এসিটি শিক্ষকদের ভাগ্য আর খুললো না
মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়া রোধ ও বিদ্যালয় মুখী করার লক্ষ্যে সেকায়েপ প্রকল্পের আওতায় অন্যন্য এলাকার ন্যায় গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলাতেও কাজ শুরু হয়েছিল। এগিয়ে যাচ্ছিল শিক্ষা ব্যবস্থা। কিন্তু বিগত ১৪ মাস ধরে সাঘাটার ৩২টি স্কুলের নিয়োগকৃত সেকায়েপ প্রকল্পের কর্মসংস্থান হারানো ৮৬ জন এসিটি শিক্ষকের ভাগ্য আর খুললো না । শিক্ষা মন্ত্রণালরে সেকেন্ডারী এডুকেশান কোয়ালিটি এ্যান্ড অ্যাকসেস এনহান্সমেন্ট প্রজেক্টের (সেকায়েপ) অধিনে উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় এডিশনাল ক্লাস টিচার (অতিরিক্ত শ্রেণী শিক্ষক) এসিটি হিসেবে নিয়োগ পান এসব শিক্ষক। প্রাইভেট কোচিং এর প্রতি বিমুখ করে বিদ্যালয়মুখী করে মাধ্যমিক পর্যায়ে ইংরেজী, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে দুর্বল শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়া রোধ করাই ছিল এ প্রকল্পের উদ্দেশ্যে। এসব বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া মেধাবীদেরই নিয়োগ দিয়ে এ কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়। ২০১৫ সালের ১ মার্চ থেকে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস ছাড়াও মাসে অন্তত ১৬টি অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে বিদ্যালয়গুলোর ফলাফলের ক্ষেত্রে সফলতার দ্বারে পৌঁছে দিয়েছেন। কচুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুব রাব্বী জানান, প্রতিষ্ঠানগুলোতে এসব শিক্ষকের ক্লাস নেওয়ার গুনগত ধরন ও যত্মবান হওয়ায় অমনোযোগী ও দুর্বল শিক্ষার্থীরাও পড়াশুনার মনোযোগী হয়ে উঠতে থাকে। যে কারনে এসব শিক্ষকের প্রয়োজন ছিল। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পটি মেয়াদ শেষে বন্ধ করে দেওয়ায় উপজেলার ৩২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৮৬ জন এসিটি শিক্ষক কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েন। এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষে নিয়োগকৃত শিক্ষকদের এমপিও ভূক্তির মাধ্যমে চাকুরী স্থায়ীকরণের কথা উল্লেখ থাকলেও এ ধরনের কোন পদক্ষেপ না থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা। নিয়োগ প্রাপ্তির পর অন্য কোন চাকুরীর সন্ধান না করে এ পেশাকেই আকরে ধরে থাকা এসব শিক্ষকের অধিকাংশই সরকারি চাকুরীর বয়স সীমাও পার হয়ে গেছে। চাকুরী স্থায়ীকরণ হলে একদিকে শিক্ষার্থীরা যেমন উপকৃত হবে, অপরদিকে আমরাও বেকার জীবন থেকে মুক্তি পেতাম বলে জানালেন, গাছাবাড়ি পূর্বপাড়া দাখিল মাদ্রাসার এসিটির দায়িত্ব পালন করা শিক্ষক কামরুল হাসান ও কুন্দপাড়া ইউনাইটেড স্কুলের সাবেক এসিটি শিক্ষক কামাল হোসেন। অবশ্য এসব শিক্ষকরা এখন অনেকটাই নিরুপায় হয়ে অন্য কাজ করে সংসার পরিচালনা করছেন। এতে তাদের কষ্টও হচ্ছে। এভাবেই প্রায় ১৪ মাস কেটে গেলেও তাদের স্বপদে ফেরাতে কোন কার্যকর ব্যবস্থা না হওয়ায় ভাগ্য খুললো না এসব শিক্ষকের। এ বিষয়টি মন্ত্রনালয়ে প্রকৃয়াধীন আছে বলে জানালেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আহসান হাবিব।
দৈনিক গাইবান্ধা