সুন্দরগঞ্জে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পেলেন ৩৮ হাজার শিক্ষার্থী
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে গত ১২ দিনে ৩৮ হাজার ৩ জন শিক্ষার্থীকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনার টিকাদান কার্যক্রমে স্বেচ্ছাসেবী হয়ে কাজ করেছেন উপজেলা স্কাউটের সদস্যরা। ভ্যাকসিন দেয়ার কাজে নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের সুবিধার্থে তাঁরা টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের সুশৃঙ্খল ও সারিবদ্ধভাবে সিড়ি বেয়ে উপর তলায় নেন। ভ্যাকসিন শেষে আবারও তাঁরা শিক্ষার্থীদের সিড়ি বেয়ে নিচ তলায় নেমে যেতে সহযোগিতা করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার আয়োজনে উপজেলার ১৫০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ টিকাদান কার্যক্রমে অংশ নেয়।
টিকাদান কেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, ‘ভ্যাকসিন নিতে আসা শিক্ষার্থীদের সুশৃঙ্খল ও সারিবদ্ধভাবে নীচতলা থেকে সিড়ি বেয়ে উপর তলায় নিয়ে যাওয়া, ভ্যাকসিক রুমে ঢুকে দেয়া, আবার তাঁদের ভ্যাকসিন শেষে সিড়ি বেয়ে নীচে নেমে দেয়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ বিভিন্ন কাজ করছে রোভার স্কাউটের সদস্যরা। তাদের জন্য আমাদের কাজ আরও সহজ হয়েছে। এখানে তারা সেচ্ছাসেবী হয়ে কাজ করছেন।’
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্কাউট কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মিঞা জানান, ‘প্রতিদিন কারো না কারো উপকার করা- এই বিশ্বাস ধারণ করে স্কাউট। সে কারণে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ২০/২২ সদস্যের একটি টিম নিরলস ভাবে কাজ করেছে। সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে টিকাদান কার্যক্রম সম্পন্ন করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো বলেও জানান তিনি।’
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্কাউটের সহকারি কমিশনার মো. আহসান হাবীব জানান, শুধু ভ্যাকসিন প্রোগ্রামের সাথে নয় করোনাকালীন সময়ে মানুষকে সচেতনতার জন্য মাইকিং, ত্রাণ বিতরণ, কম্বল বিতরণ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান বিতরণ করেছি আমরা। যে কোন দুর্যোগ কিংবা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্কাউট।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুঃ মাহমুদ হোসেন মন্ডল স্কাউটের নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘১২ দিনে ৩৮ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া। তাও আবার ভবনের একটি কক্ষে। নিঃসন্দেহে এটা ছিলো অনেক কঠিন কাজ। কিন্তু কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে স্কাউট সদস্যদের নিরলস সেচ্ছাশ্রমের কারণে।
তিনি আরও বলেন, গত ৮ জানুয়ারি সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। গত ১২ দিনে এখানে ১৪৬ প্রতিষ্ঠানের ৩৮ হাজার ৩ জন শিক্ষার্থী ভ্যাকসিন নেন। এর মধ্যে ৮১ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২৮ হাজার ৬২ জন, ৪৮ মাদ্রাসার ৫ হাজার ৮৮২ জন, ও ১৭ কলেজ থেকে ৩ হাজার ৪৬ জন শিক্ষার্থী ভ্যাকসিন নেন। এছাড়া তিস্তা নদীর ঐ পাড়ে থাকা উপজেলার ৩ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১ মাদ্রাসা পাশ্ববর্তী জেলার চিলমারী, উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কুড়িগ্রাম সদরে ভ্যাকসিন নেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্কাউটের এ ধরণের সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের জন্য কিছু একটা করবো ভাবছি। যাতে করে এ ধরণের কর্মকান্ডে স্কাউটের আগ্রহ আরও বাড়ে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেউ টিকা না পেয়ে থাকলে ভয়ের কোনো কারণ নেই। পরবর্তীতে তাঁরা জেলা শহরে গিয়ে টিকা নিতে পারবেন।’
দৈনিক গাইবান্ধা