ইহুদিদের জন্য হোটেলে খাবারের ব্যবস্থা রাখবে আমিরাত
ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পর এবার দেশটির হোটেলগুলোতে ইহুদিদের জন্য আলাদা খাবারের ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার।
বুধবার দেশটির সব হোটেল কর্তৃপক্ষকে এ সংক্রান্ত এক নির্দেশনাও প্রদান করা হয়েছে বলে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে।
নির্দেশনায় ইসরায়েলি পর্যটকদের সাদরে গ্রহণের প্রস্তুতির জন্য ইহুদিদের খাদ্যাভাসের সঙ্গে যায়; এমন খাবার রাখতে বলা হয়েছে।
সেখানে আরো বলা হয়, সব হোটেলকে তাদের পরিষেবা তথা রুম সার্ভিস মেন্যু এবং সব খাবার ও পানীয়ের দোকানগুলোকে ইহুদি ধর্মে বৈধ এমন বিকল্প খাবার অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, আবুধাবির প্রায় ১৬০টি হোটেলকে এখন কোশের খাবারের (ইহুদি ধর্ম অনুযায়ী বৈধ খাবার) সনদ নিতে হবে। এর মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে যে, তারা ইহুদি ধর্মের বিধান অনুযায়ী খাবার তৈরি করেছে।
ইসরায়েলি টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি ইহুদি সংস্থার কাছ থেকে এ সনদ সংগ্রহ করতে হবে।
এছাড়া ইহুদি পর্যটকদের খাবার প্রস্তুতের জন্য সব হোটেলের রান্নাঘরে আলাদা একটি জায়গা বরাদ্দ করারও নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সরকারের এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইহুদি কাউন্সিলের প্রধান রস ক্রিল। সরকারের এই উদ্যোগকে ইহুদিদের স্বাগত জানানো এবং তাদের আতিথেয়তার এক দুর্দান্ত প্রয়াস হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
এদিকে আগামী সপ্তাহেই আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে উপনীত হচ্ছে ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দফতর হোয়াইট হাউসে।
ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের স্বাভাবিক সম্পর্ক তৈরির আনুষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতি দেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
হোয়াইট হাউসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর হোয়াইট হাউসে ঐতিহাসিক এ চুক্তি স্বাক্ষরের আয়োজন করবেন। উভয় দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আর আমিরাতের প্রতিনিধিত্ব করবেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন জায়েদ।
টুইটারে দেয়া এক পোস্টে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, শান্তি চুক্তির ভিত্তি স্থাপনের জন্য আগামী সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের এ সংক্রান্ত ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এজন্য আমি গর্বিত।
১৯৭৯ সালে মিসর ও ১৯৯৪ সালে জর্ডানের পর তৃতীয় আরব রাষ্ট্র হিসেবে ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেয় আমিরাত। দুই দেশের টেলিফোন যোগাযোগ সচল করার পাশাপাশি নিয়মিত বিমান চলাচল চালুর ঘোষণা দেয়া হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দফতর হোয়াইট হাউস ইঙ্গিত দিয়েছে, অন্য আরব রাষ্ট্রগুলোও আমিরাতকে অনুসরণ করবে।
দৈনিক গাইবান্ধা