শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১৩:০৫, ৪ আগস্ট ২০২২

বিলাল (রা.) যেভাবে মদিনার মুয়াজ্জিন হন

বিলাল (রা.) যেভাবে মদিনার মুয়াজ্জিন হন

বিলাল (রা.) ছিলেন রাসুল (সা.)-এর প্রধান মুয়াজ্জিন। হিজরতের পর মদিনায় ইসলামের কাজ গতিময় হলো। মুসলমানের সংখ্যা বাড়তে লাগল। প্রয়োজন দেখা দিল নামাজের সময় হলে মুসল্লিদের অবগতির জন্য কোনো একটা ব্যবস্থাকরণের।

সে জন্য রাসুল (সা.)-এর দরবারে দফায় দফায় বৈঠকও হলো। সঠিক কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছা গেল না। মহান আল্লাহ আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ ইবনে আবদে রাব্বিহি (রা.)-সহ একাধিক সাহাবিকে আজানের শব্দগুলো স্বপ্নযোগে শিখিয়ে দিলেন। ঘুম থেকে জেগে দেরি করলেন না আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ। দ্রুত চলে গেলেন রাসুল (সা.)-এর দরবারে। বিস্তারিত খুলে বললেন। রাসুল (সা.) আনন্দিত হলেন এবং বিলাল (রা.)-কে ডেকে আজান দিতে বলেন। বিলাল (রা.) ছিলেন সুস্পষ্টভাষী, বাগ্মী, সুমধুর ও সুউচ্চ কণ্ঠস্বরের অধিকারী। এটি ছিল ইসলামের সর্বপ্রথম আজান, যা বিলাল (রা.)-এর সৌভাগ্যে জুটল। এর পর থেকে তিনি রাসুল (সা.)-এর মসজিদে প্রধান মুয়াজ্জিন হিসেবে আজানের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে কখনো সেই দায়িত্ব পালন করতেন আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)। তবে তাহাজ্জুদ ও ফজরের আজানে তাঁদের দুজনের মধ্যে পালা পরিবর্তন হতো। বিলাল (রা.) তাহাজ্জুদের আজান দিলে উম্মে মাকতুম (রা.) দিতেন ফজরের আজান। এ ক্ষেত্রে বিলাল (রা.)-এর আজানের পরও সাহরি খাওয়া যেত। কেউ যেন বিলাল (রা.)-এর আজানকে ফজরের আজান মনে করে সাহরি খাওয়া বন্ধ না করে, সে জন্য রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছিলেন, ‘বিলালের আজান যেন তোমাদের ধোঁকায় না ফেলে। ’ (মুসলিম শরিফ ১/৩৪৯; সহিহ ইবনে খুজাইমা ৩/২১০)

রাসুল (সা.)-এর আবাসে-প্রবাসে সর্বত্র আজান দিতেন বিলাল (রা.)। এক সফরে রাসুল (সা.) রাতের প্রায় শেষ প্রহরে কোনো এক এলাকায় অবতরণ করলেন। দীর্ঘ সফরে ক্লান্তশ্রান্ত সাহাবিরা ঘুমিয়ে পড়লেন। ফজরের সময় হলে সবাইকে জাগিয়ে দেবে কে? সে জন্য দায়িত্ব দিলেন মুয়াজ্জিন বিলাল (রা.)-কে। তিনি দুই-চার রাকাত নামাজ পড়ে পূর্ব দিগন্তের দিকে তাকিয়ে হাওদার সঙ্গে হেলান দিয়ে বসে গেলেন। যেন সুবহে সাদিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আজান দিতে পারেন এবং সবাইকে জাগিয়ে দিতে পারেন। আল্লাহর কী হেকমত! এ অবস্থায় তিনিও অন্যদের মতো গভীর তন্দ্রায় ডুবে গেলেন। সুবহে সাদিক হলো, সারা দুনিয়ায় আলো ছড়িয়ে পড়ল, এমনকি সূর্য উদিত হয়ে তার কিরণ ছড়াতে লাগল। কেউ জাগ্রত হলেন না। সবার আগে জাগলেন রাসুল (সা.), জাগালেন সবাইকে। সাহাবায়ে কেরাম পেরেশান হয়ে গেলেন। রাসুল (সা.) তাদের সান্ত্বনা দিয়ে ইরশাদ করলেন, ‘তোমাদের কোনো দোষ নেই। সামনে চলো! মাকরুহ ওয়াক্ত পার হওয়ার পর বিলাল (রা.)-কে আজান দিতে বলেন। তিনি আজান দিলেন। অতঃপর রাসুল (সা.) জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করলেন। ’ (মুসলিম শরিফ ১/২৩৮; আস-সুনানুল কুবরা ২/৩০৮)

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ