জামায়াত-শিবির আর জঙ্গিতে পূর্ণ হেফাজতের কমিটি
হেফাজতের নবগঠিত কমিটিতে বেশ ক'জন জামায়াত-শিবিরের সাবেক নেতা, জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠরাও আছে। তাদের মধ্যে অন্যতম ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আহমদ আবদুল কাদের। এছাড়া জঙ্গি সংগঠন হুজি ও লস্কর-ই-তৈয়্যবা ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে একাধিকবার গ্রেপ্তার হওয়া বেশ কজনও রয়েছেন কমিটিতে। অনেকেই নতুন এই কমিটিতে তিক্ততা প্রকাশ করে বলছেন- এ যেন নতুন বোতলে পুরোনো মদ!
গত ১৫ নভেম্বর (রবিবার) কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ১৫১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। যা হেফাজতের আরেকটি অংশ মানছে না। বিতর্কিত এই ব্যক্তিদের কমিটিতে রাখা সংগঠনের আদর্শবিরোধী বলছেন হেফাজতের সাবেক নেতারা।
হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর ধর্মভিত্তিক বড় এই সংগঠনটির নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপি-জামায়াতপন্থি অংশের নেতারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা শফীপন্থিদের বাদ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন। হেফাজতের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য ১৮ সদস্যের কাউন্সিল বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিতে থাকা বিএনপি-জামায়াতপন্থিরা নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজনীতি সচেতনরা।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, জামায়াতে ইসলামের সাথে সংশ্লিষ্ট নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গ হেফাজতে ইসলামের বিতর্কিত এই কমিটিতে আছেন-
সালাউদ্দিন আইয়ুবি, যিনি ছিলেন শিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আব্দুল আলিম, শিবিরের সাংস্কৃতিক সম্পাদক। হাবিবুল্লাহ আজাদী, জামায়াতের রুকন। জুনায়েদ বাবুনগরীর মামাতো বোনের স্বামী অ্যাডভোকেট নেজাম উদ্দিন, চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক। আহমদ আবদুল কাদের, যিনি ১৯৮২ সালে ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন
সংগঠনের বর্তমান মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের যে কাউন্সিল বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেখানে অনেকেই সরাসরি বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্নিষ্ট। কেউ কেউ জামায়াত নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। নতুন কমিটি গঠনকে সামনে রেখে প্রায় প্রতিদিনই বিএনপি-জামায়াতের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মীর ইদ্রিস, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির, মাওলানা জাফর আলম নিয়মিত গোপন বৈঠক করে কমিটির তালিকা তৈরি করছেন।
এই কমিটির মাধ্যমেই বাবুনগরী এবং জামায়াতের এজেন্ডা খুবই স্পষ্ট রূপে প্রতীয়মান হয়। আর তা হলো- দেশকে আবার অস্থিতিশীল পরিবেশের দিকে ঠেলে দেয়া।
দৈনিক গাইবান্ধা