বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ || ১৩ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ০৯:১২, ১৭ এপ্রিল ২০২০

করোনার বিরুদ্ধে জাতীয় ‘হিরো’ হলেন ডা. নূর হিশাম

করোনার বিরুদ্ধে জাতীয় ‘হিরো’ হলেন ডা. নূর হিশাম

চলমান প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে মালয়েশিয়ার জাতীয় হিরো হলেন ডা. নূর হিশাম আব্দুল্লাহ। তিনি দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক। গোটা দেশটিতে তার জয়জয়কার, কুড়িয়েছেন ভূয়সী প্রশংসা।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে উন্নীত ও ভাইরাস প্রতিরোধে নূর হিশাম সারাবিশ্বের ডাক্তারদের কাছে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন। সেইসঙ্গে জায়গা করে নিয়েছেন- বিশ্বের তিনজন সফল চিকিৎসকের মধ্যে একজনে।

প্রথমে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থেকেও দেশটির পেতালিংয়ে তাবলিগ জামাত থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ঠিক তখনই শক্ত অবস্থান নেন তিনি। দেশটিতে মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার ঘোষণা করে মালয়েশিয়া সরকার। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে নেয়া হয় বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ। তার বুদ্ধিমত্তায় করোনার সুফল পেতে শুরু করেছে দেশবাসী।

চলমান পরিস্থিতিতে মোট আক্রান্তের পরিমাণের চেয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন অর্ধেকেরও বেশি রোগী। মালয়েশিয়াজুড়ে তার কৌশল প্রয়োগে প্রশংসায় ভাসছেন। নূর হিশাম আব্দল্লাহকে জাতীয় নায়কের খেতাবে ভূষিত করেছেন দেশের জনগণ।

 

 

 

সম্প্রতি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবিলা ও সুকৌশলে পরিচালনা করার জন্য চীনের একটি টিভি স্টেশন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকদের মধ্যে মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য মহাপরিচালক ডা. নূর হিশাম আব্দুল্লাহকে অন্যতম হিসেবে চিহ্নিত করেছে। চীনা গ্লোবাল টিভি নেটওয়ার্কের (সিজিটিএন) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর লড়াইয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্টনি ফৌসি এবং নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক অ্যাশলে ব্লুমফিল্ড-এর পাশাপাশি ডা. হিশাম শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকের একজন।

মহামারি চলাকালীন তিন সপ্তাহ চলা তাদের দেশবাসীর জন্য প্রদান করা তথ্যগুলো শান্ত, স্পষ্ট এবং বিশ্বাসযোগ্য হওয়ার কারণে তিনজন ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছেন। তাদের কেউই মন্ত্রিপরিষদ মন্ত্রী নন তবে তিনজনই তাদের দেশের কোভিড-১৯ এর প্রতিক্রিয়া প্রকাশে নিজ দেশের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানায় সিজিটিএন। এতে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, প্রিন্ট এবং টিভিতে হার্টথ্রবস, রকস্টার এবং জাতীয় নায়ক বলা হচ্ছে তাকে। একটি অভূতপূর্ব বিশ্বব্যাপী মহামারির মধ্যে সরকার প্রতিক্রিয়া দেখাতে মন্থর হয়ে পড়ছিল, পাশাপাশি বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তিমূলক পদক্ষেপ এবং পরস্পরবিরোধী বার্তা প্রেরণ করায় ড. ফাউসি, ডা. ব্লুমফিল্ড এবং ডা. হিশাম বিশ্বস্ত ও আশ্বাসের উৎস হয়ে উঠেছে।

কোভিড-১৯ মহামারি পরিচালনার জন্য চীনের একটি টিভি স্টেশন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকদের মধ্যে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক দাতুক ডা. নূর হিশাম আবদুল্লাহকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। ডা. হিশাম (৫৭) ২০১৩ সাল থেকে হেলথ ডিরেক্টর-জেনারেল হিসেবে রয়েছেন।

ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয় থেকে সার্জারি ও মেডিকেল ডিগ্রি অর্জন করেন ডা. হিশাম । ১৯৮৮ সালের আগস্টে ফিরে তিনি মেডিকেল অফিসার হিসেবে সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেছিলেন। তিনি এন্ডোক্রাইন শল্য চিকিৎসা করার জন্য দক্ষ এবং অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড এবং সিডনির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি এন্ডোক্রাইন সার্জারি সম্পর্কিত বহু স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক জার্নাল এবং পাঠ্যপুস্তক অধ্যায়গুলিতে গবেষণা ধর্মী লেখা প্রকাশ করেছেন। 

ডা. হিশামের শুভাকাঙ্খীরা তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ও প্রশংসা করে বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, ‘মালয়েশিয়া তাকে পেয়ে ভাগ্যবান’।

করোনা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক জরিপকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটার এর তথ্যমতে, এ পর্যন্ত করোনায় বিশ্বে এক লাখ ৩৬ হাজার ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লাখ ৯৮ হাজার ৯৮১ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫ লাখ ২৩ হাজার ৭৫৩ জন।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ