শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ || ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ০৫:০০, ৩০ মার্চ ২০২৩

লাল মরিচে রঙিন ফুলছড়ি হাট, বিক্রি হয় পৌনে ৪ কোটি টাকার মরিচ

লাল মরিচে রঙিন ফুলছড়ি হাট, বিক্রি হয় পৌনে ৪ কোটি টাকার মরিচ

সূর্য ওঠার পরপরই হাটে আসতে থাকে মরিচের বস্তা। সারি সারি সাজানো লাল টুকটুকে শুকনো মরিচে দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে চারদিক। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক। গাইবান্ধার ফুলছড়িতে সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার দুপুরের আগ পর্যন্ত এভাবে চলে বেচাকেনা।

গত মঙ্গলবার এক হাটের দিনে কমপক্ষে আড়াই হাজার মণ শুকনো মরিচ বিক্রি হয়েছে, যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্রহ্মপুত্র নদীবেষ্টিত ফুলছড়ির চরাঞ্চলে চাষ বেশি হওয়ায় জেলার একমাত্র মরিচের হাট হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে এটি। গজারিয়ার ব্রহ্মপুত্র নদী-সংলগ্ন হাটে বর্ষায় নৌকায় ও শুকনো মৌসুমে ঘোড়ার গাড়িতে কৃষক ও পাইকাররা আসেন হাটে।

টেংরাকান্দি, মোল্লারচর, খোলাবাড়ি, ফজলুপুর, এরেন্ডবাড়ি, উড়িয়া, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জের চরাঞ্চল এবং জামালপুরের বকশীগঞ্জের কয়েকটি চর থেকে মরিচ আসে ফুলছড়িতে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ভরা মৌসুমে মরিচ বেশি বিক্রি হয়। অন্য সময়ে বিক্রি হয় কম।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, এ বছর সাত উপজেলায় দুই হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হবে ৫ হাজার ৭৫ টন শুকনো মরিচ। শুধু ফুলছড়িতেই ৯৯২ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ করা হয়েছে। বাকি ১ হাজার ৩৮ হেক্টর আবাদ হয়েছে ছয় উপজেলায়।

গজারিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও হাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি জিহাদুর রহমান মওলা বলেন, হাইব্রিড, বগুড়া ও স্থানীয় জাতের শুকনো মরিচ বেশি আসে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে কোম্পানির প্রতিনিধিরাও এ হাট থেকে মরিচ কিনে নিয়ে যান।

বগুড়া থেকে গতকাল হাটে এসেছিলেন সিরাজুল ইসলাম ব্যাপারি। তিনি জানান, ভোরে ট্রাক নিয়ে মরিচ কিনতে এসেছেন। তবে দাম খুব চড়া। ফুলছড়ির মরিচ ভালো। তিনি কিনেছেন প্রায় ৩৫ মণ। ঘোড়াঘাটের ব্যাপারি খলিলুর রহমান জানান, প্রতি বছরই ফুলছড়ি থেকে শুকনো মরিচ কিনে নিয়ে দিনাজপুরে বিক্রি করেন। গত বছর ১০ থেকে সাড়ে ১০ হাজারের মধ্যে কিনলেও এ বছর দাম চড়া।

গলনাচরের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, বিঘাপ্রতি কাঁচা মরিচ উৎপাদনে ব্যয় হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। ৫০ মণ কাঁচামরিচ জমিতে লাল হয়ে পাকার পর রোদে শুকিয়ে ১০ মণের মতো হয়। বাড়তি খরচ প্রায় ১০ হাজার টাকা। সে হিসাবে ১০ মণ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায়। ব্যয় বাদে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকার মতো আয় হয়।

মৌসুমে প্রতি হাটে গড়ে ২–৩ কোটি টাকা মরিচ বিক্রি হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ইজারাদার বজলুর রহমান মুক্তা বলেন, সকাল ৭টা থেকে হাট বসে। আড়াই থেকে তিন হাজার মণ শুকনো মরিচ বিক্রি হয়েছে। প্রতিমণ ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা হিসেবে বাজারমূল্য প্রায় ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আগের হাটেও ৩ কোটি ২০ লাখ টাকার মতো মরিচ বিক্রি হয়েছে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, জেলার সাতটি উপজেলায় যে পরিমাণ মরিচের চাষ হয়, তার অর্ধেক হয় ফুলছড়িতে। অনুকূল আবহাওয়া ও চরের উর্বর মাটিতে দিন দিন মরিচের চাষ বাড়ছে। চরের লোকজন মরিচ চাষে ঝুঁকছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের পরামর্শসহ সব ধরনের কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে বলে জানান তিনি।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ

শিরোনাম

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপনদেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীরঈদে বেড়েছে রেমিট্যান্স, ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রিজার্ভ১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতেনেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিতআয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দনজুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেইগোবিন্দগঞ্জে কাজী রাশিদা শিশু পার্কের উদ্বোধনইউরোপের চার দেশে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু