শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ || ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ২৬ আগস্ট ২০২২

ভারতীয় নারীর অর্থায়নে ইংল্যান্ডের প্রথম মসজিদ

ভারতীয় নারীর অর্থায়নে ইংল্যান্ডের প্রথম মসজিদ

ইংল্যান্ডের প্রাচীনতম মসজিদ শাহ জাহান মসজিদ। বর্তমানে ওকিং মসজিদ হিসেবে বেশি পরিচিত। ধারণা করা হয়, নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে স্থাপিত ইংল্যান্ডের প্রথম মসজিদ এটিই। লন্ডনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে মাত্র ৩০ মাইল দূরত্বে এর অবস্থান। আন্তর্ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রসারে পারস্পরিক বোঝাপড়া, শান্তি ও সম্প্রীতি তৈরিতে এই মসজিদে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

১৮৮৯ সালে ওকিং শহরের ওরিয়েন্টাল কলেজ শিক্ষার্থীদের নামাজের স্থান তৈরির উদ্যোগ নেন হাঙ্গেরির বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ প্রাচ্যবিদ ড. গটলিব উইলহেম লেটনার তা স্থাপন করেন। তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ভুপালের সম্রাজ্ঞী শাহ জাহান বেগম অর্থদান করেন। পরবর্তী সময়ে শাহ জাহানের নামেই এ মসজিদের নামকরণ করা হয়। ১৮৮১ সালে ড. লেটনার ওকিংয়ের রয়েল ড্রামাটিক কলেজ ভবন ক্রয় করে তা ওরিয়েন্টাল ইনস্টিটিউট হিসেবে তৈরি করেন। এখানে প্রাচ্যবিদদের সাহিত্যবিষয়ক পাঠদান করা হতো। লাহোরে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর শিক্ষার্থীরা ডিগ্রি অর্জন করত।

শিক্ষার্থীদের জন্য স্থাপিত মসজিদটির নকশা করেন বিখ্যাত স্থপতি উইলিয়াম আইজ্যাক চেম্বার। মসজিদে একটি গম্বুজ, মিনার ও প্রশস্ত প্রাঙ্গণ আছে। এ ছাড়া মসজিদের দেয়াল আরবি ক্যালিগ্রাফিতে সুসজ্জিত। মসজিদের সামগ্রিক নির্মাণে অষ্টদশ শতকের মোগল স্থাপত্যরীতির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। যেমন পেঁয়াজ আকৃতির গম্বুজ, খিলানযুক্ত দরজা ও কুলুঙ্গির প্রচলন মোগল জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।

এতে একটি গ্রন্থাগারও আছে। উইন্ডসর কাসলে অবস্থানকালে রানি ভিক্টোরিয়ার ভারতীয় সহকারী আবদুল করিম দাসদের নিয়ে মসজিদে এসেছিলেন। ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষার্থী ও অতিথিরা এলে তা মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ড. লেটনারের মৃত্যুর পর বেশ কয়েক বছর তা বন্ধ থাকে।

১৯১২ সাল পর্যন্ত মসজিদটি অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত হিসেবে থাকে। ড. লেটনারের ছেলে স্থানটি বিক্রি করার ইচ্ছা করেন। তখন কাশ্মীর বংশোদ্ভূত আইনবিদ খাজা কামাল উদ্দিন আদালতের শরণাপন্ন হয়ে মসজিদ বিক্রয়ে বাধা দেন। ধর্মীয় স্থাপনা হিসেবে তা পৈতৃক সম্পত্তি হবে না বলে তিনি যুক্তি দেখালে মসজিদটি রক্ষা পায়। ১৯১৩ সালে লেটনারের পুত্রকে কিছু অর্থ প্রদান করে খাজা কামাল উদ্দিন মসজিদ পুনরায় চালু করেন। কিন্তু তিনি লাহোরভিত্তিক আহমদিয়া আন্দোলনের কর্মী হওয়ায় মসজিদটি ১৯৬০ সাল পর্যন্ত আহমদিয়া (কাদিয়ানি) সম্প্রদায় কর্তৃক পরিচালিত হয়। অবশ্য পরবর্তী সময়ে ব্রিটেনে মুসলিমদের সংখ্যা বাড়তে থাকলে তাদের প্রভাব কমে যায়। অবশেষে ১৯৬০ সালে ব্রিটেনের সুন্নি মুসলিম জনগোষ্ঠী মসজিদের পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে।

বিংশ শতকের অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি ব্রিটেনের ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি পরিদর্শন করেন। সৌদি বাদশাহ ফয়সাল, পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, ইথিওপিয়ার সম্রাট হেইল সেলেসি, মালয়েশিয়ার রাস্ট্রপতি টুনকু আবদুর রহমান, হায়দরাবাদের প্রধানমন্ত্রী মির ইউসুফ আলী খান, অল ইন্ডিয়া মুসলিম লিগের প্রথম স্থায়ী সভাপতি স্যার সুলতান মুহাম্মদ শাহ আগা খানসহ আরো অনেকে মসজিদ পরিদর্শনে আসেন। এ ছাড়া ব্রিটিশ রাজ পরিবার ও লর্ড হেডলি ও মারমাদুকে পিকথল এবং ব্রিটেনের বিখ্যাত নও মুসলিমরা মসজিদটি পরিদর্শন করেন।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ

শিরোনাম

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপনদেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীরঈদে বেড়েছে রেমিট্যান্স, ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রিজার্ভ১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতেনেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিতআয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দনজুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেইগোবিন্দগঞ্জে কাজী রাশিদা শিশু পার্কের উদ্বোধনইউরোপের চার দেশে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু