মাথায় আসা প্রশ্ন ও জীবনের মানে...
চলমান পরিস্থিতি আপনাকে হয়তো একটু নড়ে বসতে বাধ্য করেছে। এতে জীবন সম্পর্কে অন্যরকম এক বোধও তৈরি হয়েছে নিশ্চয়ই আপনার মধ্যে। জীবনের এমন নানা পরিস্থিতিতে আপনার মনে নিশ্চয়ই কিছু প্রশ্ন জাগে। যেমন– আপনি এখানে কেন? কোত্থেকে এলেন? জীবন মানে কী? এসব প্রশ্ন মাথায় আসা খুবই স্বাভাবিক। জীবনের কোনো না কোনো সময় এসে এসব জিজ্ঞাসা আপনার মনে জাগবেই। তবে মানুষ প্রায়ই এর সঠিক উত্তর পায় না। হয়তো পায় না বলেই ভুল পথে পা বাড়ায়। চলুন আমরা আজ জীবনের মানে খুঁজি–
জীবনের মানে জীবনের মানে খুঁজতে গিয়ে মানুষ প্রথম মুখোমুখি হয় ধর্মের। তবে আপনি ইচ্ছে করলে বা একটু সচেতন হলেই ব্যাপারটা নিজের কাছে নিজেই পরিষ্কার তুলে ধরতে পারবেন। বিশ্বাসীদের শরণাপন্ন হওয়াতেও দোষের কিছু নেই। আপনার আশপাশের কোনো বিশ্বাসীর মুখোমুখি হয়ে বিষয়টা পরিষ্কার করতে পারলে মন্দ কী!
ভাবুন আরেকটু গভীরে গিয়ে পৃথিবীতে চোখ রাখুন। পাশাপাশি মনের চোখটাও খুলে দিন। তারপর দেখুন আর অনুধাবনের চেষ্টা করুন। এখানকার ভাষা, শব্দ ইত্যাদি প্রায়োগিক অর্থে বন্ধ করে দিয়ে ভাবুন, আসলে আপনার চারপাশের এসব কী? ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’– এর মানে কী? শুধুই ভালোবাসা? এই যে একটা গাছ, এটা আসলে কী? এমন সূক্ষ্ম মৌলিক চিন্তা নিজের ভেতরে লালন করুন। ভাবুন আরেকটু গভীরে গিয়ে।
জীবনের সঙ্গে এদের সম্পর্ক জাতি, ভাষা, শব্দ এসবের বাইরে থেকে দেখার যোগ্যতা অর্জন করুন। দেখুন, জীবনের সঙ্গে এদের সম্পর্ক কী? এসব ছাড়া জীবন কী– কেন, কীভাবে? এ ভাবনাগুলোও আপনাকে নতুন জগতের উস্কানি দেবে।
মূল ভাবনার জগৎ এটা আপনাকে মানতেই হবে, জ্ঞানেও সীমাবদ্ধতা থাকে। আমরা কি সবকিছু জেনে ফেলেছি? জ্ঞানের বাইরেও যা আছে, সেটাই তো মূল ভাবনার জগৎ। আমরা সব বুঝি না; এ নিয়ে হতাশ হওয়ারও কিছুই নেই। আমাদের জানার পরিধি যখন আরও বাড়বে, আরও জানতে থাকব আমরা, তখন আমাদের সামনে উন্মুক্ত হবে নতুন জগৎ।
জগতের অজানা রহস্যের ডাক আবারও বলি, আপনি নতুন করে জানুন বিশ্বটাকে। জগতের নানা অজানা রহস্য আপনাকে ডাকছে। তাদের দিকে তাকান। চোখ বন্ধ করে দেখুন তাদের বৃদ্ধি, কাজ ইত্যাদি। নিজের দিকে তাকান, আবারও সামনে তাকান। দেখুন কোনো নতুন জগতের সন্ধান পাচ্ছেন কিনা? সেই সঙ্গে জানার চেষ্টা করুন নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা মিথ সম্পর্কে। এসব মিথ প্রায় ছয় হাজার বছর আগে থেকেই উদাহরণ হিসেবে আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। এসবের রহস্যও উদ্ঘাটনের চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারেন আনমনে।
আরও গভীরভাবে বোঝার চেষ্টা নিজেকে আরও গভীরভাবে বোঝার চেষ্টা করুন। সমাজ ও পরিবারের দিকে তাকান। একাকী অন্ধকার ঘরে শুয়ে-বসে ভাবুন। শুনতে চেষ্টা করুন দুনিয়ার শব্দতরঙ্গ। শুনতে শুনতে আশপাশের ঝুট-ঝামেলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিন। আপনার বয়স, আগামী দিনের আপনার অবস্থান, আপনার কর্ম, দায়িত্ব এগুলো যখন চোখ বন্ধ করে নিজের সামনে নিয়ে আসবেন, নিমেষেই আপনার কাছে ধরা দেবে জীবনের মানে। এসব করেছেন কখনও? না করলে কাজে নেমে পড়ুন।
কষ্ট-সুখের সমৃদ্ধি বিন্দু বিন্দু জল জমে যেমন মহাসাগর তৈরি হয়, তেমনি জীবনটাও নানা ঘাত-প্রতিঘাত, আনন্দ-বেদনা, কষ্ট-সুখের সমৃদ্ধি। এসব যখন পারস্পরিকভাবে একটি অন্যটির সঙ্গে জুড়ে দেবেন, সুতোয় বেঁধে দেবেন, তখন দেখবেন জীবনের এক চমৎকার ছবি আপনার সামনে ভেসে উঠেছে। হয়তো সেটাই আপনার জীবন
সূত্র: সমকাল