বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ || ১৩ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১৭:২২, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

গাইবান্ধার নারীদের তৈরী পরচুলা যাচ্ছে চীন সহ বিভিন্ন দেশে

গাইবান্ধার নারীদের তৈরী পরচুলা যাচ্ছে চীন সহ বিভিন্ন দেশে

গাইবান্ধায় টাক মাথার জন্য পরচুলা তৈরীর কারাখানা গড়ে উঠেছে। মাথার চুল শরীরের সৌন্দয্যের একটি বিশেষ অংশ। মানুষের সৌন্দয্য রক্ষায় পরচুলা তৈরীর কারখানায় কাজ করছে নুপুর ,সোহাগী, আরতি, জোছনা আর আদুরীর মতো একঝাক কিশোরী নারী। তাদের তৈরী পরচুলা গাইবান্ধা ছাড়িয়ে যাচ্ছে চীন সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। স্কুল বন্ধ থাকায় এতে একদিকে যেমন তাদের ভালো সময় কাটছে। অন্যদিকে পরিবারের বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার খামার বোয়ালী গ্রাম। মাস দুয়েক আগে ফিরোজ কবীর নামের জনৈক ব্যক্তি সততা হেয়ার প্রসেসিং নামের একটি কারখানা গড়ে তুলেছেন। কারখানা গড়ে ওঠার ফলে এই গ্রামটি এখন আলো ঝলমলে হয়ে উঠেছে। কারাখানায় গ্রামের প্রশিক্ষিত শ শ কিশোরী ,যুবতী ও নারীদের নিপুন হাতে তৈরী হচ্ছে টাক মাথার জন্য অত্যাধুনিক ক্যাপ।

চায়না থেকে আসে চুল। আর চুল দিয়ে তৈরী হচ্ছে টাক মাথার ব্যবহারের জন্য পরচুলা। সোহাগীরা প্রতিজন মাথার পরচুলা বানিয়ে মাসে আয় করে অন্তত ১০ হাজার টাকা। দরিদ্র কিশোরী ও মেয়েরা এই কাজ করে তাদের নিজের খরচ বাদ দিয়েও সংসারে যোগান দিতে পারছে। সুখের মুখ দেখছেন সংসারে। আর নিজেরা স্বপ্ন দেখছেন স্বাবলম্বী হয়ে নিজের পায়ে দাড়ানোর। গাইবান্ধার এই গ্রামের নারীদের তৈরী ক্যাপ যাচ্ছে চীন দেশে। সেখান থেকে টাক মাথায় ব্যবহারের জন্য রফতানী হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

হেয়ার কারখানার নারী শ্রমিক ,নুপুর জানান, আমার পারিবাবের সদস্য সংখ্যা ১২ জন । আমি বাড়ীতে বেকার বসে থাকি । একদিন দেখি আমার পাশের বাড়ীর বড় বোন হেয়ার কারখানাতে যাচ্ছে । নিয়মিতি প্রশিক্ষণ নেয় তখন আমি বোনের দেখাদেখি আমি যাই । তাদের সাথে যোগাযোগ করি আমি । তারা আমায় দিনাজপুরে পাঠায় প্রশিক্ষণে ।সেখানে আমি কাজ শিখি । তার পরে এসে বোয়ালীতে এসে নিয়িমিত কাজ শুরু করি । এখন আমার প্রতি মাসে আয় হয় ১৮ হাজার টাকা । এতে করে আমার পরিবার ভালোভাবে চলে ।

সোহাগী জানান , আমার বিয়ে হইয়ে প্রায় ১২ বছর আগে । আমার স্বামী একজন নেশাগ্রস্থ । সে প্রতিরাতে আমায় নির্য়তান করে। তার পর আমার বাবার বাড়ীত্ েআছি । এখানে এসে দেখি সকাল বিকাল অনেক মহিলা,রাস্তায় লাইন দেখা দেয় । তাদেরকে আমি প্রশ্ন করি য়ে তোমারা কোথায় য়াও ? তারা আমায় হেয়ার কারখানার কথা শুনি । তার পরে আমি এই কারখানায় কাজ শুরু করি । এখন আমার ভালো ভাবে সংসার চলে ।

কারখানার নিরাপর্ত্তা কর্মী সফি মিয়া,জানান , সততা হেয়ার কারখানা প্রায় আট শত নারী শ্রমিক কাজ করে । তারা আমাদের মেয়ের মতো । তাদের সবদিকের নজর রাখার দাত্বিয় আমাদের ।

গাইবান্ধা,বোয়ালী ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান , সহিদুল ইসলাম সাবু, জানান ,এই এলকায় এই টুপির কারখানাটা এসে অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে । এই বোয়ালী ইউনিয়ের অনেক যুবতি মেয়েদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে সেই সাথে তাদের জীবন মানের পরিবর্তন হয়েছে ।

সততা হেয়ার প্রসেসিং রাজু আহম্মেদ ,ম্যানেজার জানান , চায়নার কোম্পানির সাথে প্রায় তিন বছরের চুক্তি হয়েছে । এখন পয়ন্ত আমাদের ব্যয় হয়েছে ১৩ লক্ষ টাকা । আমাদের ব্যাংকের আছে ৩ লক্ষ টাকা । এই টাকা দিয়ে নারী শ্রমিকদের প্রতি মাসের টাকা দেই ।এখন পয়ন্ত আমাদের প্রথম মাসে আয় হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ টাকা । আমরা মনে করি এই এলাকায় ব্যবসায়টা ভালো ভাবে বিস্তার লাভ করেতে পারবো ।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ