শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২৭ জুন ২০২২

ফুলছড়ির ‘গণকবর ক্রসবাঁধ’ নির্মাণে সহস্রাধিক একর জমি জেগে উঠবে

ফুলছড়ির ‘গণকবর ক্রসবাঁধ’ নির্মাণে সহস্রাধিক একর জমি জেগে উঠবে

মাটির তলদেশ থেকে ৩০ ফিট উচ্চতা এবং ৫শ’ মিটার দীর্ঘ ক্রসবাঁধ নির্মাণ হওয়ায় পাল্টে গেছে গাইবান্ধার ফুলছড়ির দৃশ্যপট। ফলে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে ১৯৭১ সালের বধ্যভূমি (গণকবর), জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’র মুর‌্যাল, প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের ঘর, ঐতিহ্যবাহী ফুলছড়িহাট, সাবেক ফুলছড়ি উপজেলা সদর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এছাড়া বাঁধের দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্বে বিশাল এলাকাজুড়ে কয়েক সহস্রাধিক একর কৃষিজমি জেগে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।

ফুলছড়ি উপজেলা মুল ভূ-খন্ড বিগত ষাটের দশকে ৩টি অংশে বিভক্ত ছিল। যার একটি ফুলছড়ি-ফজলুপুর ইউনিয়ন, একটি এরেন্ডাবাড়ী অপরটি মুল ভূ-খন্ড এলাকা ছিল উদাখালী, কঞ্চিপাড়া, উড়িয়া, গজারিয়া। ১৯৬৪ সালে ফুলছড়ির মূল ভূ-খন্ডকে রক্ষায় কঞ্চিপাড়ার সৈয়দপুর থেকে গজারিয়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করে সরকার। সে অনুযায়ী নির্মিত হয় একটি বাঁধ। এতে পানির প্রবাহ অন্যদিকে প্রবাহিত হওয়ায় বাঁধের পশ্চিম পাশের বাসিন্দারা ও হাজার হাজার একর জমি বন্যা থেকে রক্ষা পায়।

এরপর সম্প্রতি ফুলছড়ি উপজেলার পশ্চিম প্রান্তে গজারিয়া ইউনিয়নের পাকা সড়কের মাথা থেকে ব্রহ্মপুত্র নদীর মধ্যবর্তী স্থান পর্যন্ত গণকবর রক্ষা প্রকল্পের ক্রসবাঁধ নিমার্ণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা। বাঁধটির দীর্ঘ ৫শ’ মিটার, প্রস্থ ১শ’ ফুট এবং ১শ’ ফুট করে বাঁধের দু’পাশে বিছানো বেডে ৬ স্তরের বালুভর্তি একেকটি ব্যাগের ওজন ২৫০ কেজি করে পুরো বাঁধজুড়ে প্রায় ৫ লাখ জিওব্যাগ বসানো হয়েছে। মাটির তলদেশ থেকে বাঁধটির উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট। যা কি না দুইতলা ভবনের মত উচু। বাঁধটির শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাঁধের উপর লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ। গড়ে উঠেছে ছোট ছোট ভ্রামমান দোকান, ভীড় করছে দর্শনার্থীরা।

বাঁধটি নির্মিত হওয়ায় উত্তর-পূর্ব পার্শ্ব থেকে ধেয়ে আসা ব্রহ্মপুত্রের করাল স্রোত ফুলছড়ি উপজেলার মূল ভূ-খন্ডে আঘাত হানতে পারবে না। বাঁধে নদীর ¯্রােতটা ধাক্কা খেয়ে অন্যদিকে প্রবাহিত হবে। এ কারণে নদীর উত্তর, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের্^ সব কিছুই রক্ষা পাবে বলে মনে করছেন বাঁধ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান গোলাম রাব্বানী কনস্ট্রাকশনের সত্বাধিকারী গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, এ বাঁধটি শুধু স্থাপনা রক্ষাই করবে না বরং বাঁধ ও নদের বুকে জেগে ওঠা বালুচরও ভ্রমণপিপাসুদের আরেক ঠিকানা হবে। বুকভরে নিঃশ্বাস নিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সবাই ছুটে আসবেন এখানে।

সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী থেকে বাঁধে বেড়াতে এসেছেন আসিব জামান। তিনি বলেন, এত উচু বাঁধে দাঁড়িয়ে প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করার মতো। নদীর বুক চিরে নির্মিত ক্রসবাঁধ যা আমাদের নজর কেড়েছে। আর বাঁধের দু’পাশে নদীর পানি আর পানি। প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে এ বাঁধে মানুষের ঢল নামবে।

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মনি আক্তার বলেন, আমি ঢাকা থেকে নানুর বাড়ি ফুলছড়িতে বেড়াতে এসেছি। বাঁধটিতে ঘুরতে এসে অনেক ভালো লাগছে। এরকম একটি বাঁধ করাতে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।

ঠাকুরগাঁও থেকে আনিছুর রহমান এসেছেন শ^শুর বাড়ি ফুলছড়িতে। বিকেলে হাঁটতে হাঁটতে ক্রসবাঁধ এলাকায় ঘুরতে এসে মুগ্ধ। তিনি জানান, বাঁধটি এলাকার দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছে। এখানে পর্যটকদের বেড়াতে আসতেই হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বাঁধটি হওয়াতে উপকার হলো, গণকবর একটা, জমা-জমিন, হাটবাজার নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে। পাশাপাশি মানুষজনের বেড়ানোর জায়গা হলো।

গজারিয়া ইউনিয়নের বাউশি গ্রামের অমূল চন্দ্র দাস বলেন, বাঁধটা হওয়ার কারণে গণকবর এবং নদীর পশ্চিম দিকটা ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেলো। উত্তর পার্শে^ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের যে ঘরগুলো দিচ্ছে, সেই ঘরগুলোও রক্ষা পাবে। পশ্চিম পারের যে জমিজমাগুলো আছে তা আমরা ফিরে পেলাম এবং এখানে একটা বিনোদন কেন্দ্র গড়ে উঠলো। এই জন্য আমাদের স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়াসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।

কাতলামারী গ্রামের আকবর হোসেন বলেন, উত্তর এবং দক্ষিণ পাশের্^র জনবসতি নদীতে বিলীন হয়েছিলো, এ বাঁধ দেওয়ার ফলে সেই নিচু এলাকাগুলো পূর্নরায় পলি জমে আবার নতুন করে ভরাট হয়ে যাবে। সেখানে বসবাস করার উপযোগী হয়ে উঠবে, নতুন করে ফসল ফলাবে, ফুলছড়ির পুরান বাজারটা রক্ষা হবে, এভাবেই বাঁধটি রক্ষাকবজ হিসেবে কাজ করবে।

গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য জিহাদুল ইসলাম মওলা বলেন, এ এলাকায় তেমন দর্শনীয় স্থান নেই। সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষার পর সেখানে নদীর পার যেমন পর্যটন এলাকায় পরিণত হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে এ ক্রসবাঁধটি ফুলছড়িকে একধাপ এগিয়ে নিতে সাহায্য করেছে। বর্ষায় এ বাঁধের সৌন্দর্য আরও বেশি সুন্দর দেখাবে। তখন বাঁধের তিন পাশে নদের পানি থাকবে। এখনিই দুর-দুরান্ত থেকে মানুষজন আসছে এ বাঁধটি দেখতে।

ফুলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল হান্নান মন্ডল বলেন, এ এলাকাটা একটা নদীভাঙন কবলিত, এখানে যে বাঁধটি করা হয়েছে, এ বাঁধটির কারণে এখানে গণকবর, পুরাতন ফুলছড়ি হাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষা পাবে। দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত লাভ করলে অনেকেই এটাকে ঘিরে ব্যবসা-বাণিজ্য করে সংসার চালাতে পারবে।

গোলাম রাব্বানী কনস্ট্রাকশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. নুরে আলম খান বলেন, নদীর ভাঙন থেকে ফুলছড়ি উপজেলাকে রক্ষা করার জন্য যে প্রকল্প আছে প্রধানমন্ত্রীর এ প্রকল্পেরই অংশ বিশেষ হলো গণকবর ক্রসবাঁধ। এ বাঁধ দেওয়ার উদ্দেশ্যটি হলো নদীর ¯্রােতটাকে ডাইভার্ট করে দিয়ে অন্যদিকে প্রবাহিত করা। এখানে যে গণকবর আছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’র মুর‌্যাল আছে, ঐতিহ্যবাহি ফুলছড়ি হাট এবং পাশ^বর্তী গ্রামগুলো রক্ষা করবে এ ক্রসবাঁধ। আর এ বাঁধের কারণে উত্তর ও দক্ষিণ পাশে চর ও অনাআবাদি জমি ছিল, এই জমিগুলো পুর্নরায় আবার জাগ্রত হবে, এখানে পলি পড়বে, পলি পড়ার কারণে এখান থেকে ফসল উৎপাদন হবে। আর্থিকভাবে লাভবান হবে প্লাস স্থাপনাগুলোও রক্ষা পাবে। সার্বিক দিক থেকে মনে করি গণকবর ক্রসবাঁধটা এ এলাকার জন্য আর্শিবাদ হিসেবে এসেছে।

এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়নের বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান বলেন, গণকবর ক্রসবাঁধটা আমরা ট্রেন্ডার করেছিলাম ২০২১ সালে ডিসেম্বর মাসে এবং ট্রেন্ডার করার পরে দরপত্র গ্রহণ করে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। তিন মাসের মধ্যে বাঁধটি নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়। বাঁধটি লম্বায় ৫শ মিটার, চওড়া ৩০ মিটার। ক্রসবাঁধ নির্মাণের ফলে এর ভাটিতে ১ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে কৃষিজমি জেগে উঠবে এবং এ জায়গাগুলোতে নতুনভাবে চাষাবাদ করতে পারবে, জনবসতি গড়ে উঠবে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয় এই ক্রসবাঁধের আইডিয়াটা দেন।

মাটির তলদেশ থেকে ৩০ ফিট উচ্চতা এবং ৫শ’ মিটার দীর্ঘ ক্রসবাঁধ নির্মাণ হওয়ায় পাল্টে গেছে গাইবান্ধার ফুলছড়ির দৃশ্যপট। ফলে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে ১৯৭১ সালের বধ্যভূমি (গণকবর), জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’র মুর‌্যাল, প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের ঘর, ঐতিহ্যবাহী ফুলছড়িহাট, সাবেক ফুলছড়ি উপজেলা সদর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এছাড়া বাঁধের দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্বে বিশাল এলাকাজুড়ে কয়েক সহস্রাধিক একর কৃষিজমি জেগে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।

ফুলছড়ি উপজেলা মুল ভূ-খন্ড বিগত ষাটের দশকে ৩টি অংশে বিভক্ত ছিল। যার একটি ফুলছড়ি-ফজলুপুর ইউনিয়ন, একটি এরেন্ডাবাড়ী অপরটি মুল ভূ-খন্ড এলাকা ছিল উদাখালী, কঞ্চিপাড়া, উড়িয়া, গজারিয়া। ১৯৬৪ সালে ফুলছড়ির মূল ভূ-খন্ডকে রক্ষায় কঞ্চিপাড়ার সৈয়দপুর থেকে গজারিয়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করে সরকার। সে অনুযায়ী নির্মিত হয় একটি বাঁধ। এতে পানির প্রবাহ অন্যদিকে প্রবাহিত হওয়ায় বাঁধের পশ্চিম পাশের বাসিন্দারা ও হাজার হাজার একর জমি বন্যা থেকে রক্ষা পায়।

এরপর সম্প্রতি ফুলছড়ি উপজেলার পশ্চিম প্রান্তে গজারিয়া ইউনিয়নের পাকা সড়কের মাথা থেকে ব্রহ্মপুত্র নদীর মধ্যবর্তী স্থান পর্যন্ত গণকবর রক্ষা প্রকল্পের ক্রসবাঁধ নিমার্ণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা। বাঁধটির দীর্ঘ ৫শ’ মিটার, প্রস্থ ১শ’ ফুট এবং ১শ’ ফুট করে বাঁধের দু’পাশে বিছানো বেডে ৬ স্তরের বালুভর্তি একেকটি ব্যাগের ওজন ২৫০ কেজি করে পুরো বাঁধজুড়ে প্রায় ৫ লাখ জিওব্যাগ বসানো হয়েছে। মাটির তলদেশ থেকে বাঁধটির উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট। যা কি না দুইতলা ভবনের মত উচু। বাঁধটির শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাঁধের উপর লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ। গড়ে উঠেছে ছোট ছোট ভ্রামমান দোকান, ভীড় করছে দর্শনার্থীরা।

বাঁধটি নির্মিত হওয়ায় উত্তর-পূর্ব পার্শ্ব থেকে ধেয়ে আসা ব্রহ্মপুত্রের করাল স্রোত ফুলছড়ি উপজেলার মূল ভূ-খন্ডে আঘাত হানতে পারবে না। বাঁধে নদীর ¯্রােতটা ধাক্কা খেয়ে অন্যদিকে প্রবাহিত হবে। এ কারণে নদীর উত্তর, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের্^ সব কিছুই রক্ষা পাবে বলে মনে করছেন বাঁধ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান গোলাম রাব্বানী কনস্ট্রাকশনের সত্বাধিকারী গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, এ বাঁধটি শুধু স্থাপনা রক্ষাই করবে না বরং বাঁধ ও নদের বুকে জেগে ওঠা বালুচরও ভ্রমণপিপাসুদের আরেক ঠিকানা হবে। বুকভরে নিঃশ্বাস নিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সবাই ছুটে আসবেন এখানে।

সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী থেকে বাঁধে বেড়াতে এসেছেন আসিব জামান। তিনি বলেন, এত উচু বাঁধে দাঁড়িয়ে প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করার মতো। নদীর বুক চিরে নির্মিত ক্রসবাঁধ যা আমাদের নজর কেড়েছে। আর বাঁধের দু’পাশে নদীর পানি আর পানি। প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে এ বাঁধে মানুষের ঢল নামবে।

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মনি আক্তার বলেন, আমি ঢাকা থেকে নানুর বাড়ি ফুলছড়িতে বেড়াতে এসেছি। বাঁধটিতে ঘুরতে এসে অনেক ভালো লাগছে। এরকম একটি বাঁধ করাতে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।

ঠাকুরগাঁও থেকে আনিছুর রহমান এসেছেন শ^শুর বাড়ি ফুলছড়িতে। বিকেলে হাঁটতে হাঁটতে ক্রসবাঁধ এলাকায় ঘুরতে এসে মুগ্ধ। তিনি জানান, বাঁধটি এলাকার দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছে। এখানে পর্যটকদের বেড়াতে আসতেই হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বাঁধটি হওয়াতে উপকার হলো, গণকবর একটা, জমা-জমিন, হাটবাজার নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে। পাশাপাশি মানুষজনের বেড়ানোর জায়গা হলো।

গজারিয়া ইউনিয়নের বাউশি গ্রামের অমূল চন্দ্র দাস বলেন, বাঁধটা হওয়ার কারণে গণকবর এবং নদীর পশ্চিম দিকটা ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেলো। উত্তর পার্শে^ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের যে ঘরগুলো দিচ্ছে, সেই ঘরগুলোও রক্ষা পাবে। পশ্চিম পারের যে জমিজমাগুলো আছে তা আমরা ফিরে পেলাম এবং এখানে একটা বিনোদন কেন্দ্র গড়ে উঠলো। এই জন্য আমাদের স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়াসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।

কাতলামারী গ্রামের আকবর হোসেন বলেন, উত্তর এবং দক্ষিণ পাশের্^র জনবসতি নদীতে বিলীন হয়েছিলো, এ বাঁধ দেওয়ার ফলে সেই নিচু এলাকাগুলো পূর্নরায় পলি জমে আবার নতুন করে ভরাট হয়ে যাবে। সেখানে বসবাস করার উপযোগী হয়ে উঠবে, নতুন করে ফসল ফলাবে, ফুলছড়ির পুরান বাজারটা রক্ষা হবে, এভাবেই বাঁধটি রক্ষাকবজ হিসেবে কাজ করবে।

গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য জিহাদুল ইসলাম মওলা বলেন, এ এলাকায় তেমন দর্শনীয় স্থান নেই। সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষার পর সেখানে নদীর পার যেমন পর্যটন এলাকায় পরিণত হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে এ ক্রসবাঁধটি ফুলছড়িকে একধাপ এগিয়ে নিতে সাহায্য করেছে। বর্ষায় এ বাঁধের সৌন্দর্য আরও বেশি সুন্দর দেখাবে। তখন বাঁধের তিন পাশে নদের পানি থাকবে। এখনিই দুর-দুরান্ত থেকে মানুষজন আসছে এ বাঁধটি দেখতে।

ফুলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল হান্নান মন্ডল বলেন, এ এলাকাটা একটা নদীভাঙন কবলিত, এখানে যে বাঁধটি করা হয়েছে, এ বাঁধটির কারণে এখানে গণকবর, পুরাতন ফুলছড়ি হাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষা পাবে। দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত লাভ করলে অনেকেই এটাকে ঘিরে ব্যবসা-বাণিজ্য করে সংসার চালাতে পারবে।

গোলাম রাব্বানী কনস্ট্রাকশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. নুরে আলম খান বলেন, নদীর ভাঙন থেকে ফুলছড়ি উপজেলাকে রক্ষা করার জন্য যে প্রকল্প আছে প্রধানমন্ত্রীর এ প্রকল্পেরই অংশ বিশেষ হলো গণকবর ক্রসবাঁধ। এ বাঁধ দেওয়ার উদ্দেশ্যটি হলো নদীর ¯্রােতটাকে ডাইভার্ট করে দিয়ে অন্যদিকে প্রবাহিত করা। এখানে যে গণকবর আছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’র মুর‌্যাল আছে, ঐতিহ্যবাহি ফুলছড়ি হাট এবং পাশ^বর্তী গ্রামগুলো রক্ষা করবে এ ক্রসবাঁধ। আর এ বাঁধের কারণে উত্তর ও দক্ষিণ পাশে চর ও অনাআবাদি জমি ছিল, এই জমিগুলো পুর্নরায় আবার জাগ্রত হবে, এখানে পলি পড়বে, পলি পড়ার কারণে এখান থেকে ফসল উৎপাদন হবে। আর্থিকভাবে লাভবান হবে প্লাস স্থাপনাগুলোও রক্ষা পাবে। সার্বিক দিক থেকে মনে করি গণকবর ক্রসবাঁধটা এ এলাকার জন্য আর্শিবাদ হিসেবে এসেছে।

এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়নের বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান বলেন, গণকবর ক্রসবাঁধটা আমরা ট্রেন্ডার করেছিলাম ২০২১ সালে ডিসেম্বর মাসে এবং ট্রেন্ডার করার পরে দরপত্র গ্রহণ করে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। তিন মাসের মধ্যে বাঁধটি নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়। বাঁধটি লম্বায় ৫শ মিটার, চওড়া ৩০ মিটার। ক্রসবাঁধ নির্মাণের ফলে এর ভাটিতে ১ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে কৃষিজমি জেগে উঠবে এবং এ জায়গাগুলোতে নতুনভাবে চাষাবাদ করতে পারবে, জনবসতি গড়ে উঠবে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয় এই ক্রসবাঁধের আইডিয়াটা দেন।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ

শিরোনাম

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপনদেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীরঈদে বেড়েছে রেমিট্যান্স, ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রিজার্ভ১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতেনেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিতআয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দনজুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেইগোবিন্দগঞ্জে কাজী রাশিদা শিশু পার্কের উদ্বোধনইউরোপের চার দেশে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু