রুটি না ভাত- কোনটি স্বাস্থ্যকর?
রুটি না হয় ভাত। আমাদের খাবার মেন্যুতে একটি থাকেই। এর উপস্থিতি ছাড়া আমাদের খাবারগ্রহণ যেন অম্পূর্ণ থেকে যায়। অবশ্য বাঙালির খাদ্য তালিকায় ভাত-ই বেশি প্রচলিত। কিন্তু ভাত বা রুটি- এসব খাবার আমাদের কতটা উপকারী এবং কী পরিমাণ খাওয়া উচিৎ? আর ভাত ও রুটির মধ্যে কোনটি স্বাস্থ্যকর? চলুন জেনে নেওয়া যাক এসব প্রশ্নের উত্তর।
আমেরিকা প্রবাসী ডা. মুজিবুল হকের মতে, একজন সুস্থ মানুষ দৈনিক তার খাবার তালিকায় ভাত বা রুটি রাখতে পারেন। তবে ভাত হলে ব্রাউন চাউলের হওয়া উচিত। আর রুটি হলে চালের গুড়া বা ভুট্টার আটার রুটি হতে হবে। কোনোভাবেই গম থেকে তৈরি আটা-ময়দার রুটি খাওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, গমের আটা বা ময়দার তৈরি কোনো খাবারই খাওয়া যাবে না। কারণ, বর্তমানে সারাবিশ্বে যে গম পাওয়া যায়, তা জেনেটিক্যালি মডিফায়েড। অর্গানিক গম কোথাও পাওয়া যায় না। ফলে এসব গমের তৈরি খাবারগ্রহণ করলে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ব্লাড প্রেসার, লিভার ড্যামেজ, কিডনি ড্যামেজসহ বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগ হতে পারে। একইভাবে সাদা চালের তৈরি খাবারেও নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে।
কী পরিমাণ খাওয়া যাবে?
ডা. মুজিবুল হক জানান, ব্রাউন্ড চালের ভাত বা চালের রুটি পর্যাপ্ত সাক-সবজি, মাছ ও গোস্তের সঙ্গে একজন মানুষ তার প্রয়োজন অনুযায়ী খেতে পারেন। তবে অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। এতে মেদ বৃদ্ধিসহ শারীরিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর মাছ-গোস্তের ক্ষেত্রে অবশ্যই চাষের মাছ নয় ও ফার্মের গোস্ত নয়।
তবে শরীরের ওজন হ্রাসে ও সুস্থ থাকতে কিংবা বিভিন্ন ধরনের রোগ মুক্তির জন্য কার্বোহাইড্রেট ত্যাগ করা ভালো। কিন্তু যাদের ভাত ও রুটি ছাড়া একেবারে চলে না, তারা অন্তত উপরের নির্দেশনা ফলো করলে বেশ সুফল পাবেন।
কয় বেলা খাবেন? সকালে নাস্তা, ১১টায় ফের নাস্তা, দুপুরের খাবার, বিকেলের নাস্তা ও রাতের খাবার- দৈনিক এভাবে পাঁচবার খাদ্যগ্রহণের উপদেশ কোনো কোনো ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের দিতে দেখা যায়। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীকে এমন পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। আর প্রতিবার খাবারেই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার থাকে। এতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোগী সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে দিনে দিনে আরো অসুস্থ হতে থাকেন।
এবিষয়ে ফিজিশিয়ান ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের মতে, পূর্ণবয়স্ক একজন মানুষ সুস্থ থাকতে দৈনিক একটানা ১৬-১৮ ঘণ্টা ফাস্টিং (না খেয়ে থাকা) করা জরুরি। তবে এসময় কার্বোহাইড্রেট ছাড়া অন্য খাবারগ্রহণে অসুবিধা নেই। তার মতে, রাতে যদি ৮টার মধ্যে ডিনার শেষ করা যায় এবং সকালের নাস্তায় কার্বোহাইড্রেট বাদ দেওয়া হয়, তাহলে ১৮ ঘণ্টা ফাস্টিং করা সহজ হবে। তবে সকালে হলুদের বুস্ট, মসলা চা, বাদাম, ডাবের পানি, গ্রিন জুস, ত্রিফলা, জস্টি মধুর গুড়া- এসব খাওয়া যাবে। এরপর দুপুর ১২টায় দিনের প্রথম খাবার (ভাত, রুটি তথা কার্বোহাইড্রেট) গ্রহণ করলে শরীর সুস্থ থাকবে।
দৈনিক গাইবান্ধা