খালেদার পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্নীতির দানবে পরিণত হয় তারেক!
বিএনপির নামটি উচ্চারিত হলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সীমাহীন রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি, লুটপাট, ক্ষমতার অপব্যবহারে বিপর্যস্ত বাংলাদেশের চেহারা। দুর্নীতি, লুটপাট, কমিশন বাণিজ্য, উন্নয়নের নামে বরাদ্দের টাকা ভাগাভাগি, অর্থের বিনিময়ে দেশে অবাধে অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার প্রসার ঘটানোর অভিযোগে অভিযুক্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। অনিয়ম, দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কারণে দেশ ও বিদেশে দুর্নীতির বরপুত্র ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী দুর্নীতিবাজ হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেছেন লন্ডনে পলাতক তারেক। তার ও তৎকালীন সরকারের অপকর্ম আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপকভাবে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছিলো।
জানা গেছে, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হন তৎকালীন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বেছে বেছে রাষ্ট্রীয় খাতের উন্নয়নের নামে লাগামহীন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি করেন তারেক। লুটপাট ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ বিদেশে পাচার করে তারেকচক্র। তারেক রহমানের দুর্নীতির অন্যতম স্থান ছিলো দেশের বিদ্যুৎ খাত। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে বিদ্যুৎ সংযোগের নামে শুধু খাম্বা স্থাপন করে দেশ ও বিদেশে তিনি খাম্বা তারেক নামে পরিচিতি লাভ করেছেন। তারেক রহমানের লাগামহীন দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ পর পর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের ওপর ছড়ি ঘোরাতে বনানীতে হাওয়া ভবন নামে প্যারালাল সরকার গঠন করে সেখান থেকে দেশের প্রতিটি উন্নয়ন খাতে কমিশন নির্ধারণ করতেন খালেদাপুত্র। বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আদালত কর্তৃক দণ্ডিত কোনো অপরাধী দলটির প্রধান হতে পারবেন না। অথচ সব নিয়ম নীতি উপেক্ষা করেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানানো হয়েছে তারেক রহমানকেই।
তারেক রহমান শুধু দেশেই নয় বরং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও দুর্নীতির রাজা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে তারেক রহমানকে একাধিক রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা, গণমাধ্যম মার্কামারা দুর্নীতিবাজ হিসেবে চিহ্নিত করে। তারেক রহমানের চক্রান্ত ও দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত হয়। দেশকে বিক্রি করে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত কোটি কোটি টাকা লন্ডন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, আবুধাবি, কেয়ম্যান আইল্যান্ডে পাচার করে সেখানে বিনিয়োগ করেন তারেক। তার দুর্নীতি ও লুটপাটের রাজনীতিতে চরম ভোগান্তিতে ছিল বাংলাদেশে অবস্থিত কয়েকটি বিদেশি দূতাবাস।
তারেক রহমানের দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও জঙ্গি সম্পৃক্ততার কারণে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাকে ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জুডিথ চামাস একটি বক্তব্যে বলেন, ফোন দিয়ে তারেক রহমানের নির্দেশে জঙ্গি ও জেএমবি নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইয়ের ডানহাত মাহতাব খামারুকে মুক্তি দেওয়া হয়।
২০০৬ সালের ২৪ আগস্ট বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া বিউটেনিস মন্তব্য করেন যে, খালেদা জিয়ার ছেলেরা এবং বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মন্ত্রীদের আত্মীয়রা সরাসরি কমিশন বাণিজ্যে জড়িত। তারা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছেন। ২০০৮ সালের ১১ মার্চ বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি তারেক রহমানকে নিয়ে একটি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, তারেক রহমান ভয়ানক দুর্নীতিবাজ। তিনি দুর্নীতি করে কোটি কোটি ডলার কামিয়েছেন। তাকে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেয়া ঠিক হবে না।
তারেক রহমানের সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, কমিশন বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও জঙ্গিবাদে মদতদানের বিষয়গুলো বেগম জিয়া জানলেও তা নিয়ন্ত্রণে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। রাজনৈতিক ফায়দা লাভের আশায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় বোমা হামলার সুষ্ঠু তদন্তে বাধা দেন খালেদা-তারেক। বলা হয়, বেগম জিয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় তারেক রহমান দুর্নীতির দানবে পরিণত হয়। খালেদা-তারেকের দুর্নীতির কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশ ও দেশের মানুষ। তাই বৃহত্তর স্বার্থে দুর্নীতিবাজ বেগম জিয়া, তারেক ও বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করা উচিত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
দৈনিক গাইবান্ধা