শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ || ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

চর্চার মাধ্যমে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরতে হবে

চর্চার মাধ্যমে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরতে হবে

শায়খ রাশিদ জাদুয়ি আরব বিশ্বের একজন নন্দিত ইসলাম প্রচারক ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব। সম্প্রতি তিনি দাওয়াতি কাজে বাংলাদেশে এসেছেন। গত ১৭ জানুয়ারি ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এন ব্লকে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ (নির্মাণাধীন) মসজিদ ‘ফকিহুল মিল্লাত মুফতি আবদুর রহমান (রহ.) জামে মসজিদে জুমার নামাজের ইমামতি করেন। জুমার আগে তাঁর করা আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ অংশের লেখ্য রূপ দিয়েছেন মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা

সব প্রশংসা মহান আল্লাহর যিনি আমাদের ইসলামের নিয়ামত দান করেছেন। ইসলামের নিয়ামতের চেয়ে বড় আর কোনো নিয়ামত হতে পারে না। ঈমান ও ইসলাম ছাড়া পৃথিবীতেও কোনো কল্যাণ নেই, আখিরাতেও মুক্তির কোনো রাস্তা নেই। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দিয়েছেন, আমি দ্বিন তোমাদের জন্য পরিপূর্ণ করে দিয়েছি। এবং আমার নিয়ামত পরিপূর্ণ করে দিয়েছি। যেহেতু আল্লাহর সবচেয়ে বড় নিয়ামত ঈমান ও ইসলাম। তাই ঈমান ও ইসলাম শিখতে হবে। দ্বিনি জ্ঞানার্জন করতে হবে। কোরআন-হাদিসের জ্ঞান ছাড়া হেদায়েতের রাস্তা খোলে না। হেদায়েতের রাস্তা খোলার জন্য এই দ্বিনি জ্ঞান দরজাস্বরূপ। কেননা কোরআন-সুন্নাহর জ্ঞান ছাড়া ইসলাম শেখা ও তদনুযায়ী আমল করা দুষ্কর।

আল্লাহর রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, আলেমরা নবী-রাসুলদের উত্তরসূরি। আলেমরা জ্ঞানের উত্তরাধিকার রেখে গেছেন, যাঁরা নবীদের রেখে যাওয়া জ্ঞান অর্জন করবেন, তাঁরা সৌভাগ্যবান। ইলমের উদ্দেশ্য কী? নবীদের মিরাসের অধিকারী আমরা কখন হব? নবী-রাসুলরা যে রাস্তায় মেহনত করেছেন আমরা আলেমরাও যদি সেই রাস্তায় মেহনত করি, তাহলেই আমরা নবীর প্রকৃত উত্তরসূরি হব। পক্ষান্তরে যদি ইলম অর্জন করার পর নবীদের মতো মানুষকে দ্বিনের দিকে আহ্বান না করি, বরং ইলম দ্বারা যদি দুনিয়ার সম্মান, সম্পদ আশা করি, তাহলে আমরা নবীদের প্রকৃত উত্তরসূরি হতে পারব না। আলেমরা তখনই নবীর উত্তরসূরি হতে পারবেন, যখন তাঁরা নবীদের পথ ও পদ্ধতি অনুসারে মানুষকে ইসলামের দিকে আহ্বান করেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আলেমদের মর্যাদা সাধারণ ইবাদতকারীদের ওপর তেমন, যেমন আমি রাসুলের মর্যাদা ১৪ তারিখের চাঁদের চেয়ে বেশি। অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে একজন নিম্নমানের সাহাবির ওপর আমার যতটুকু মর্যাদা, একজন আলেমের একজন সাধারণ মুসলমানের ওপর তত বেশি মর্যাদা।’ এই মর্যাদা আলেমরা তখনই পাবেন, যখন তাঁরা তাঁদের ইলম (জ্ঞান) নবী (সা.)-এর দ্বিনের কাজে ব্যবহার করবেন। আর নবীদের প্রধান কাজ ছিল মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করা। তাদের দ্বিন শেখানো। যে দ্বিনি শিক্ষার উদ্দেশ্য দুনিয়া অর্জন তার বিশেষ কোনো মর্যাদা নেই। ইহুদিদের মধ্যে বড় বড় আলেম ছিল, কিন্তু ইলম অর্জন করার পরও তারা আল্লাহর কাছে মর্যাদার অধিকারী হতে পারেনি, বরং সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিবেচিত হয়েছে। কেননা তারা তাদের জ্ঞানকে দুনিয়ার জন্য ব্যবহার করেছে এবং দুনিয়া হাসিলের জন্য অর্জন করেছিল।

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাহাবিরা মুসলমানের জন্য অনুসৃত ও পাথেয়। তাঁরা আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে ইলম অর্জন করার পর দুনিয়া অর্জনে ইলমের ব্যবহার করেননি, বরং দ্বিন-ইসলাম প্রচার করার জন্য সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছেন। যখনই মানুষ ধ্বংসের পথে চলে গেছে, আল্লাহ যুগে যুগে তাদের জন্য নবী-রাসুল প্রেরণ করেছেন। তাঁরা মেহনত করে, তাদের আলোর পথে ফিরিয়ে এনেছেন, এখনো মানুষ সারা দুনিয়ায় অন্ধকারে নিমজ্জিত। পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত। আল্লাহ বলেন, ‘কালের শপথ! নিশ্চয়ই সব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ততায় নিপতিত। তবে তারা ছাড়া যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।’ (সুরা আসর, আয়াত : ১-৩)

মুসলিমরা যতক্ষণ পর্যন্ত নবী-রাসুল (সা.)-এর পদ্ধতিতে মানুষকে হেদায়েতের পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা দ্বিনের ক্ষেত্রে পুরোপুরি সফল হবে না। যারা মানুষ আলোর পথে আনতে একনিষ্ঠভাবে কাজ করবে, আল্লাহ তাদের বিশেষ মর্যাদা দান করবেন। যদিও বাহ্যত তাদের অর্থ-বিত্ত ও সামাজিক প্রভাব না থাকুক। যেমন অনেক সাহাবির পরনে কাপড় ছিল না, পেটে খাবার ছিল না, এর পরও তাঁরা আল্লাহর কাছে সম্মানিত হয়েছিলেন দ্বিনের জন্য তাঁদের আত্মত্যাগ ও বিসর্জনের কারণে। স্বয়ং রাসুল (সা.)-ও নিজের পেটে পাথর বেঁধেছিলেন। এর পরও তিনি আল্লাহর কাছে সব মাখলুকের চেয়ে সবচেয়ে বেশি সম্মানিত ছিলেন। তদ্রূপ সাহাবিরা তাঁর মিশনে আত্মনিয়োগের কারণে আল্লাহর কাছে সম্মানী হয়েছেন।

রাসুল (সা.)-এর প্রধান মিশন ছিল আল্লাহর পথে দাওয়াত দেওয়া। শুধু নিজে মুমিন হয়ে যদি নিজের ইসলাম নিয়ে বসে থাকে, দায়িত্ব আদায় হবে না। বরং মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঈমান-ইসলামের দাওয়াত এমনভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে। একে অপরকে দাওয়াত দিতে হবে। অমুসলিমরা যখন দেখবে আমরা নিজেরা সঠিক ইসলামের অধিকারী, আমাদের কথা ও কাজে মিল আছে, তখন অমুসলিমরাও দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করবে। ইনশাআল্লাহ!

আমরা নিজেদের ঈমানদার দাবি করি, কিন্তু ঈমান ও ইসলামের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক মজবুত নয়। ঈমানের চাহিদা আমরা পূরণ করি না। আমাদের পরিবার, সমাজ ও দেশকে ইসলাম অনুযায়ী পরিচালনার চেষ্টা করি না। ফলে অমুসলিমরা ইসলাম সম্পর্কে ভুল বুঝছে এবং বহু মানুষ ইসলামের আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ইসলাম সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে হলে, আমাদের নিজেদের ইসলামের উত্কৃষ্ট চরিত্র ও জ্ঞান চর্চা করতে হবে এবং তা নিয়ে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে হবে। যেখানে রাসুল (সা.)-এর উম্মত আছে, সেখানেই ইসলামের মেহনত করতে হবে।

ফ্রান্স, ব্রিটেন অমুসলিম রাষ্ট্র। একসময় এসব দেশে মসজিদের সংখ্যা খুবই কম ছিল। বর্তমানে এসব দেশে মুসলমানের সংখ্যা বাড়ছে এবং হাজার হাজার মসজিদ নির্মিত হয়েছে। মানুষের ইসলামের দিকে আগ্রহ বাড়ছে। এগুলো দাওয়াতি কাজের সুফল। দাওয়াতি কাজ ছাড়া মুসলিম সমাজ অগ্রসর হতে পারবে না। আল্লাহর দ্বিন প্রচার যখন ইসলামের নির্দেশ, তখন দল-মত, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-গরিব-নির্বেশেষে সবার উচিত এই কাজে আত্মনিয়োগ করা। আমরা যদি প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে রাসুল (সা.)-এর মিশন নিয়ে মানুষকে ইসলামের আহ্বান করতে থাকি এবং নিজেও

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ

শিরোনাম

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপনদেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীরঈদে বেড়েছে রেমিট্যান্স, ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রিজার্ভ১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতেনেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিতআয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দনসুইজারল্যান্ডে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায় কিবৈসাবি উৎসবের আমেজে ভাসছে ৩ পার্বত্য জেলাসবাই ঈদের নামাজে গেলে শাহনাজের ঘরে ঢুকে প্রেমিক রাজু, অতঃপর...