত্র তিন মিনিটের মধ্যেই আয় করতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার ভয়াবহ দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বেজোস ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন খ্যাতনামা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অর্থ দান করেছে।
ফেসবুক থেকে দান করা হয়েছে ১ দশমিক ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বখ্যাত মেটাল ব্যান্ড মেটালিকা দান করেছে সাড়ে ৭ লাখ ডলার। খ্যাতনামা মার্কিন সংগীত শিল্পী স্যার এল্টন জন একাই দান করেছেন ১ মিলিয়ন ডলার। বিশিষ্ট এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানেরে তুলনায় অতি সামান্য আর্থিক সহযোগীতা করায় বিশ্বের শীর্ষ ধনীকে নিয়ে সমালোচনা তাই থামছেই না।
গত বছরের জুলাই থেকে শুরু হওয়া অস্ট্রেলিয়ার এই ভয়াবহ দাবানলে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার একর জমি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে, আয়তনে যা প্রায় দক্ষিণ কোরিয়ার সমান। এছাড়া প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৮ জন লোক, আর নিরবে মৃত্যু হয়েছে ৫০ কোটিরও বেশি প্রাণীর। অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের অন্যতম ভয়ঙ্কর দাবানল হিসেবে এরইমধ্যে রেকর্ডবুকে স্থান করে নিয়েছে এটি।
দৈনিক গাইবান্ধা