বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ || ১৩ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১১:২১, ৭ জুলাই ২০২২

গাইবান্ধায় কেনাবেচায় জমজমাট পশুর হাট

গাইবান্ধায় কেনাবেচায় জমজমাট পশুর হাট

দরজায় কড়া নাজছে কোরবানির ঈদ। চলছে শেষ মুহুর্তের কেনাকাটা। সামর্থ্যরে মধ্যে পছন্দের পশু কিনতে তাই হাটে ভিড় করছেন ক্রেতারা । দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাই ক্রেতা বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখরিত গাইবান্ধার পশুর হাট গুলো । শুরু থেকেই দাম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছে ক্রেতা সাধারন । তবে বিক্রেতারা বলছেন মাংসের দোকানে যেভাবে কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি হয় সেভাবে কোরবানির হাটে গরুর দাম বলছেন ক্রেতারা। খামারি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোরবানির জন্য লালন-পালন করা গরুর এই দরে বিক্রি করতে গেলে তাদের লোকসান গুণতে হবে।

গতকাল বুধবার পলাশবাড়ী উপজেলার সমিতির হাটে গিয়ে দেখা যায় গরু নিয়ে আসতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। পুরো হাট জুড়ে গরু থাকলে বিক্রি তুলনামূলক কম বলে জানিয়েছেন বিক্রেতা ও হাটের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা।

বিক্রেতাদের অভিযোগ, হাটে আসা ক্রেতারা বাজারে গরু মাংসের কেজি হিসাবে দরদাম করছেন। তারা প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা হিসাব করে দাম হাঁকছেন।

তারা বলছেন, গরু পরিচর্যা ও আনুষঙ্গিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় এর বছর কোরবানির গরু প্রতি কেজি ৯০০ টাকার নিচে বিক্রি সম্ভব নয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হাটে ৪০ হাজারের নিচে কোন গরু নেই । ছোট গরুর চাহিদা বেশি হওয়ায় তুলনামূলকভাবে এগুলোর দাম বেশি। আনুমানিক ১০০ কেজি মাংস হবে এমন গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ৯০ হাজার টাকা ।

গোবিন্দগঞ্জ থেকে থেকে ৩টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন আমরুল মুন্সি। তিনি বলেন, গত রোববার রাতে ২ লাখ ৫ হাজার টাকায় একটি গরু বিক্রি করেছি। গরুটিতে ৭ থেকে ৮ মণ মাংস হবে। গরুটি ৫ হাজার টাকা লোকসানে বিক্রি করতে হয়েছে। ক্রেতারা অনেক দর কষাকষি করছেন। শেষমেশ যদি বিক্রি না হয়, সেই আশঙ্কা থেকেই লোকসানে বিক্রি করেছি। এই বর্ষা মৌসুমে গরু ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হলে অনেক ক্ষতি হবে। বাকি ২টি গরু আড়াই লাখ টাকা বিক্রি করব। এর কমে বিক্রি করা সম্ভব নয়।

খামারী শফিকুল ইসলাম বলেন ‘ক্রেতারা বাজারের কেজি হিসেবে দরদাম করছেন। বাজারের কেজি দরে কোরবানির গরুর দাম করা একেবারেই অযৌক্তিক। আমার কাছে ১০ টি গরু আছে। গরুর দেখাশোনার জন্য কর্মচারী আছে । তাদের বেতন দিতে হয়। এর বাইরে গোখাদ্যের দাম, নিয়মিত পরিচর্যা, চিকিৎসার পেছনেও অনেক খরচ আছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন তাতে অনেক লোকসানে পড়তে হবে।

তিনি আরও বলেন, যারা বাসা-বাড়িতে নিজেরা গরু পালেন তাদের খরচ কম। তারা গরুকে কচুরিপানা খাওয়ান, ভাতের মাড় খাওয়ান, পরিচর্যায়ও তেমনটা খরচ হয় না। তাই তারা এই দামে লাভবান হতে পারেন। কিন্তু যারা খামারে গরু পালেন তাদের খরচ বেশি। বড় খামারগুলো কিছুটা লাভ করতে পারলেও ছোট খামারগুলো লোকসানে পড়ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিক্রি কম হলেও অনেক লোক হাটে গরু দেখতে আসছেন। আতিকুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা জানান মূলত গরুর দাম সম্পর্কে ধারণা পেতেই হাটে এসেছেন বলে জানান তিনি।আমি কোরবানির ২ দিন আগে গরু কিনব। এখন ধারণা নিতে এসেছি। যদি দামের মধ্যে পেয়ে যাই তাহলে এখনই নেব।এ বছর গরুর দাম তুলনামূলকভাবে বেশি বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, গত বছর যে দামে কিনেছি সেটা মাথায় রেখেই এবার দরদাম করছি। বাজারের দামে নয়। যে গরু গত বছর ৬০ হাজারে কিনেছি সে গরু এ বছর ৭০ হাজার চাইছে বিক্রেতারা।

উল্লেখ্য, আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে গাইবান্ধায় ২ লাখ দুই হাজার ৯৪৪ টি পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্য গরু ৫৬ হাজার ৯৮২ ও ছাগল ভেড়া ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯৬২ টি০। জেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জেলার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৪৫ টি প্রস্তুত রয়েছে ২ লাখ ২ হাজার ৯৪৪টি।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ